সকল মেনু

জাতীয় নির্বাচনে জাতিসংঘ পর্যবেক্ষক দলকে আমন্ত্রণ প্রধানমন্ত্রীর

Hassina-018920130929165500 হটনিউজ ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা, ৩০ সেপ্টেম্বর:  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবিধানিকভাবে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন করার ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচনে পর্যবেক্ষক দল পাঠাতে জাতিসংঘ মহাসচিবকে অনুরোধও করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে জনাকীর্ণ এক সাংবাদিক সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি পরবর্তী নির্বাচনের নিরপেক্ষতা যাচাই করতে পর্যবেক্ষক দল পাঠাতে বান কি মুনকে অনুরোধ করেছি।’ জাতিসংঘের ৬৮তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘বিএনপি স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির সাথে জোট পরিত্যাগ করে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথে এলে, পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে কোনো রাজনৈতিক সংকটের সৃষ্টি হবে না।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি দেশের স্বার্থে যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত। বিএনপি চাইলে নির্বাচনকালীন সরকার সম্পর্কে পার্লামেন্টে প্রস্তাব উত্থাপন করতে পারে।’ ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে ২০০১ সাল ছাড়া বাংলাদেশে আর কখনোই শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হয় নি। কেবল আওয়ামী লীগের ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে সকল নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘বান কি-মুন সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যের (এমডিজি) বাংলাদেশের অর্জিত সাফল্যের প্রশংসা করেছেন। এমডিজি অর্জনে যে গুটিকয়েক দেশ দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছে বাংলাদেশ তার অন্যতম।’ দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সুসংহত করতে তার সরকারের নিরলস প্রয়াসের ব্যাপারে জাতিসংঘ মহাসচিবকে অবহিত করার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এমন একটি ব্যবস্থা করতে চাই যেখানে অবাধ, মুক্ত ও নিরপেক্ষ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। একইসাথে ক্ষমতা হস্তান্তর হবে শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায়। আমাদের একটি নির্দিষ্ট অবস্থান থেকে গণতন্ত্র সমুন্নতের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘বিগত ৩৮ বছরে অনুষ্ঠিত সব নির্বাচনে জনগণকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। ক্ষমতালিপ্সুরা ভোট কেন্দ্র দখল এবং টাকা ছড়িয়ে ও গুণ্ডা লেলিয়ে দিয়ে জনগণের ভোটাধিকার ছিনিয়ে নিয়ে নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করে। তারা সামরিক অভ্যুত্থান, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও বেসামরিক প্রশাসনে সেনাবাহিনী নিয়োগের মতো বিভিন্ন কায়দায় নির্বাচন প্রক্রিয়া লণ্ডভণ্ডের চেষ্টা করেছে।’

নিউইয়র্ক সফরকে খুবই সফল হিসাবে বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিগত তিন বছরের মতো এবারো তিনি অনেক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। মূল নিবন্ধ উপস্থাপন এবং কো-চেয়ার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশকে আইওএসএসসি পদক প্রদান বাংলাদেশের জনগণের সাফল্যের এক বিরাট স্বীকৃতি।’ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী মানুষ যেন তাদের মৌলিক অধিকার পূরণ করতে পারে। সে পরিবেশ সৃষ্টিতে আমার সরকার কাজ করে যাচ্ছে। দারিদ্র্য বিমোচনে বর্তমান সরকার শিক্ষার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে।’ ‘আমার সরকার সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দেশের ক্ষমতা হস্তান্তরে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে।’ এ প্রসঙ্গে তিনি জাতির ভবিষ্যতের কথা মনে রেখে ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, ‘আমার সরকার সামরিক শাসন, জরুরি অবস্থা ও সেনা সমর্থিত সরকারের নামে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের অবৈধ সংস্কৃতি বন্ধ করতে সংবিধান সংশোধন করেছে।’ প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৬৮তম অধিবেশনে যোগদান এবং অধিবেশনের আলোচনার ফাঁকে বিভিন্ন বিষয়ে অনেক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশগ্রহণকে খুবই ফলপ্রসু বলে উল্লেখ করেন। ‘এ সব কর্মসূচিতে বাংলাদেশ খুবই সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনসহ বিশ্ব নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন ফোরামে বাংলাদেশের এই ভূমিকার ভুয়সী প্রশংসা করেছেন।’ বাংলাকে বিশ্ব সংস্থার আনুষ্ঠানিক ভাষা হিসাবে ঘোষণা দেয়ার উদ্দেশ্যে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান করার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পরবর্তী নির্বাচনে আমাদের সরকার আবারো ক্ষমতায় এলে আমার এ প্রয়াস নিশ্চিতভাবে সফল হবে।’ সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সংলাপের জন্য আমি বিরোধী দলের নেতার প্রতি আহ্বান জানিয়েছি।’ সুশীল সমাজের সদস্যদের সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা চাকরি জীবনে জনগণের সেবা ও নাগরিক সমস্যা সমাধানে তাদের অদক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন।’ যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে রায়ের দ্রুত কার্যকারিতা সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সরকার আদালতের কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ করে না।’ তবে, তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে এটি জনগণের দাবি হওয়ায় এই রায় একদিন কার্যকর হবে। অন্যান্যের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আবদুল মোমেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top