সকল মেনু

মুন্সিগঞ্জে কর্মী সভাই নির্বাচনী জনসভা -মির্জা ফকরুল

P1060816আব্দুস সালাম , মুন্সিগঞ্জ:  বি,এন,পি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিলে আওয়ামীলীগের প্রার্থীদের জামানত থাকবে না তাই তারা নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকার দিতে ভয় পায় আগামীতে আবারো ক্ষমতায় আসার জন্য নানা অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে।বর্তমান সরকার এবার ভিন্ন লেবাসে এক দলীয় শাসন চাপিয়ে দিতে চাইছে তাই সু পরিকল্পিত ভাবে বিচার বিভাগ সহ সকল প্রতিষ্ঠান ধ্বংশ করে দিয়েছে। বিচা বিভাগে বিচার নেই ,বিচারের নামে প্রহসন হচ্ছে । তিনি গতকাল শুক্রবার মুন্সিগঞ্জ জেলা বি,এন,পি আয়োজিত কর্মীসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন।

মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর আরো বলেন,দেশ এখন কঠিন সময় পাড় করছে দেশের এ সংকট আওয়ামীলীগ সৃষ্টি করেছে জুলুমবাজ-ফ্যাসিষ্ট এ সরকারকে হটাতে ১৮দলীয় জোচ সহ সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মূীদের ঐক্যবদ্বভাবে এগিয়ে আসতে হবে। বর্তমান সরকার দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিয়েছে পূজিবাজার থেকে হাজার হাজার টাকা লুট করে নিয়ে গেছে ৩৩ লাখ বিনিয়োগকারীকে পথে বসিয়েছে ডেসটিনি,হলমাক, থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটে নেয়ায় ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ধস নেমেছে।

এ সরকার অসহায় হয়ে পড়েছে। আওয়ামী ফ্যাসিষ্ট সরকারের সময় শেষ হয়ে আসছে। জনগণকে বিনা মূল্যে সার দেওয়ার কথা বলে ক্ষমতায় এসেছেন কিন্তু এখন ৩০০টাকার সার ১১০০টাকায় কিনছে কৃষক। কৃষকরা ধান, পাট আলুর ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। মধ্যস্বত্তভোগীরাই লাভবান হচ্ছে। বিদেশে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে প্রায়। জাপান-কোরিয়ার মত দেশেও জনসংখ্যা রপ্তানী বন্ধ হতে চলেছে। বিদেশের সাথে সু-সম্পর্ক রক্ষা করা উচিত অন্যথায় এ ধরনের সমস্যায় পড়তে হবে বাংলাদেশের মানুষকে। ৫০০ গার্মেন্স ফ্যাক্টরী বন্ধ হয়ে গেছে। আমেরিকার জিএসপি সুবিধা বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যাংকিং ব্যবস্থা শেষ হয়ে গেছে। পুজি বাজার ধবংস করে দিয়েছে এ সরকার। গহনা বন্দক রেখে শেয়ার ব্যবসা শুরু করেছিল স্বল্প আয়ের মানুষ। শেয়ার বাজারও ধবংস করে দিয়েছে। পদ্মা সেতু ধ্বংস করে দুর্নীতির দায়ে বিশ্বব্যাংক দূর্নীতিবাজ মন্ত্রীকে সরিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিলেন উল্টো প্রধানমন্ত্রী বললেন, তিনি হলেন সবচেয়ে দেশপ্রেমিক। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে আরো বলেন, বিচার বিভাগে দলীয় লোকদিয়ে বিচারের নামে প্রহসন করছে। যুদ্ধাপরাধীদের মধ্যে ১৯৩জন তালিকাভূক্ত যুদ্ধাপরাধীদের ছেড়ে দিয়েছে শেখ মুজিবুর রহমান। তাদের বিচার না করে একটি রাজনৈতিক দলকে ধবংস করার জন্যই এই বিচার ব্যবস্থা। তিনি বলেন, বিএনপি স্বাধীনতার ঘোষক, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ জিয়াউর রহমানের দল কখনো যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে থাকতে পারে না। তবে এই বিচারটি হবে ন্যায়ের বিচার। তারা এখন দিশেহারা হয়ে আদালতের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু করার পায়তার করছে। ৭২-৭৫ সাল পর্যন্ত এ দেশ ছিল বাকশাল ও রক্ষীবাহিনীর হাতে। তাদের হাতে হাজার মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে। তাই তারা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু করতে চায়। এই মুন্সিগঞ্জে সবচেয়ে বাকশাল ও রক্ষীবাহিনীর দ্বারা নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে। তারা সংবিধান থেকে আল্লাহর উপর বিশ্বাস বাদ দিয়ে দিয়েছে। এখন যতই বলেন সকল ক্ষমতার মালিক আল্লাহ। এ সব বললেও কাজ হবে না এ দেশের জনগণ আপনাদেরকে প্রত্যাখান করেছে। তাই তিনি বলেছেন আগে জানলে তোর ভাঙ্গা নৌকায় চড়তাম না। পরে হেফাজতে ইসলামের ভাইদের শাপলা চত্বরে বাতি নিভিয়ে নিষ্ঠুরভাবে হত্যাকান্ড চালিয়েছেন।
মুন্সিগঞ্জের হাটলক্ষীগঞ্জ এলাকায় জেলা বি,এন,পি সভাপতি ও সাবেক উপমন্ত্রী আ: হাইয়ের সভাপতিত্বে কর্মীসমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, শাহমোয়াজ্জেম হোসেন,মিজানুর রহমান সিনহা, ফজলুল হক মিলন,ড. আসাদুজ্জামান রিপন,আ: মালেক, সরাফত আলী সপু,আলী আসগর রিপরন মল্লিক,কে,এম ইরাদত মানু,আতোয়ার হোসেন বাবুল,এডভোকেট আ: মান্নান,রহিমা শিকদার,তারেক কাশেমখান মুকুল, ,আ: আজিমস্বপন, আমিনুল ইসলাম জসিম প্রমুখ।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মুন্সিগঞ্জের সাংগঠনিক কর্মী সভায় বিকাল ৩টায় পৌঁছান। এর পূর্বেই মুন্সিগঞ্জ লঞ্চঘাট থেকে পুরাতন বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত কানায় কানায় ভরপুর হয়ে যায়। বিকাল ৫টার মধ্যে সুপার মার্কেট পর্যন্ত লোক সমাগম হয়। ফলে বিশাল জনসভায় পরিণত হয় কর্মীসভা।
জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপমন্ত্রী আলহাজ মো. আব্দুল হাই আয়োজিত এ কর্মী সভায় সভাপতিত্ব করেন। উপস্থিত বক্তারা বলেন, ঢাকা থেকে আওয়ামী বাকশাল তাড়ানোর জন্য মুন্সিগঞ্জকর্মীবাহিনীই যথেষ্ট।
সভাপতি আব্দুল হাই বলেন, হাসিনা সরকারের অসুবিধা দুইটা জায়গায় তারেক রহমান, বেগম খালেদা জিয়া অপরটি হলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার। ১/১১ এর মাধ্যমে ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় আসেন। বর্তমানে যে অবস্থা তাতে শেখ হাসিনা পল্টি খাবেন। নির্বাচন শুরু হলেই পরাজিত হবে তার সরকার বিকাল ৪টা পর্যন্ত যেতে হবে না।
শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্যে বলেন আর মির্জা ফখরুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে দেখতে চাই না। তিনি বলেন, এক মহিলা তার জীবনে সকল কাজ উল্টো করতেন। স্বামীর কথা শুনতেন না। পরবর্তীতে তিনি গোসল করতে গিয়ে পানিতে পড়ে আত্মহত্যা করে মারা যান। স্বামী নদীতে পানির স্রোতের উল্টো দিকে তার স্ত্রীর লাশ খুজছেন। পরে উপস্থিত লোকজন তাকে জিজ্ঞেস করেন কি খুজছেন, মহিলার স্বামী বলেন তার স্ত্রীকে সে খুজছেন। তখন নদীতে ছিল জোয়ার। লোকজন বললো তাহলে আপনার স্ত্রীকে সামনের দিকে খোজেন পিছনে খুজছেন কেন? তখন মহিলার স্বামী বলল, আমার স্ত্রী জীবনের প্রতিটি মুহুর্তে উল্টোপথে হাটছেন তাই তার লাশ উল্টো পথেই খুজছি। হাছিনা সরকার জীবন ভর উল্টো পথে চলেছেন তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করলেন, জ্বালাও পোড়াও করলেন ক্ষমতায় আসলেন এখন তার উল্টোটা করছেন। তিনি শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সোনার চান পিতলার ঘুঘু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমেই নির্বাচন দিবেন তবে এখন দিবেন না। সময় হলে ঠিকই দিবেন।
এদেশের মানুষ আপনার কথা শুনবে না। বেহায়া না হলে একবার কান কাটলেই সে দেশ ত্যাগ করে। আর বেহায়া হলে বারবার কান কাটলে বার বার ফিরে আসে।
তিনি আরো বলেন, এ সরকারের আমলে ১৩৭৬৬টি খুন হয়েছে, ৩২০৮টি ধর্ষন হয়েছে, এসিড সন্ত্রাস হয়েছে ৪৫৩টি। অথচ আমাদের মহাসচিবের বিরুদ্ধে মামলা আর না পেলেও ময়লার গাড়ি পোড়ানো একটি মামলা দিয়েছেন। বাবু সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত ৭৫কোটি টাকা চুরি করে ধরা খেলেন কিন্তু মন্ত্রীত্ব হারালেন না তার শাস্তি হলো দপ্তর বিহীন মন্ত্রী। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর সংবিধানে ১০০জনের মধ্যে সকলে স্বাক্ষর করলেও একমাত্র ব্যক্তি যিনি এখন কালো বিড়াল তিনি মাত্র ব্যক্তি স্বাক্ষর করেন নি। এখন তিনি সংবিধান সংশোধনের পরামর্শ দাতা।
এতে জাতীয় ও স্থানীয় বিএনপির নেতারা উপস্থিত হয়েছেন। সাংগঠনিক সফরের অংশ হিসেবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচির মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মুন্সিগঞ্জ বিএনপির কর্মী সভায় যোগদান করেছেন। অন্যদিকে, শুক্রবার দুপুরের পর থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে শহরের হাটলক্ষিগঞ্জ এলাকায় আয়োজিত কর্মী সভাস্থলে উপস্থিত হতে শুরু করেছেন। জেলার ৮টি ইউনিট থেকে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বাস, টেম্পু ও ট্রলারসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে এ কর্মী সভায় যোগদান করছেন।
এ সময় নেতাকর্মীদের হাতে বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুন ও প্লেকার্ড নিয়ে জড়ো হচ্ছেন কর্মী সভাস্থলে। জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপমন্ত্রী আলহাজ মো. আব্দুল হাই বাংলানিউজকে জানান, শুক্রবারের কর্মী সভায় দলের মহাসচিবের আগমনকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতাকমীরা উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top