সকল মেনু

বাড়তে পারে তেলের দাম

Oil20130830065514আফিফা জামান, ঢাকা, ৩০ আগস্ট:  মিসর ও সিরিয়ায় ভয়াবহ রাজনৈতিক অস্থিরতায় বাংলাদেশে সকল প্রকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে পারে। ইতিমধ্যে এশিয়ার বাজারে এর দাম খানিকটা বেড়েছে। এর ফলে সকল প্রকার পণ্যের দামও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিশ্লেষকেরা মনে করেন, মধ্যপ্রচ্যের রাষ্ট্রগুলোতে রাজনৈতিক অস্থিরতায় দেশে জ্বালানি তেলের আমদানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে। বিঘ্নিত হতে পারে সরবরাহ ব্যবস্থাও। আর এ দুই কারণে অভ্যন্তরীণ বাজারে বাড়তে পারে জ্বালানি তেলের দাম।
এ ছাড়া বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানুফেকচারিং বা উৎপাদন খাত চাঙ্গা হয়ে ওঠার ইঙ্গিতও আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামে প্রভাব ফেলছে।
জানা যায়, এরই মধ্যে গত চার দিনের ব্যবধানে বিশ্ববাজারে ব্যারেলপ্রতি (দশমিক ১২ মেট্রিক টন) দাম বেড়েছে পাঁচ মার্কিন ডলার। এর দাম আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সূত্রে জানা যায়, রাষ্ট্রীয় এ সংস্থাটি চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে বিদেশি ৯টি তেল কোম্পানি থেকে প্রায় ১৫ লাখ টন জ্বালানি তেল কিনবে ।
এর মধ্যে মিসরের বিখ্যাত তেল কোম্পানি মিডলইস্ট অয়েল রিফাইনারি (মিডর) থেকে আমদানি করা হবে এক লাখ ৪০ হাজার টন ডিজেল। মিসরের মধ্যপ্রাচ্য অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড থেকে মোট দুই লাখ ৫০ হাজার টন গ্যাস অয়েল আমদানি করা হবে। এ জন্য মোট ব্যয় হবে এক হাজার ৮০২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান মো. ইউনুছুর রহমান বলেন, ‘সিরিয়া থেকে তেল না আনলেও মধ্যপ্রাচ্যের সংকট তেল আমদানিতে কিছুটা হলেও বিঘ্ন ঘটতে পারে। কারণ বাংলাদেশের জ্বালানি তেলের ধারণক্ষমতা তত বেশি নয়। আমরা এক থেকে দেড় মাসের চাহিদা মেটানোর মতো তেল মজুদ রাখতে পারি।’

তবে তিনি আরো বলেন, ‘আমরা এখন কয়েকটি উৎস থেকে তেল আমদানি করায় খুব বেশি সংকট হবে না। তেলের দাম নির্ধারণ করা হয় যখন তেল জাহাজে তোলা হয় তখনকার আন্তর্জাতিক বাজারের দাম ও প্রিমিয়াম মিলিয়ে।’

তিনি জানান, জাহাজীকরণের আগের দুই দিন ও পরের দুই দিনের অর্থাৎ মোট পাঁচ দিনের আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্যের গড় হিসাব করে সঙ্গে নির্ধারিত প্রিমিয়াম যোগ করে তেলের দাম ঠিক হয়।
আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এফপি জানায়, মিসরের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় এশিয়ার বাজারে লাইট সুইট ক্রুড (অশোধিত) জ্বালানি তেলের দাম শুক্রবার বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ১০১ দশমিক ৮০ ডলারে উঠেছে।
আর ব্রেন্ট নর্থ সি ক্রুড তেলের দামও বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ১০৫ দশমিক ১১ ডলার হয়েছে। প্রতি ব্যারেল লাইট সুইট ক্রুড জ্বালানি তেল ৯৮ দশমিক ৭ ডলার ও ব্রেন্ট নর্থ সি ক্রুড তেল ১০৩ দশমিক ১৮ ডলারে কেনাবেচা হয়।
বাংলাদেশ লুব ভ্যালেন্ডার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও প্যাসিফিক ওয়েল কোম্পানি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হোসাইন রাইজিংবিডিকে বলেন, সিরিয়া ও মধ্যপ্রাচ্য সংকট পরিস্থিতিতে পুরোপুরি আমদানি-নির্ভর দেশীয় জ্বালানি তেলের চাহিদা ও সরবরাহ কিছু সঙ্কটে পড়তে পারে। এ অঞ্চলটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকায় অবশ্যই এর প্রভাব বাংলাদেশ পড়বে। তবে সামনে নির্বাচন থাকায় সরকার ভর্তূকি বাড়াতে পারে বলে মনে করেন এ তেল ব্যাবসায়ী নেতা।
জ্বালানি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মধ্যপ্রাচ্যে বর্তমানে যে অবস্থা চলছে এবং তা যদি আরো ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে সত্যিকার অর্থেই তেলের বাজার নিয়ে উদ্বেগের কারণ রয়েছে।
আর তেলের দাম বাড়লে নিত্যপণ্যের দাম বাড়াটাই স্বাভাবিক বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top