সকল মেনু

শাবিপ্রবি’র শিক্ষার্থীদের অনশন চলছে, বেগবান হচ্ছে আন্দোলন

হটনিউজ ডেস্ক:

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন চলমান রয়েছে। এরই মধ্যে অনশনে থাকা ছয় শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এরপরও অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ফলে উপাচার্যকে অপসারণের আন্দোলন আরও জোরালো হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। আন্দোলনে যোগ দেওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও বাড়ছে।

এমনকি, বিশ্ববিদ্যালয়ের হল-ক্যান্টিন বন্ধ থাকায় খাবারের সংকট মেটাতে এগিয়ে এসেছেন সাবেক শিক্ষার্থীরা। রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে রান্না করা হচ্ছে খাবার। এ আন্দোলন শুরু হ‌ওয়ার পর থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকের পাশের দোকানপাট‌ বন্ধ করে দেয় পুলিশ।

তবে, সিলেট মহানগর পুলিশের (এস‌এমপি) ডিসি আজবাহার আলী শেখ অভিযোগটি অস্বীকার করে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ-পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও বাইরে মানুষের জমায়েত ঠেকাতে দোকানপাট বন্ধ করা হয়েছে।’

যদিও গতকাল সন্ধ্যার পর দোকানপাট খোলা থাকতে দেখা যায়। তবে বিপুল শিক্ষার্থীদের খাদ্য সহায়তায় এগিয়ে আসার বিষয়টি শিক্ষার্থীদের মনোবল আরও বাড়িয়েছে।

এরই মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে মশাল মিছিলের আয়োজন করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সেখানে কয়েকশ শিক্ষার্থী উপাচার্যবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন।

এদিকে, প্রচণ্ড শীতে অনশনরত শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থা আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। তবে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলবে।

এর আগে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মুহাইমিনুল বাশার বলেন, ‘অনশনে থাকা শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হচ্ছে। এরই মধ্যে কয়েকজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বাকিদের অবস্থাও অনেক খারাপ। কয়েকজন খারাপ অবস্থার মধ্যেও চিকিৎসকের পরামর্শ উপেক্ষা করে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। এরপরেও একটি চেয়ার ধরে রাখতে গিয়ে তিনি (উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ) এতোজন শিক্ষার্থীর জীবন বিপন্ন হ‌ওয়াটা দেখে যাচ্ছেন।’

গত রোববার বেগম সিরাজুন্নেছা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট প্রত্যাহারসহ তিন দফা দাবিতে শুরু হয় ছাত্রীদের আন্দোলন। পরে সেই আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যোগ দেন। উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনাও ঘটে।

এক পর্যায়ে পুলিশ গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করলে আহত হন শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে ওই রাতেই আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। যদিও পুলিশ ৩০০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে।

এদিকে, বুধবার বিকেলে দুঃখ প্রকাশ করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। চলমান ঘটনায় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের মাধ্যমে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এতে দোষী হলে সরকারের নির্দেশ মেনে নেবেন বলে জানিয়েছেন উপাচার্য।

‘উপাচার্য কোনো রকম সংশ্লিষ্ট নয়’ দাবি করে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়েছে, সাউন্ড গ্রেনেড মেরেছে। এ জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত, খুবই মর্মাহত।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top