সকল মেনু

২০ হাজার টাকায় মাদকাসক্ত ছেলেকে ভাড়াটে লোক দিয়ে খুন করান বাবা: পুলিশ

হটনিউজ ডেস্ক :

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার জাহাঙ্গীর আলম (২৮) হত্যার ঘটনায় তাঁর বাবা মোহাম্মদ আলীকে (৫৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার মোহাম্মদ আলী পুলিশের কাছে ভাড়াটে লোক দিয়ে ছেলেকে খুনের কথা স্বীকার করেছেন। তাহিরপুর থানা–পুলিশ সূত্রে বিষয়টি জানা যায়।

মোহাম্মদ আলীর বাড়ি উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের মাহারাম গ্রামে। গত ২২ মে সকালে গ্রামের পাশের সীমান্তবর্তী মাহারাম নদের পাড় থেকে জাহাঙ্গীর আলমের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তার মোহাম্মদ আলী ও অন্য আসামিদের বরাত দিয়ে পুলিশ বলেছে, জাহাঙ্গীর আলম মাদকাসক্ত ছিলেন। টাকাপয়সার জন্য তিনি পরিবারের লোকজনকে নানাভাবে নির্যাতন করতেন। এতে অতিষ্ঠ হয়ে মোহাম্মদ আলী ছেলেকে খুন করাতে ২০ হাজার টাকায় পেশাদার খুনিদের সঙ্গে চুক্তি করেন। গত ২১ মে রাতে ভাড়াটে লোকেরা জাহাঙ্গীর আলমকে ৫০০ টাকা দেওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন। জাহাঙ্গীরকে হত্যার পর তাঁর বাবাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন খুনিরা।

এ ঘটনায় মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে ছেলে হত্যার ঘটনায় নিজের গ্রামের তিন প্রতিবেশীকে আসামি করে তাহিরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় পুলিশের সন্দেহ হয়। পরে পুলিশ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে মাহারাম গ্রামের সুরুজ মিয়া (৫৫) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে। সুরুজ মিয়া পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নিজে খুনের সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেন এবং এর সঙ্গে এলাকার চানপুর রজনী লাইন গ্রামের সেকান্দার আলী (৫৫) নামের আরেকজন জড়িত বলে জানান। পরে পুলিশ গাজীপুর জেলার শ্রীপুরের কড়ইতলা থেকে সেকান্দার আলীকে ২২ জুন গ্রেপ্তার করে। দুজনই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে মোহাম্মদ আলী তাঁর ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে খুনের জন্য তাঁদের সঙ্গে ২০ হাজার টাকায় চুক্তি করেছিলেন বলে জানান।

সেকান্দার আলী এর আগে ১৯৯৬ সালে তাহিরপুর থানার একটি হত্যা মামলায় ১৪ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হন। পরে তিনি আপিলে ২০১২ সালে কারাগার থেকে ছাড়া পান।
তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল লতিফ তরফদার বলেন, ছেলে হত্যা মামলায় গত বুধবার রাতে মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার মোহাম্মদ আলী, সুরুজ মিয়া ও সেকান্দার আলীকে আসামি করে তাহিরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ গোলাম হক্কানী বাদী হয়ে অপর একটি হত্যা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান (এসপি) বলেন, গ্রেপ্তার দুই ব্যক্তির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জাহাঙ্গীর আলমকে খুনের সঙ্গে তাঁর বাবার সম্পৃক্ততার বিষয়টি ওঠে আসে। বাবা ছেলেকে খুন করাতে ২০ হাজার টাকায় একজন পেশাদার খুনিসহ দুজনকে ভাড়া করেন। যেহেতু মোহাম্মদ আলী খুনের সঙ্গে জড়িত, তাই তিনিও হত্যা মামলার আসামি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top