সকল মেনু

বোরকা নিষেধাজ্ঞায় সুইজারল্যান্ডে আজ গণভোট

হটনিউজ ডেস্ক:

করোনা মহামারিরোধে যখন পুরো বিশ্বের মানুষ মাস্ক পরিধানে গুরুত্বারোপ করছে, এমন সময় পুরো মুখ ঢেকে বোরকা নিষেদ্ধে গণভোট শুরু করেছে সুইজারল্যান্ড। আজ রবিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) জনপরিসরে পুরো মুখ ঢাকায় নিষেধাজ্ঞা নিয়ে গণভোট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

দীর্ঘদিনের বিতর্কিত ইস্যুতে গণভোটের পক্ষে ‘পুরো মুখ ঢেকে রাখার পক্ষে হ্যাঁ’ শীর্ষক দেশব্যাপী সামাজিক প্রচারণা শুরু করা হয়। অবশ্য এ প্রচারণায় বোরকা বা নিকাবের কথা উল্লেখ করা না হলেও এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, দুচোখ ছাড়া পুরো মুখ ঢেকে থাকা বোরকা বা নিকাবকে উদ্দেশ্য করেই গণভোটের আয়োজন করা হচ্ছে।

অবশ্য সুইজারল্যান্ডে নারীদেরকে পুরো মুখ ঢেকে বোরকা বা নিকাব পরিধান করতে খুবই কম দেখা যায়। তদুপরি গণভোটের প্রচারণায় বিভিন্ন শহরের দেয়ালে ‘মৌলবাদি ইসলাম থামাও’ বা ‘উগ্রবাদ থামাও’ লেখা পোস্টার দেখা যায়। এর পাশাপাশি কালো নেকাব পরা নারীদের ছবিও দেখা যায়।

বোরকা নিষেধাজ্ঞার পক্ষে প্রচারণার পাশাপাশি বোরকার পক্ষেও অনেক পোস্টার দেখা যায়। তাতে লেখা আছে, ‘অযৌক্তিত অনর্থক বোরকা বিরোধী ইসলামবিদ্বেষী আইন নয়।’

বোরকা বা নিকাব নিষেধাজ্ঞা জারি হলে পুরো মুখ ঢেকে কেউ দেশটির কোনো উম্মুক্ত স্থান বা মার্কেটে যেতে পারবে না। অবশ্য উপাসনার স্থান, চিকিৎসা, নিরাপত্তা, জলবায়ু বা স্থানীয় কোনো সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য পালনে তা পরা যাবে।

২০১৯ সালের কেন্দ্রীয় সরকারি পরিসংখ্যান মতে সুইজার‌ল্যান্ডের মোট জনসংখ্যার মাত্র ৫.৫ ভাগ মুসলিম। আর তাদের অধিকাংশ যুগোস্লাভিয়ার সাবেক অধিবাসী।

এদিকে পুরো মুখ ঢাকায় নিষেধাজ্ঞা জারিতে সুইজার‌ল্যান্ডের সরকার ও পার্লামেন্টের মুখোমুখী অবস্থান করছে। নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে দেশটির সরকার জানায়, নিকাবধারী নারীদের অধিকাংশ পর্যটক। তাঁরা সুইজারল্যান্ডে কিছু সময়ের জন্য এসে থাকেন। তা নিষিদ্ধ হলে পর্যটক কমে যাওয়ার আশংকা আছে।

সুইজারল্যান্ডে সরাসরি গণতান্ত্রিক অধিকার লাভের সুযোগ আছে। যেকোনো ইস্যুতে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। এতে আইন পাসের জন্য ৮.৬ মিলিয়ন মানুষের ধনী দেশে এক লাখ স্বাক্ষর প্রয়োজন হয়। তাই প্রতি তিন মাস পর পর বিভিন্ন অঞ্চলে ভোট অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে ১২ বছর আগে মুসলিমদের ওপর আরেকবার নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সুইজারল্যান্ড সরকার। ২০০৯ সালে মিনার নির্মাণ নিষেধাজ্ঞায় গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

অবশ্য আগ থেকেই সুইজার‌ল্যান্ডের সেন্ট গ্যালেন ও টিকিনো দুটি অঞ্চলে এ নিষেধাজ্ঞা জারি আছে। ২০১৯ সাল থেকে মুখ ঢাকলে নারীদেরকে নির্দিষ্ট জরিমানা প্রদান করতে হয়। টিকিনো অঞ্চলে ২০১৬ সাল থেকে মুখ ঢাকায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পুরোপুরি বোরকা ও নিকাব পরিধানে নিষেধাজ্ঞা আছে। ফ্রান্স, অস্ট্রিয়া, বেলিজিয়াম, বুলগেরিয়া, ডেনমার্কে বোরকা পরিধান পুরোপুরি নিষেধ। এ আইন লঙ্ঘন করলে নির্দিষ্ট জরিমানা আদায় করতে হয়। ইউরোপের কিছু দেশে বোরকা বা নিকাব পরিধানে আংশিক নিষেধাজ্ঞা আছে। জার্মানি, নেদারল্যান্ড, নরওয়ে, ইতালি, সুইডেনের নির্দিষ্ট স্থানে বা নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের নিকাব বা বোরকা পরিধানে আংশিক নিষেধাজ্ঞা আছে।

সূত্র : গালফ নিউজ

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top