কামাল হোসেন মাসুদ,নোয়াখালী প্রতিনিধি: সুখচর ইউনিয়নের বেড়ীবাধ নির্মাণে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্থানীয় এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল করে। মঙ্গলবার সকালে ৩ নম্বর সুখচর ইউনিয়নের সহস্রাধিক এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপজেলা পরিষদে জড়ো হন। পরে চেয়ারম্যানের অনিয়মের বিরুদ্ধে নোয়াখালীর দ্বীপ হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ দেন এলাকাবাসী ।
সুখচর ইউনিয়নের লোনা বেড়ীবাধ নির্মানের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ৩৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেন গত অর্থ বছরে। টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ পেয়ে ঠিকাদার কাজ শুরু করতে চাইলেও সুখচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিনের সাথে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বনিবনা না হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি কাজ না করে চলে যায়। সম্প্রতি পূর্ণিমার জোয়ারে সুখচর ইউনিয়নের প্রায় সব ক’টি গ্রাম প্লাবিত হয়। তাৎক্ষনিক পানি উন্নয়ন বোর্ড জরুরী ভিত্তিতে ৯লাখ টাকা এবং উপজেলা পরিষদ থেকে ইউনিয়ন পরিষদকে ৪ লাখ ৯৯ হাজার টাকা বরাদ্দ দেন। এই উভয় কাজের তদারকির দায়িত্ব দেয়া হয় সুখচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। কিন্তু তিনি কাজগুলো তদারকি না করে এবং কাজ শেষ না করে বিল উত্তোলণ করে আত্মসাৎ করেছে। কথাগুলো জানান রামচরণ বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম কাজল।
সম্প্রতি পূর্ণিমার জোয়ারে সুখচর ইউনিয়নের রামচরণ বাজার, বৌ বাজার, হরণী বাজার, চেয়ারম্যান বাজার ও সাধু বাজার এলাকায় ৪-৫ ফুট পানিতে প্লাবিত হয় বরাদ্দকৃত অর্থের কাজ শেষ না করায।জোয়ারের স্রোতে এসব এলাকার রাস্তাঘাট, কালভার্ট ভেঙ্গে আভ্যন্তরিণ যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সাময়ীক পরিক্ষা পিছিয়ে দেয়া হয়। তাঁরা আরও অভিযোগ করেন, যখন জোয়ারের পানিতে পুরো ইউনিয়ন প্লাবিত তখন চেয়ারম্যান এলাকায় না থেকে উপজেলা সদরে অবস্থান করতেন। শুধু এবার জোয়ারের সময় এলাকাবাসীর দুঃসময়ে কখনও তাকে পাওয়া যায় না। তাই দীর্ঘদিনের ক্ষোভ এক হলে তারা চেয়ারম্যানের এমন অনিয়ন-দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে বাধ্য হয়েছে বলে একাধিক বিক্ষোাভকারী জানান।
চেয়ারম্যানের এসব দুর্নীতি-অনিয়ম ও এলাকায় নিয়মিত না থাকার অভিযোগে মঙ্গলবার সুখচর ইউনিয়নের স্কুল-মাদরাসার ছাত্র-ছাত্রী, বিভিন্ন বাজারের ব্যাবসায়ী, শ্রমিক, শিক্ষকসহ সহস্রাধীক শিশু, নারী-পুরুষ ব্যানার, ফেষ্টুন নিয়ে প্রায় ১০ কিলোমিটারের বেশি পথ হেটে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপজেলা পরিষদের সামনে জড়ো হয় এবং নির্বাহী কর্মর্তার বরাবরে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ প্রদান করেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিখিত অভিযোগ পেয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবে এমন আশ্বাস দিলে বিক্ষেভকারীরা চলে যান।
অভিযুক্ত চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিনের সাথে সেলফোনে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাঁর মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহিদুর রহমান জানান, ক্ষুদ্ধ এলাকাবাসীর বিক্ষোভ মিছিল ও চেয়ারম্যানের অনিয়মের লিখিত অভিযোগের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হবে। প্রমাণিত হলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নিশ্চেত করে ।