সকল মেনু

প্রচণ্ড সৎ থাকায় লক্ষে পৌঁছাতে পেরেছি: প্রধান বিচারপতি

হটনিউজ ডেস্ক:

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, প্রচণ্ড সৎ থাকলে অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব। সেই সঙ্গে দরকার হয় ভাল কাজ, আর মানুষের দোয়া। এসবের কারণেই আমি এখানে আসতে পেরেছি। ’ তিনি বলেন, এর সাথে ছিলো- অসীম ধৈর্য ও পরিশ্রম।

কুষ্টিয়া জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে সংবর্ধনা, নৈশভোজ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় কুষ্টিয়া জেলা আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে কুষ্টিয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আসম আখতারুজ্জামান মাসুম সভাপতিত্ব করেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আল্লাহ আমাকে যাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন তাদের জন্য কী করছি, সব সময় ভেবেছি। তিনি আইনজীবী ও বিচারকদের প্রতিও আহ্বান জানান, বিচারপ্রার্থীদের দিকে মায়ার দৃষ্টিতে তাকাতে।

তিনি আরও বলেন, একদিন এই কুষ্টিয়া বার থেকেই জীবনের পেশাগত অধ্যায় শুরু করেছিলাম। সেদিন এই বারের অনেক প্রবীণ আইনজীবি তাকে সহযোগিতা করেছিলেন। তাদের অনেকেই আজ বেঁচে আছেন অনেকেই নেই। তিনি সবার প্রতি অসীম কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, জীবনে প্রতিটি স্তরেই আমাদের একে অপরের সহযোগিতা প্রয়োজন হয়। তিনি সবাইকে একে অপরের সহযোগী হবার অনুরোধ জানান।

তিনি বলেন, বিচার বিভাগকে সফল করতে হলে বার ও বিচারিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ছন্দ থাকতে হবে। একে অপরের পরিপূরক হতে হবে। বার ও বিচারিক প্রতিষ্ঠান হচ্ছে দেহ ও ডানার মতো।

তিনি তার বক্তব্যে আরো বলেন, আমি আমার শপথ অনুযায়ী কুষ্টিয়াসহ সারা বাংলাদেশের মানুষের জন্য ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে সর্বদা সচেষ্ট থাকবো। ৬৪ জেলাতেই সৎ জজ নিয়োগের চেষ্টা করবো। মহান স্বাধীনতানতার আত্মত্যাগকারী মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা ও বিচার বিভাগের সকল ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের জন্য ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে আমরা সকলে একযোগে কাজ করবো। বিচারক ও আইনজীবীদের তিনি পাখির দুটি ডানার সাথে তুলনা করে বলেন, একে অন্যকে সহযোগিতা করলে সততার ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা পাবে।

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, মানুষের সেবা করার যতটুকু সময় পাচ্ছি তার পুরোটাই কাজে লাগাতে চাই। বিচারক ও আইনজীবিদের প্রতিও একই আহ্বান রাখেন।

প্রধান বিচারপতি এ সময় তার জীবনের চড়াই-উৎরাইয়ের নানা গল্প করেন। তিনি তার বিচারক জীবনে ঘটে যাওয়া দূর্বিসহ অধ্যায়ের উপরও বক্তৃতা করেন। তিনি বলেন, সেদিন যারা তাকে অপমানজনকভাবে তার বিচারক জীবনে কালো অধ্যায় তৈরি করে দিয়েছিল। পরে বিচারক জীবনে পূর্ণবহাল হয়েও তিনি সেই তাদেরকেই উপকার করেছিলেন। তিনি কোন প্রতিশোধ নেননি। তিনি মহান সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ দেন যে তার মধ্যে কোন প্রতিশোধ মনোভাব তৈরি হয়নি।

উল্লেখ্য, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ১৯৯৬ সালের আওয়ামী লীগের শেষের দিকে নিয়োগপ্রাপ্ত ৮ বিচারপতির একজন যারা ২০০১ এ বিএনপি নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর সরকারের রোষানলে পড়েন। পরবর্তীতে তাদেরকে বিচারবিভাগে স্থায়ী করা হয়নি। পরে এ নিয়ে মামলা হলে বিচারবিভাগ এই বিচারপতিদের পক্ষে রায় দিলে তারা পুনরায় ২০০৯ সালে বহাল হন।

সংবর্ধনা সভার সম্মানিত অতিথি আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে কুষ্টিয়ার সন্তান প্রথম প্রধান বিচারপতি, এটা আমাদের কুষ্টিয়াবাসীর জন্য অত্যন্ত গর্বের ও আনন্দের। তিনি বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হলেও কুষ্টিয়াবাসীর জন্য ন্যায় বিচার নিশ্চিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন।

সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাসুদ করিম মিঠুর পরিচালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিক, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী, বিচারপতি ড. আখতারুজ্জামান, সুপ্রীম কোর্টের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আকবর।

অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন কুষ্টিয়া-১ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম সরওয়ার জাহান বাদশাহ, কুষ্টিয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ, কুষ্টিয়ার জেলা জজ শেখ আবু তাহের। আরো উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক আসগর আলী প্রমুখ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top