সকল মেনু

টাঙ্গাইল ভেজাল সার ও কীটনাশকে সয়লাব

download (1) মিয়া মোঃ নোমান, টাঙ্গাইল:  টাঙ্গাইল সদর সহ দেলদুয়ার উপজেলার বিভিন্ন হাটে বাজারে ভেজাল সার ও কীটনাশকে ছেয়ে গেছে। ফলে ফসলি জমিতে এসব সার ও কীটনাশক ব্যবহার করে কোন ফল পাচ্ছেন না স্থানীয় কৃষকরা। বিশেষ করে ফুরাডান ও ডায়াজিননে প্রচুর ভেজাল পাওয়া যাচ্ছে বলে তারা অভিযোগ করেছেন। এক শ্রেণীর সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী ও নাম সর্বস্ব কোম্পানীর কতিপয় অসাধু ব্যক্তি একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। তারা নাম করা বড় বড় কোম্পানীর বিভিন্ন কীটনাশক হুবহু নকল করে এই এলাকায় বাজারজাত করছেন। আর নিরিহ দরিদ্র কৃষকরা এই সমস্ত কীটনাশক ক্রয় করে প্রতিনিয়তই প্রতারিত হচ্ছেন। কৃষকরা অভিযোগ করেছেন তারা এই সমস্ত কীটনাশক কোনটি আসল আর কোনটি নকল তা চিনতে পারে না। আর এর সুযোগ নিচ্ছে এই সিন্ডিকেট। গত বুধবার এই প্রতিবেদক পোড়াবাড়ির ইউনিয়নের খারজানা গ্রামের সোনাউল্লাহ পুত্র মোতালেবের বাড়িতে গিয়ে দেখতে পান সে তার বাড়ি থেকে এলাকার কৃষকদের কাছে সার ও কীটনাশক বিক্রি করছে। এসময় প্রতিবেদক তার ঘরে রাখা ফুরাডান ও এফজি লেখা ডায়াজিননের প্যাকেট দেখে সন্দেহ প্রকাশ করলে মোতালেব জানান জনৈক আবুল কালাম তাকে এই মাল সরবরাহ করেছে। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলিমপুর ইউনিয়নের বরুহা বাজারের সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী ও চর পাকুল্লা গ্রামের বাসিন্দা জুরান আলী ফুরাডান ও ডায়াজিনন পরীক্ষা করে বলেন এগুলি নকল। জুরান আলী এসময় এই প্রতিবেদক জানায় যে এই নকল কীটনাশক তার দোকানেও বিক্রির জন্য নিয়ে গিয়ে ছিলেন কালাম নামের এক লোক। কিন্তু তিনি সেগুলি ভেজাল বলে তার দোকানে রাখেননি। এসময় গ্রাম বাসিরা একে একে জড়ো হতে থাকে। আর তাদের বিভিন্ন অভিযোগ বলতে থাকেন। গ্রাম বাসীরা জানান তারা মোতালেবের কাছথেকে ফুরাডান ও ডায়াজিনন নগদ টাকায় ক্রয় করে ক্ষেতে প্রয়োগ করে কোন উপকার পাননি। গ্রামের দরিদ্র কৃষকরা তখন বুঝতে পারেন তারা কিভাবে প্রতারিত হয়েছেন। তারা আরো বলেন এতদিনে আমরা বুঝতে পারলাম কীটনাশক দেওয়ার পরেও আমরা কোন ফল পাচ্ছিনা কেন। আমরা এর বিচার এবং ক্ষতিপূরন চাই। স্থানীয় কৃষক মাশারুল মোল্লা ও মোমেন জানান আমরা গত কয়েক বছর ধরে মোতালেবের কাছ থেকে কিটনাশক ক্রয় করে ক্ষেতে প্রয়োগ করছি। কিন্তু সে কিটনাশক যে কেন কাজ করেনা তা আজ বুঝতে পারছি। অত্র এলাকার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নির্মলা মিত্রের সাথে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।

এব্যাপারে টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আজিজুল্লাহর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। তবে তিনি বলেন এব্যাপারে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেবেন।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসাইনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন উপ-পরিচালক বিষয়টি আমাকে অবহিত করেছেন। কিন্তু সময়ের অভাবে আমি এখনও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারিনি। তবে ইতিমধ্যেই আমরা বিভিন্ন দোকানের সার পরীক্ষা করে তিনজন ডিলারের সারের গুনগত মানে ভেজাল পেয়েছি। আর সেইসব সারগুলো ধ্বংস করেছি। এর মধ্যে দুইজন ডিলার তারে সার পুনঃপরীক্ষা করার জন্য আমাদের কাছে আবেদন করেছেন ।

পোড়াবাড়ির ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট হাতেম আলী বলেন তিনি উপজেলা সমন্বয় সভায় এবিষয়টি উথ্যাপন করবেন।

সদর উপজেলা ও দেলদুয়ার উপজেলার অনেক কৃষকই বলেছেন যে তারা বাজার থেকে কীটনাশক ক্রয় করে জমিতে প্রয়োগ করে কোন ফল পাননি। তারা তাদের এলাকার সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে প্রতিনিয়তই অভিযোগ করছেন। কিন্তু তারা এব্যপারগুলি নানা অজুহাতে এড়িয়ে যাচ্ছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top