সকল মেনু

বড় কষ্টে পাপিয়া…

Papiya-bg20130918164250 স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, হটনিউজ২৪বিডি.কম,ঢাকা:  বেশ কিছুদিন ধরে কষ্টেই আছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ‘অগ্নিকন্যা’ খ্যাত অ্যাডভোকেট সৈয়দা আসিফা আশরাফি পাপিয়া এমপি। ১৯৮১ সাল থেকে বিএনপির সঙ্গে জড়িত এই নেত্রী বর্তমানে নিজ দলেই পড়েছেন কোনঠাসায়। কিন্তু বিনাদোষে সাজাপ্রাপ্তি হয়েছে বলে দাবি পাপিয়া ও তার ঘনিষ্ঠজনদের।  নিজেকে যেখানে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ‘কন্যা’ বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন, এখন সেই মায়ের সামনে যেতেও পাপিয়া বিব্রত বোধ করছেন বলে জানিয়েছেন তার কাছের ক’জন।  তারা জানান, সবসময় প্রাণবন্ত ও চটপটে পাপিয়া এখন অনেকটাই বিমর্ষ ও দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তাদের মতে, খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করা একটি ফোনালাপের অডিও সম্প্রতি ফাঁস হয়েই ফেঁসে গেছেন পাপিয়া। তারপর থেকেই এমন নাজুক পরিস্থিতিতে পড়েছেন যে, কাছের অনেকেই অচেনা আচরণ করছেন তার সঙ্গে। পাপিয়ার এক শুভাকাঙ্ক্ষী হটনিউজকে বলেন, অডিওটি প্রকাশের পর চারপাশের পরিস্থিতি প্রতিকূল হয়ে পড়েছে তার (পাপিয়া) জন্য। দলের নেতাকর্মীরা ভালো চোখে দেখছেন না তাকে।  তিনি বলেন, যারা পাপিয়ার সামনে কথা বলার সাহসও পেত না ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) স্নেহভাজন বলে, আজ তারাও পাপিয়াকে দেখলে মুখ টিপে হাসে, পারলে একটা-দুইটা কথা শুনিয়ে দেয়।  এই নেত্রী বলেন, যতোই পাপিয়া বলছেন, প্রকাশিত অডিওটির কন্ঠ তার নয়, গোয়েন্দা সংস্থার করা কন্ঠ জালিয়াতি, কিন্তু কিছুতেই যেন কাজ হচ্ছে না। হারানো বিশ্বাস পুনরুদ্ধার করতে পারছেন না তিনি। অনেকেই তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছেন নিজেরা নিরাপদে থাকতে, তারেক রহমানকে খুশি রাখতে।  নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক সংসদ সদস্য হটনিউজকে বলেন, দলে পাপিয়াকে যারা ইর্ষা করতেন তারাও এখন সুযোগ বুঝে তার বিপদ বাড়াচ্ছেন। তারেক রহমানকে খুশি রাখতে পাপিয়াকে নিয়ে কতো খারাপ রঙ মাখিয়ে বলা যায় সেই প্রতিযোগিতাও নামছে কেউ কেউ। পাপিয়ার কাছের মানুষদের দাবি, এটি তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।
হটনিউজের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় পাপিয়া সরাসরি সরকারকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, এটি সরকারের কাজ। তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় একটি গোয়েন্দা সংস্থা এটি করেছে, যাতে দলে আমার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়, যেন আমি মাথা তুলে না দাঁড়াতে পারি।  পাপিয়া বলেন, তারেক রহমান আমাকে ভুল না বুঝলেই আমি খুশি। তার সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সুযোগ না থাকায় সমস্যায় পড়েছি। তার ফোন নম্বর ‘এভেইলএবল’ না। এদিকে আমাকে ইর্ষা করে এমন মানুষরা যদি তাকে উল্টা-পাল্টা বোঝায়, সেখানে আমি কী করতে পারি।

তবে খালেদা জিয়া এটিকে ষড়যন্ত্র হিসেবেই দেখছেন বলে কিছুটা স্বস্তি নিয়ে বলেন পাপিয়া। তিনি বলেন, আশার কথা হলো, আমাদের নেত্রী ঠিকই বুঝেছেন, এটি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আমি সংসদে দাঁড়িয়ে সোচ্চার কন্ঠে সরকারের সমালোচনার সাহস রাখি বলেই সরকার আমাদের কন্ঠ স্তব্ধ করতে এসব করছে বলে আমাদের ম্যাডামও বোঝেন।

পাপিয়া নিজের জমানো কিছু কষ্টের কথাও অকপটে বলেন হটনিউজের   কাছে। তিনি বলেন, ১৯৮১ সাল থেকে দলের সঙ্গে আছি। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন করেছি, একা একা অনেক পথ চলেছি, ভিপি ছিলাম দীর্ঘদিন। আমরা তৃণমূল থেকে উঠে আসা দলের নিবেদিতপ্রাণ সদস্য। অথচ সরকারের এসব ষড়যন্ত্রে দলের মধ্যে যখন কষ্ট পাই, সেটা অপেক্ষাকৃত বেশি কষ্টের।

স্মৃতি আওড়ে পাপিয়া বলেন, ওয়ান-ইলেভেনে যখন অনেকেই ভয়ে গর্তে ঢুকে পড়েছে, তখন আমরা কয়েকজন সাহস ধরে রেখেছিলাম। গত সাড়ে চার বছরে দলের প্রতি কোনো দায়িত্ব পালনে পিছে থাকিনি, এগিয়ে গেছি।

পাপিয়া বলেন, যে ছেলের সঙ্গে কথোপকথন অডিওতে আছে, তাকে আমি সেভাবে চিনিও না।

তিনি বলেন, দলে নিজেদের মধ্যে একটা প্রতিযোগিতাতো থাকে, তারা যখন সমস্যার সময় আরো পেয়ে বসে তখন কষ্ট বাড়ে। অথচ তারেক রহমানকে নিয়ে এ রকম কথা আমি বলিনি।

উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে কন্ঠ জালিয়াতি করেই এই অডিও তৈরি বলে আবারো জোর‍ালো দাবি করেন পাপিয়া। তিনি বলেন, তারেক রহমানকে আমি ‘পাগল’ বলিনি। বলেছি, প্রধানমন্ত্রীকে, সংসদে দাঁড়িয়ে। সেটাই তারা কেটে নিয়েছে, এভাবে শব্দের সঙ্গে শব্দ লাগিয়ে তারা এটি করছে।

এ বিষয়ে বিএনপির এক সিনিয়র নেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনিও নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top