সকল মেনু

বিএনপিতে সক্রিয় হচ্ছেন নাজমূল হুদা

Nazmulhuda-0220130923185141 মেহেদী হাসান, ঢাকা, ২৪ সেপ্টেম্বর :  আবারো বিএনপিতে সক্রিয় হচ্ছেন নাজমুল হুদা। দলের কাছে হারানো আস্থা আর বিশ্বাসের জায়গা তৈরি করতে ইতোমধ্যে পদক্ষেপও নিয়েছেন। রাজনৈতিক অঙ্গনে যখন বিএনএফ নিয়ে হইচই। বিএনপির অনেকটা মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলো এই দলটি, ঠিক সেই সময়ে বিএনএফ বিলুপ্ত করার ঘোষণা দিলেন সাবেক এই মন্ত্রী। উদ্দেশ্য দলের কাছে নিজের গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ তুলে ধরা। সোমবার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টের (বিএনএফ) আহ্বায়ক হিসেবে এর বিলুপ্তি ঘোষণা করেছেন ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। রাজধানীর তোপখানা রোডে তাঁর নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ঘোষণা দেন। দলীয় সূত্রগুলো বলছে, শিগগিরই নাজমূল হুদা আগের মতো বিএনপিতে সক্রিয় হবেন। দল থেকে তাকে এ ব্যাপারে অনেকটাই আশার বানী শোনানো হয়েছে। তবে চুড়ান্ত গ্রিন সিগনালের অপেক্ষায় আছেন তিনি। শিগগিরই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। তবে এর আগে দলের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সূত্র বলছে, বিএনপিতে নাজমূল হুদার প্রত্যাবর্তন অনেক আগেই হতো। কিন্তু বিএনএফ প্রধান প্রতিবন্ধকতা ছিলো। ইতিমধ্যে তিনি স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিএনপিতে সক্রিয় হওয়ার বাসনা খুলে বলেছেন।এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সোমবার রাতে নাজমুল হুদা রাইজিংবিডিকে বলেন, শুরু থেকেই বিএনপিতে ছিলাম। এখনও আছি। ভবিষ্যতেও থাকবো। তিনি বলেন, বিএনপির দুঃসময়ে পাশে থাকা জরুরি বলে আমার এলাকার নেতাকর্মীরা মনে করেন। নেতাকর্মীদের ইচ্ছার প্রাধান্য আমি দিতে চাই। তিনি বলেন, আমি পদত্যাগপত্র দিয়েছিলাম। আবার সেটি তুলে নিয়েছি। তবে এখন আমি বিএনপির একজন কর্মী। আগামী নির্বাচনে বিএনপির নমিনেশন চাইবো। রেকর্ড পরিমাণ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হবো। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু রাইজিংবিডিকে বলেন, দলে ফেরার ঘোষণা দেয়া নাজমুল হুদার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। দল বিষয়টিকে কীভাবে নেবে সেটি দলীয় ফোরামে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হবে। তিনি বলেন, কার্যত বিএনপির সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি বহিস্কৃতই আছেন। বিএনপি গঠনতন্ত্র মেনে চলে। নাজমূল হুদা কোন সাধারণ ব্যক্তি নন। তার এলোমেলো সিদ্ধান্তে নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তবে দলে ফিরতে হলে তাকে নেত্রীর আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। এদিকে সোমবার বিকেলে তোপখানার নিজ কার্যালয়ে বিএনএফ বিলুপ্ত করে নাজমুল হুদা বলেন, ‘আমি এই দলটির প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছিলাম, আর আমি নিজেই এর বিলুপ্তির ঘোষণা দিচ্ছি। যে উদ্দেশ্য নিয়ে আমি বিএনএফকে সুপ্ত অবস্থা থেকে পুনরুজ্জীবিত করেছিলাম, দলটির প্রধান সমন্বয়ক আবুল কালাম আযাদ সেই উদ্দেশ্যকে সম্পূর্ণরুপে নস্যাৎ করে বিএনপিকে ধ্বংস করার প্রত্যয়ে লিপ্ত রয়েছেন। এ অবস্থা চলতে দেওয়া যায় না। জনগণের মধ্যে বিএনএফ নিয়ে যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে, তা নিরসনের লক্ষে বিএনএফ বিলুপ্তি করা হয়েছে।’ লিখিত বক্তব্যে নাজমুল হুদা বলেন, ‘বিএনএফের আহ্বায়ক হিসেবে আমি নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করব, আমার অধীনে বিএনএফের যে নিবন্ধনের আবেদন করা হয়েছিল, তা নাকচ করে দিন। তিনি বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী শক্তিকে উজ্জীবিত করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিএনএফকে রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। উদ্দেশ্য ছিল বিএনপিকে ধ্বংস করা নয়, ১৮ দলীয় জোটের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে ১৯ দলীয় জোটের মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ক্ষমতায় পৌঁছে দেয়া।’ নাজমূল হুদা বলেন, ‘দুই নেত্রী এক টেবিলে বসে আলোচনার আলটিমেটাম দিয়ে আমি বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেছিলাম। কিন্তু আমার পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে এমন কোনো চিঠি পাইনি। এর পরে ম্যাডাম যখন শেখ হাসিনাকে আলোচনার আহ্বান জানান, তখন আমি আমার পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করে নেই। আমি বিএনপিতে ছিলাম বিএনপিতেই আছি। বিএনপি থেকে আমার অবস্থান টলানো এত সহজ নয়।’ বিএনএফ থেকে তাকে বহিস্কারের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি বিএনএফের ঘোষণা দিয়েছিলাম এবং বর্তমানে যারা আছে তাদের নিয়োগ দিয়েছিলাম। এ সংগঠন থেকে আমাকে বহিস্কারের কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। সেজন্য তারা আমাকে বহিস্কার করলেও আমি এর কোনো প্রতিবাদ করিনি। আমি বিএনএফের আহ্বায়ক হিসেবে এ সংগঠনের বিলুপ্তি ঘোষণা করছি। এখন তারা মানবে কি মানবে না এটা তাদের বিষয়। তারা চাইলে মামলা করতে পারে। নির্বাচন কমিশনের শর্ত মেনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে পারে। এ বিষয়ে আমার বলার কিছু নেই।’ আগামী নির্বাচনে তিনি বিএনপি থেকেই মনোনয়ন চাইবেন বলে মত দেন নাজমুল হুদা। বিএনপি মনোনয়ন দিলে রেকর্ড পরিমাণ ভোটে জয়ী হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন দোহার এলাকার সাবেক এই সাংসদ।

তিনি বলেন, ‘বর্তমান সঙ্কট নিরসনের একমাত্র উপায় হচ্ছে দুই নেত্রীকে এক টেবিলে বসানো। এর জন্য একটি রিট পিটিশন করেছিলাম এ মাসের ২৬ তারিখে তার শুনানি হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আদালত চাইলে দুই নেত্রীকে এক টেবিলে বসার বিষয়ে রুল জারি করতে পারেন। রুল জারি করলে তা দুই নেত্রী মানতে বাধ্য।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top