সকল মেনু

অব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ ইন্স্যুরেন্স

IDRA-1020130910054351আফিফা জামান, ঢাকা, ১০ সেপ্টেম্বর:  চরম অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার মধ্য দিযে চলছে সাধারন বীমা খাতের বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড।

সর্বত্র তথ্যপ্রযুক্তির ছোঁয়া লাগলেও এখনো সেঁকেলে ধারার প্রতিষ্ঠানেই রয়েছে কোম্পানিটি। প্রতিষ্ঠানটির কতিপয় কর্তা ব্যক্তি ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার যোগসাজশে এখানে অনিয়মই নিয়মে পরিনত হয়েছে।
কোন গ্রাহক তার ন্যায্য হিস্যা পাচ্ছেন না। প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কোন নথিপত্র নেই বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) কাছে। এমনকি কোম্পানিটির নীতিনির্ধারকরাও জানেন না মাকের্ট মূলধন, গ্রাহক সংখ্যা এবং লাভ-লোকসানের হিসাব। সরেজমিন অনুসন্ধাণে এমনটাই দেখা গেছে।
সূত্র মতে, ১৯৮৪ সালে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের শাসনামলে বীমা খাতের প্রথম ধাপে অনুমোদন পায় বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড।
পরবর্তীতে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে ১৯৮৫ সালে। নব্বই দশকে প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের শীর্ষ আস্থা অর্জন করলেও বিগত অর্ধযুগ ধরে চলছে হরিলুটের প্রতিযোগিতা।
গ্রাহকদের স্বার্থ দূরে রেখেই প্রতিষ্ঠানটি গুটি কয়েক ব্যাক্তির নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। অনেক ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক ক্ষতিপূরন না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। যা নিয়ে গ্রাহকদের নিকট থেকে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বারবার কোম্পানিতে ধর্ণা দিয়েও ন্যায্য পাওনা পাওয়া যাচ্ছে না। টাকা চাইতে গেলে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।
অনুসন্ধাণে দেখা গেছে, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) এ কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) জীবন বৃত্তান্ত ছাড়া কোন নথিপত্র নেই। নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানেন না কোম্পানিটির বর্তমান মাকের্ট অবস্থা। নেই গ্রাহকদের পরিসংখ্যান।
সংশিষ্ট কর্মকর্তা ইচ্ছা থাকা সত্তেও কোনই তথ্য দিতে পারেননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঐ কর্মকর্তা জানান, ‘আমরা শুধু প্রতিষ্টানটির মেজর কোন সমস্যা হলে সমাধাণ করি।’
তিনি বলেন, নিয়মানুযায়ী বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন জমা দেয়ার বিধান থাকলেও প্রতিষ্ঠানটি এখনো দেয়নি।
ঠিক একই চিত্র স্বয়ং প্রতিষ্টানটিতে। এ ব্যাপারে কোম্পানি সচিব মো. লতিফুর রহমান সঙ্গে দেখা করলে তিনি রাইজিংবিডিকে জানান, ‘এটা একটা বেসরকারি খাতের একটি পুরানো প্রতিষ্ঠান। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো আমাদের জয়েন্ট স্টক কোম্পানির অন্তর্ভূক্ত হতে হয় না। এটা সমবায় অধিদপ্তর ও আইডিআরএ’র নিয়ন্ত্রনাধীন।’
এর বাহিরে তিনি কোন তথ্য দিতে পারেননি। এমনকি তিনি জানেনও না প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহক সংখ্যা, মার্কেট মূলধন এবং লাভ-লোকসানের হিসাব।
এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূর-ই-আলম সিদ্দিকী উধুর পিন্ডি বুধুর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করেন। তিনি রাইজিংবিডি বলেন, ‘আমাদের সর্ম্পকে জানার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ যোগাযোগ করেন। তারাই ভালো বলতে পারবে।’
আইডিআরে কোম্পানীর কোন আর্থিক প্রতিবেদন নেই জানালে তিনি দাবি করেন, গত অর্থবছরে শেয়ার হোল্ডারদের ১০শতাংশ লভ্যাংশ দেয়া হয়েছে। একই সময়ে ১৩ থেকে ১৪ জন বীমা গ্রহীতার দাবি পরিশোধ করা হয়েছে। তবে আয়-ব্যয়ের কোন হিসাব তিনিও দিতে পারেননি।
এ ব্যাপারে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান এম. শেফাক আহমেদ বলেন, এমনটা হয়ে থাকলে দু:খ জনক। অনিয়ম হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top