সকল মেনু

পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় তিনজন নিহত

হটনিউজ ডেস্ক:

নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় উত্তাল হয়ে উঠেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য। গতকাল রোববার বিধানসভা ভোটের ফলাফলে তৃণমূল কংগ্রেস বড় জয় পাওয়ার পর রাত থেকেই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।

রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ভোটের ফলাফল পরবর্তী সহিংসতায় আক্রান্ত হচ্ছেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। এমনকী বাম, কংগ্রেস ও আব্বাস সিদ্দিকির আইএসএফের নেতা কর্মীদের উপরও আক্রমণের ঘটনা ঘটছে। খুন, মারধর, বোমাবাজি আর বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটছে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক এলাকায়।

রোববার ভোটের ফল প্রকাশের পরেই কলকাতা সংলগ্ন কাঁকুড়গাছির শীতলাতলা এলাকায় এক বিজেপি কর্মীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মৃত বিজেপি কর্মীর নাম অভিজিত সরকার। মৃতের পরিবারের দাবি, পশ্চিমবঙ্গে ভোটের ফল প্রকাশের পরেই পুলিশের চোখের সামনে পিটিয়ে মারা হয় অভিজিতকে। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃত অভিজিত সরকার বিজেপির ট্রেড ইউনিয়নের নেতা ছিলেন। তৃণমূল কর্মীরা অভিজিতকে পিটিয়ে খুন করেছে বলে অভিযোগ করেছেন মৃতের ভাই বিশ্বজিত সরকার।

এদিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সোনারপুরে রাজনৈতিক সহিংসতার বলি হয়েছেন আরেক বিজেপি কর্মী। ঘটনাটি ঘটেছে সোনারপুর দক্ষিণ বিধানসভার কেন্দ্রের অন্তর্গত প্রতাপনগর অঞ্চলের মেটিয়রিতে। মৃত হারান অধিকারী বিজেপি সমর্থক ছিলেন বলে জানা গেছে। এ ছাড়াও আহত হয়েছেন টুসি অধিকারী, রেখা অধিকারী, রাজু অধিকারী, পরান অধিকারী এবং বসু অধীকারী। অভিযোগ, রোববার দুপুরে ফল ঘোষণার পর থেকেই এলাকায় বোমাবাজি শুরু হয়। বিজেপির পতাকা ছিঁড়ে দেওয়া হচ্ছিল। তার প্রতিবাদ করতে গেলে পাড়ার এক নারীকে মারধর করা হয়। সেই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে পাড়ার ছেলেরা এগিয়ে এলে তাদেরকেও মারধর করা হয়। মারধরে গুরুতর জখম হন হারান অধিকারী। পরে তাঁকে হাসপাতলে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

পাশাপাশি ভোটের ফল ঘোষণার পরেই কলকাতার বেলাঘাটা এলাকায় স্থানীয় বিজেপি প্রার্থী কাশীনাথ বিশ্বাসের বাড়িতে অগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরে দমকল কর্মীরা এসে আগুন নেভায়। এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়ায়।

কলকাতা সংলগ্ন সুকান্তনগর এলাকাতেও ভোটের ফল ঘোষণার পর বিজেপি নেতাদের বাড়িতে হামলা ও বোমাবাজি হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতার বাড়ি টার্গেট করে বোমাও ছোঁড়া হয়। কলকাতার অভিজাত এলাকা বিধাননগরেও বিজেপি কর্মীরা আক্রান্ত হন বলে জানা যায়।

কলকাতার যাদবিপুর এলাকায় বাম নেতাদের বাড়িতেও হামলা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভোটের ফল প্রকাশের পরেই যাদবপুরের বিভিন এলাকায় স্থানীয় বাম নেতাদের বাড়ি লক্ষ্য করে চলে বোমাবাজি।

অন্যদিকে, উত্তর ২৪ পরগণা জেলার দেগঙ্গা বিধানসভার কদম্বগাছীতে এক আইএসএফ কর্মী খুন হন বলে জানা গেছে। মৃতের নাম হাসানুজ্জামান। অভিযোগ, সোমবার সকালে মাঠে কাজ করার সময় তৃণমূলের কর্মীরা হাসানুজ্জামানকে মাঠ থেকে তাড়া করে বোমা মেরে খুন করে। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।

এ ছাড়াও ভোটের ফলাফল পরবর্তী সহিংসতা ছড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ঘোলা থানা এলাকায় বিশ্বজিত ধর নামে এক বিজেপি কর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকী তার বাড়ির কাছে লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরাও ভেঙে দেওয়া হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top