সকল মেনু

এক ঘরে স্ত্রীর গলাকাটা লাশ, অন্য ঘরে স্বামীর ‘আত্মহত্যার’ চেষ্টা

হটনিউজ ডেস্ক:

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌর শহরের সাঝিপাড়া মহল্লায় বসতঘর থেকে আয়েশা মালেকা (৪০) নামের এক গৃহবধূর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পাশের ঘরের দরজা ভেঙে তাঁর স্বামী আলী আকবরকে (৪৫) বিষপান করা অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ৯টায় ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করছে, স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার পর আলী আকবর বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আলী আকবর ফেরি করে সবজি বিক্রি করেন। তাঁর স্ত্রী আয়েশা মালেকা গৃহিণী। তাঁদের এক ছেলে ও দুই মেয়ে। বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। ছেলে ও মেয়ে দুই দিন আগে রাজশাহীতে খালার বাড়িতে বেড়াতে যান। বাড়িতে আলী আকবর ও তাঁর স্ত্রী আয়েশা মালেকা ছিলেন।

আকবরের প্রতিবেশী গবরা মণ্ডল বলেন, আলী আকবর ও তাঁর স্ত্রী প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে বাইরে ঘুরে বেড়াতেন। আজ সকাল সাতটা পেরিয়ে গেলেও তাঁরা কেউ ঘুম থেকে উঠছিলেন না। এতে প্রতিবেশীদের সন্দেহ হলে বাড়ির দরজায় গিয়ে ডাকাডাকি করে কোনো সাড়াশব্দ পাননি। পরে ঘরের জানালা ধাক্কা দিয়ে খুলে আলী আকবরকে ভেতরে ছটফট করতে দেখা যায়। পরে তাঁরা বাড়ির দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে আলী আকবরকে বের করেন। পাশের ঘরের মেঝেতে তাঁর স্ত্রীর রক্তাক্ত গলাকাটা লাশ পড়ে থাকতে দেখে থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আলী আকবরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

সকাল ৯টায় ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির সামনে উৎসুক লোকজন ভিড় করছে। বাড়ির ভেতর পুলিশ অবস্থান করছিল। পাশাপাশি দুটি মাটির ঘরের একটির মেঝেতে আলী আকবরের স্ত্রী গলাকাটা লাশ পড়ে আছে। ঘরের মেঝেতে রক্ত জমাট বেঁধে আছে।

আক্কেলপুর পৌরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আমিনুর রহমান বলেন, আলী আকবর পেশায় একজন ভ্রাম্যমাণ সবজি বিক্রেতা। তিনি কিছুদিন আগেও নিজ বাড়িতে তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের কুপিয়ে জখম করেছিলেন।

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান বলেন, পুলিশ প্রহরায় আলী আকবরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আলী আকবরের স্ত্রী আয়েশা মালেকার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে। আলী আকবরের বাড়ির পাশ থেকে রক্তমাখা ছুরি জব্দ করা হয়েছে।

জয়পুরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) আবদুস সালাম বলেন, আলী আকবর তাঁর স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা করার পর নিজেও বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আলী আকবরের নিজের কিছু জমিজমা ছিল। সেগুলো তিনি স্ত্রী-সন্তানদের নামে লিখে দিয়েছিলেন। জমিজমার ভাগে কমবেশি হওয়া নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য চলছিল বলে শোনা যাচ্ছে।

আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রুহুল আমিন বেলা সাড়ে ১১টায় জানান, আলী আকবরের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁর অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাচ্ছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top