সকল মেনু

ইসলামে সহনশীল হওয়ার শিক্ষা

হটনিউজ ডেস্ক:

গণমাধ্যমে প্রকাশ, মানুষ ক্রমেই অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে এবং তাদের আচরণে তা নানাভাবে প্রকাশ পাচ্ছে। যেমন এখন মানুষ খুন করেই থামছে না, নিহত ব্যক্তিকে টুকরা টুকরা করছে। আর করছে নিজের স্ত্রী বা স্বামী, বন্ধু ও আপনজনরাই। তার সবচেয়েও বড় কারণ হলো মানুষের আল্লাহবিমুখতা ও পরকালীন জবাবদিহির চিন্তা লোপ পাওয়া।

পবিত্র কোরআনের ভাষ্যমতে, মানুষ যখন আল্লাহ থেকে বিমুখ হয়, তখন আল্লাহ তাদের হিতাহিতজ্ঞান লোপ করেন। ফলে তাদের দ্বারা আত্মঘাতী ও হিংসাত্মক কাজ সংঘটিত হয়। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা তাদের মতো হয়ো না, যারা আল্লাহকে ভুলে গেছে, ফলে আল্লাহ তাদের নিজেদের কথাও ভুলিয়ে দিয়েছেন।’ (সুরা হাশর, আয়াত : ১৯)

আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর জিকির থেকে বিমুখ হয়ো না। নতুবা আল্লাহ তোমাদের এমন কাজের কথা ভুলিয়ে দেবেন, যা তোমাদের জন্য কল্যাণকর।’ (তাফসিরে ইবনে কাসির)

মানুষের যখন হিতাহিত জ্ঞান লোপ পায়, তখন একটি অরাজক অবস্থার সৃষ্টি হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) উম্মতের ব্যাপারে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘ওই সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ! মানুষের সামনে এমন একসময় আসবে, যখন হত্যাকারী জানবে না যে কী অপরাধে সে হত্যা করেছে এবং নিহত ব্যক্তিও জানবে না যে, কী অপরাধে সে নিহত হয়েছে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৯০৮)।

মানুষ অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে বিচারব্যবস্থার প্রতি অনাস্থার কারণে। ইসলামী শরিয়ত মানুষের বিচারের ভার মানুষের হাতে তুলে দেয়নি। কোনো মানুষ অপরাধ করলে তার বিচার রাষ্ট্রীয় বিচারব্যবস্থার মাধ্যমেই হবে। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘জাকাত, হদ (শরিয়ত নির্ধারিত শাস্তি), ফাই (যুদ্ধলব্ধ এক প্রকার সম্পদ) ও জুমা সুলতানের (রাষ্ট্রের) দায়িত্ব।’ (আহকামুল কোরআন লিল-জাসসাস, পৃষ্ঠা-১৩১)।

ইমাম কুরতুবি (রহ.) বলেন, ‘শুধু দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাই কিসাস (প্রাণদণ্ড) বাস্তবায়ন করবে—এ ব্যাপারে আলেমদের মধ্যে কোনো মতভিন্নতা নেই।’ (তাফসিরে কুরতুবি : ২/২৪৫)

ইসলাম মানুষকে মানুষের জীবন, সম্ভ্রম ও সম্পদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে বলেছেন। বিদায় হজের ভাষণে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, নিশ্চয়ই তোমাদের রক্ত, তোমাদের সম্পদ, তোমাদের সম্ভ্রম পরস্পরের জন্য হারাম; আজকের দিনের মতো, তোমাদের শহরের (মক্কা) মতো, তোমাদের এই মাসের (জিলহজ) মতো। অতি শিগগিরই তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট প্রত্যাবর্তন করবে। সুতরাং আমার পরে তোমরা কুফরির দিকে ফিরে যেয়ো না যে তোমরা পরস্পরের ঘাড়ে আঘাত করবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৭০২)

মুসলিম হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হলো নিজের ক্ষোভ-ক্রোধ দমন করা এবং ব্যক্তি কোনো অপরাধ করলে তাকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top