সকল মেনু

বিশ্বকাপের উদ্বোধন পর্বে কোরআন পাঠ করা কে এই গানিম

হটনিউজ ডেস্ক:

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর শুরু হয়েছে কাতার বিশ্বকাপ ২০২২। গতকাল রবিবার (২০ নভেম্বর) কাতারে আল-খোর অঞ্চলের আল-বাইত স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী পর্বে ফিফা বিশ্বকাপের ৯২ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করতে দেখা যায়। পবিত্র কোরআন থেকে পাঠ করেন ফিফা বিশ্বকাপের শুভেচ্ছাদূত ২০ বছর বয়সী গানিম আল-মিফতাহ (Ghanim Al-Muftah)। গত এপ্রিলে গানিম আল-মিফতাহকে কাতারের পক্ষ থেকে ফিফা বিশ্বকাপের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে নির্বাচন করা হয়।

কাতারি তরুণ তারকা গানিম আল-মিফতাহ ও মার্কিন অভিনেতা মর্গান ফ্রিম্যানের সংলাপের মাধ্যমে উদ্বোধন হয়েছে এবারের ফিফা বিশ্বকাপ। পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে সৌহার্দ ও সম্প্রীতি তৈরির বার্ত দিয়ে তারা চমকে দেন সবাইকে। মানবজাতির মধ্যে একতা ও ভ্রাতৃত্ববোধকে সুদৃঢ় করতে গানিম পবিত্র কোরআনের সুরা হুজরাতের ১৩ নং আয়াত পাঠ করে এর অনুবাদ করেন। তা হলো, ‘হে মানুষ, আমি তোমাকে সৃষ্টি করেছি নারী ও পুরুষ থেকে, আমি তোমাকে বিভিন্ন জাতি ও গোষ্ঠীর মধ্যে বিভক্ত করেছি যেন তোমরা পরষ্পরকে চিনতে পারো, তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি সবচেয়ে বেশি সম্মানিত যে বেশি আল্লাহভীরু, আল্লাহ সব কিছু জানেন ও সব বিষয়ে অবগত। ’

এর আগে কাতারের রাজ পরিবারের সদস্য মারয়াম আলে থানি এক টুইট বার্তায় জানান, ‘গানিম আল-মিফতাহ পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী পর্ব শুরু করবেন। কৃতজ্ঞতা কাতারের প্রতি। চির উন্নত হোক এ দেশ। মহান আল্লাহ আমাদের এ পর্বে কল্যাণে ভরপুর করুন এবং যারা আমাদের অনিষ্টতা কামনা করে তাদের থেকে রক্ষা করুন। ’

গানিম আল-মিফতাহ ২০০২ সালে কডাল রিগ্রেশন সিনড্রোম (সিডিএস) নামের বিরল ব্যাধি নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন, যা তার দুই পাসহ নিম্ন মেরুদণ্ডের বিকাশকে ব্যাহত করে। তবে জীবনযুদ্ধে সব বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে এ তরুণ এখন সবার আশা ও অনুপ্রেরণার পাত্র। ভবিষ্যতে নিজেকে একজন কূটনীতিক হিসেবে গড়ে তুলতে চান। তিনি রাস্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। নানা ধরনের অক্ষমতা ও প্রতিবন্ধকতার পরও গানিম নিজেকে সাঁতার, স্কুবা ডাইভিং, স্কেটবোর্ডিং রক ক্লাইম্বিংয়ের মতো বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে মাতিয়ে রাখেন। তাঁকে কাতারের সবচেয়ে কম বয়সী উদ্যোক্তা হিসেবে মনে করা হয়। ঘারিসা আইসক্রিম নামে তার একটি প্রসিদ্ধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ ছাড়া প্রতিবন্ধী শিশুদের সহযোগিতার জন্য তার আছে দাতব্য সংস্থা।

২০০৯ সালে টোয়েন্টিফার্স্ট সেঞ্চুরি লিডার্স ফাউন্ডেশন কর্তৃক একজন আনসান হিরো বা অদৃশ্যে থাকা বীর হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। ২০১৪ সালে কুয়েতের আমির শেখ সাবাহ আল-আহমদ আল-সাবাহ কর্তৃক শান্তি দূত হিসেবে নিযুক্ত হন। কাতার ফিন্যানশিয়াল সেন্টার কর্তৃপক্ষের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডরের দায়িত্ব পালনসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিভিন্ন সম্মাননা পুরস্কার ও পদ লাভ করেন তিনি।

ফিফা বিশ্বকাপের ইতিহাসে এবারই প্রথম কোনো আরব-মুসলিম দেশে ফুটবল বিশ্বকাপ শুরু হয়েছে। আরব-ইসলামী স্থাপত্যশৈলীতে তৈরি ৮ স্টেডিয়ামে ২৯ দিনে অনুষ্ঠিত হবে ৬৪টি ম্যাচ। সারা বিশ্ব থেকে আসা ফুটবলভক্তদের সামনে ইসলামের সঠিক চিত্র তুলে ধরতে কাতারের আওকাফ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে ‘আন্ডারস্ট্যান্ডিং ইসলাম’ নামে ছয় ভাষায় একটি ই-বুক প্রকাশিত হয়েছে। তা ছাড়া দোহার বিভিন্ন স্থানে আরবি ও ইংরেজিতে মহানবী (সা.)-এর হাদিসসংবলিত দেয়ালচিত্র দেখা যায়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top