সকল মেনু

গ্রীন ডেল্টা হাউজিং এর এমডি বেলাল কারাগারে

download (7) আদালত প্রতিবেদক:  ‘রাজধানীর পুরনো ঢাকার স্বামীবাগে ২০১০ সালে ৩৭ লাখ টাকা দিয়ে গ্রীন ডেল্টা হাউজিং কোম্পানির একটি ফ্লাট কিনেছিলাম। টাকা দেয়ার পরও আমি ফ্লাটও পাইনি ও টাকাও পাইনি। যে কারণে গ্রীন ডেল্টার চেয়ারম্যান নুরুল আমিন ও তার ছেলে বেলালের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতারণা মামলা করি।’ গতকাল ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বারান্দায় দাড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে এসব কথা বলছিলেন প্রতারিত গ্রাহক ও পূবালী ব্যাংক লিমিটেডের সহকারী ব্যবস্থাপক হারী ভূষণ দেব। এর আগে চেক প্রতারণাসহ হরেক রকমের ২৬টি মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত আসামি গ্রীন ডেল্টার এমডি বেলালকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এসময় তার গ্রেফতারের খবর শুনে আদালতে আসেন শতাধিক গ্রাহক। তারা সাংবাদকদের জানান, ‘প্রতারণা করে গ্রীন ডেল্টা হাউজিং কোম্পানি দুই’শ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ২০০২ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত কোনও গ্রাহকককে ফ্লাট হস্তানর করেন এই হাউজিং কর্তৃপক্ষ।’ আদালত সূত্র জানায়, গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করা ফ্লাট হস্তান্তর না করার কারণে গ্রীন ডেল্টার চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতারণার ত্রিশটির অধিক মামলা হয়েছে। প্রতারিত আরেকজন গ্রাহক হলেন স্বপণ রায়। থাকেন পুরনো ঢাকার ৫৬, ঋষিকেশ দাস রোডে। তিনি সাড়ে ২২ লাখ টাকা দিয়ে ২০১০ সালে গ্রীন ডেল্টার নারিন্দাস্থ চন্দ্রিমা প্রকল্পের একটি ফ্লাট কেনেন। প্রতারণা প্রসঙ্গে স্বপণ রায় সাংবাদিকদের বলেন‘ টাকা পরিশোধের পরও গ্রীন ডেল্টা কর্তৃপক্ষ আমাকে ফ্লাট বুঝিয়ে দেয়নি। পরে টাকা চাইতে গেলে তারা আমাকে হত্যার হুমকি দেয়। যে কারণে গত ২৬ আগস্ট গ্রীন ডেল্টার মালিকদের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতারনা ও হত্যার হুমকির মামলা করেছি।’ গ্রীন ডেল্টার মালিক নুরুল আমিন ও তার ছেলেরা ( বেলাল ও দিলদার) প্রভাশালী বলে মন্তব্য করে প্রতারিত গ্রাহক অজিত কুমার সাহা বলেন, ‘ ২০০৪ সালে পুরনো ঢাকায় গ্রীন ডেল্টার আবাসিক প্রকল্পের একটি ফ্লাট ৩৩ লাখ টাকা দিয়ে কিনি। টাকা পরিশোধের পর ফ্লাট বুঝিয়ে না দিলে আমি মৎস ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাসকে বলি। তার উপস্থিতিতে গ্রীন ডেল্টার মালিকদের সঙ্গে আমার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ২০০৬ সালে। চুক্তি অনুযায়ী আমার টাকা চাইতে গেলে তারা আমাকে হত্যার হুমকি দেয়। মন্ত্রী মহোদয় বলার পরও কোনও কাজ হয়নি।’ ডাক্তার রফিকুল ইসলাম তিনি স্বামীবাগের গ্রীন ডেল্টার একটি ফ্লাট ২১লাখ টাকা দিয়ে ক্রয় করেন। তাকেও ফ্লাট বুঝিয়ে দেয়নি গ্রীন ডেল্টা কর্তৃপক্ষ। গ্রীন ডেল্টার এমডি বেলাল এই চিকিৎসককে হত্যার হুমকি দেন। পরে তিনি ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগে মামলা করেন। প্রতারিত গ্রাহক ও মামলার নথিপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, প্রতারিত গ্রাহকদের মধ্যে ত্রিশ জন গ্রীন ডেল্টার চেয়ারম্যান নুরুল আমিন ও এমডি বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। গতকাল আদালতে এসেছিলেন শতাধিক প্রতারিত গ্রাহক। তাদের মধ্যে হেমন্ত কুমার বালা ও আব্দুস সাত্তার বলেন,‘ গ্রীন ডেল্টা হাউজিং কোম্পানি তার ২০টি প্রজেক্টের একটিরও কাজ শেষ করেনি। অথচ প্রত্যেকটি প্রজেক্টের ফ্লাট তারা গ্রাহকদের কাছে উচ্চমূলে বিক্রি করেন। বিক্রি করার পর প্রজেক্টের কাজ শেষ না করে গড়িমসি শুরু করে। বাধ্য হয়ে আমরা টাকা ফেরত দেয়ার জন্য কোম্পানিকে চাপ দিই। তারা ব্যাংকে টাকা না রেখে আমাদের নামে চেক ইস্যু করে। যে কারণে আমরা টাকা তুলতে পারিনি। বাধ্য হয়ে আমরা এখন আদালত আসছি।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top