সকল মেনু

ধর্মের নামে জঙ্গিবাদ নয়: প্রধানমন্ত্রী

1378447539হটনিউজ২৪বিডি.কম:  ইসলাম ধর্মের নাম ব্যবহার করে সন্ত্রাসী ও জঙ্গি কর্মকাণ্ড ঠেকাতে সকলের প্রতি সজাগ থাকার আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার সকালে আশকোনায় হজ ক্যাম্পে চলতি বছরের হজ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের ইসলাম ধর্ম অত্যন্ত পবিত্র ধর্ম, শান্তির ধর্ম। আমার খুব দুঃখ হয়- যখন আমরা দেখি এই শান্তির ধর্ম, পবিত্র ধর্মের নাম নিয়ে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস সৃষ্টি করে ইসলামেরই দুর্নাম করা হয়। আমি আশা করি, যারা এসব কাজে লিপ্ত, তারা এই কাজ থেকে বিরত হবেন।

ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া কোনো শিক্ষাই পূর্ণাঙ্গ হতে পারে না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা শিক্ষানীতি গ্রহণ করেছি। পার্থিব শিক্ষা ও ধর্মীয় শিক্ষা যেন আমরা নিতে পারি সে পদক্ষেপ নিয়েছি। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সংস্কারের জন্য সৌদি সরকারের আর্থিক সহয়তার কথা স্মরণ করে সৌদি বাদশাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, প্রত্যেকটা জেলায় জেলায় একটি করে মসজিদকে আমরা উন্নতমানের সমজিদ হিসাবে গড়ে তুলবো। পর্যায়ক্রমিকভাবে প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে উপজেলা ভিত্তিক সমজিদ হবে। সব থেকে সুন্দর ও উন্নতমানের মসজিদ আমরা তৈরি করব। অথবা যে মসজিদ আছে, তাকে উন্নতমানের মসজিদ করব।

এ বিষয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সৌদি রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ এন এ আল বুশাইরির দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলাম যে সত্যিকারের শান্তির ধর্ম- তার প্রচার ও প্রসারে আমরা পদক্ষেপ নেব। সৌদি সরকার যদি এই মসজিদ উন্নয়নে আমাদের সহায়তা করে, তাহলে এই কাজটা আরো ভালো হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

ইসলামের প্রচার ও প্রসারে এবং ধর্ম চর্চায় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের নেয়া বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানান, বিএনপি-জামায়ত চারদলীয় জোট সরকারের শেষ বছর ২০০৬ সালে হজযাত্রীর সংখ্যা ছিল ৪৭ হাজার ৯৮৩ জন। গত বছর এক লাখ নয় হাজার ৯৫২ জন এবং ২০১১ সালে এক লাখ পাঁচ হাজার ৬১৭ জন হজ পালন করেন।

আর চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৮ হাজার ৯১১ জন হজে যাচ্ছেন। সৌদি আরবে সংস্কার কাজ চলায় যারা গত পাঁচ বছরে হজ করেছেন তারা আর এ বছর হজে যেতে পারছেন না। এছাড়া সৌদি সরকার এবার বাংলাদেশের কোটা থেকে হজে যাওয়ার সুযোগ ২০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে। সব দেশের জন্যই এটা করা হয়েছে। এ কারণে এবার হজযাত্রীর সংখ্যা কিছুটা কমেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। হজযাত্রা নির্বিঘ� করতে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া শেষ। শুক্রবার সকাল থেকে হজযাত্রীরা ক্যাম্পে রিপোর্ট শুরু করেছেন। প্রথমে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করা হবে।

শনিবার দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বোয়িং ৫৮২ জন যাত্রী নিয়ে জেদ্দার উদ্দেশে রওনা হবে। এর মধ্য দিয়ে শুরু হবে এবারের হজ ফ্লাইট। হজযাত্রী পরিবহনে মোট ৯২টি ‘ডেডিকেটেড ফ্লাইট’ চালাবে বিমান। এছাড়া ২২টি নিয়মিত ফ্লাইটেও হজযাত্রী পরিবহন করা হবে। এবছরও চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকে হজযাত্রী পরিবহন করবে বিমান।

সৌদি আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী, মোট হজযাত্রীর অর্ধেক বহন করবে বিমান। বাকি অর্ধেক করবে সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স এবং নাস এয়ারওয়েজ। হজের ফিরতি ফ্লাইট শেষ হবে ১৮ নভেম্বর।
সৌদি আরবে যাওয়ার পর দেশে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য এবার প্রত্যেক হজযাত্রীকে একটি করে সৌদি আরবের মোবাইল সিম কার্ড দেয়া হচ্ছে।

সুষ্ঠুু হজ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে জাতীয় হজনীতি ২০১০-২০১৪ প্রণয়নের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিসহ হজব্রত পালন যেমন সুনিয়ন্ত্রিত পদ্ধতির আওতায় এসেছে, তেমনি প্রশাসনিক কাজে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও দায়বদ্ধতা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে।

২০০৯, ২০১০, ২০১১ ও ২০১২ সালে উন্নত হজ ব্যবস্থাপনায় সৌদি হজ মন্ত্রণালয় বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ‘শ্রেষ্ঠ’ হিসাবে স্বীকৃতী দিয়েছে বলে শেখ হাসিনা জানান।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. শাহজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বিমানমন্ত্রী ফারুক খান, টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী সাহারা খাতুন এবং বাংলাদেশে সৌদি রাষ্ট্রদূত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top