সকল মেনু

লবিস্ট নিয়োগে ব্যয়ের উৎস বিএনপিকে ব্যাখ্যা করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

হটনিউজ ডেস্ক:

প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশকে ধ্বংস ও বিশ্বমঞ্চে তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে লবিস্টদের দেওয়া কোটি কোটি ডলারের উৎস বিএনপিকে ব্যাখ্যা করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই অর্থ কোথা থেকে এসেছে, কীভাবে বিদেশে গেল, আর বিদেশি ফার্মকে এই লাখ লাখ বা কোটি কোটি ডলার যে তারা পেমেন্ট করল এটা কোথা থেকে পেল, এই জবাবদিহিতা তাদের করতে হবে। এটা তাদের ব্যাখ্যা দিতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) একাদশ জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনিত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় এবং ১৬তম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে এসব কথা বলেন।

তিনি প্রশ্ন করেন, কত লাখ ডলার বিএনপি খরচ করেছে? বিএনপি এই বৈদেশিক মুদ্রা কোথা থেকে পেয়েছে? কীভাবে খরচ করেছে? কীভাবে এবং কী জন্য তারা এই লবিস্ট রেখেছে?

তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকানো, নির্বাচন বানচাল, একে প্রশ্নবিদ্ধ করা, জঙ্গি ও জাতির পিতার হত্যাকারীদের রক্ষা, বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করা এবং বাংলাদেশের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করতেই এই লবিস্ট নিয়োগ। কোনো ভালো কাজের জন্য নয়।

তিনি এ সময় আগের দিন বিএনপির যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগ করা নিয়ে কোটি কোটি বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের তুলে ধরা পরিসংখ্যানের নথি সংসদের প্রসিডিংসে তার ভাষণে অন্তর্ভুক্তির জন্য সংসদে পেশ করেন।

তিনি র‌্যাবের কয়েকজন অফিসারকে যুক্তরাষ্ট্রে গমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে অভিমত তুলে ধরে এর পেছনে অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দেন।

তিনি বলেন, যারাই সন্ত্রাস দমনে সফল, যারা এই দেশকে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস থেকে রক্ষা করতে পেরেছে এবং সাধারণের জীবন বাঁচিয়েছে, মানবাধিকার সংরক্ষণ করেছে তাদের ওপরই যেন আমেরিকার রাগ।

‘ঘরের ইঁদুর বাঁধ কাটলে কাকে দোষ দেবেন’ উল্লেখ করে তিনি দেশের অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত করে বলেন, এ জন্য আমেরিকাকে তিনি দোষ দেন না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমেরিকা আমাদের র‌্যাবের কিছু অফিসারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। যাদের মধ্যে সেসময় হলি অর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলার সময় র‌্যাবের মহাপরিচালক এবং বর্তমান আইজিপিও রয়েছেন। সে সময় রমজান মাসে ওই বেকারিতে মানুষকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল।

সে সময় বাংলাদেশে আমেরিকার রাষ্ট্রদূতের একটি ‘টুইট’-এর উদ্ধৃতি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি টুইট করেছিলেন – বাংলাদেশ এই হলি অর্টিজানের হামলা একা সমাধান করতে পারবে না’ কিন্তু সারারাত আমরা পুলিশ, সশস্র বাহিনী, র‌্যাব এবং কমান্ডোদের সঙ্গে বৈঠক করে পরের দিন সকাল ৯টার মধ্যে আমরা সেখান থেকে জিম্মিদের উদ্ধার এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে সফলতার সঙ্গে আক্রমণ মোকাবিলায় সমর্থ হই। আর এর পরপরই আমেরিকার রাষ্ট্রদূত সেই টুইটটা সরিয়ে ফেলে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাদেরকে তারা নিষেধাজ্ঞা দিল, তাদের অধিকাংশই সেদিন সন্ত্রাস দমনে বিশেষ ভূমিকা রেখেছিল। আর এরপরে বাংলাদেশে আর কোনো সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটতে পারেনি। সেদিন বিশেষ ভূমিকা রাখা ভালো অফিসাররা কেন আমেরিকার কাছে প্রশ্নবিদ্ধ বলেও তিনি প্রশ্ন তোলেন।

সরকারপ্রধান বলেন, তার সরকার জনগণকে সম্পৃক্ত করেই এই সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদ দমন করেছে, যেটা বিএনপির সৃষ্টি। ৫০০ জায়গায় বোমা হামলা, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, শাহ এ এম এস কিবরিয়াকে গ্রেনেড মেরে হত্যাসহ প্রভৃতির জন্য তিনি এ সময় বিএনপিকে অভিযুক্ত করেন।

তিনি বলেন, আমরা বিরোধী দলে থাকতে বিএনপি-জামায়াতের গ্রেনেড হামলা, বোমা হামলা, গুলি, নির্যাতনের শিকার হয়েছি। সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া হত্যার তদন্তে বিএনপির জড়িত থাকার বিষয়টি বের হলেও অজ্ঞাত কারণে তার পরিবারের পক্ষ থেকে বিচার প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন সৃষ্টির অভিযোগ রয়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পর জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণ সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদের এবারের অধিবেশনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

এর আগে ১৬ জানুয়ারি এ বছরের প্রথম অধিবেশন শুরু হলে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সংসদে ভাষণ প্রদান করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top