সকল মেনু

সাংবাদিকতার বেশে জঙ্গি তৎপরতা চালাতো সে

হটনিউজ ডেস্ক:

নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশের (হুজি) অপারেশন শাখার প্রধানসহ ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। আজ শুক্রবার (৫ মার্চ) দুপুরে এসব তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) ইফতেখায়রুল ইসলাম।

তিনি জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানাধীন সায়েদাবাদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩ জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. মাইনুল ইসলাম ওরফে মাহিন ওরফে মিঠু ওরফে হাসান, শেখ সোহান সা’আদ ওরফে বার’আ আব্দুল্লাহ ও মুরাদ হোসেন কবির। অভিযানে তাদের কাছ থেকে ১টি প্রাইভেটকার, ৫টি মোবাইল ফোন, ১টি মাইক্রোফোন, ১টি চাপাতি, ২টি ছোড়া, ১০টি ডেটোনেটর, ১৭০টি বিয়ারিং লোহার বল, ১টি স্কচটেপ, ৫ লিটার এসিড, ৩টি আইডি কার্ড ও ১টি জিহাদি বই উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তিনি জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামীর সক্রিয় সদস্য। তারা মাইনুল ইসলামের নেতৃত্বে হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী পুনর্গঠন, পূর্ণাঙ্গ শুরা কমিটি প্রস্তুতকরণ, সংগঠনের অর্থদাতা এবং সদস্যদের কাছ থেকে অর্থের জোগান নিশ্চিতকরণ, ব্যাপক হারে সংগঠনের রিক্রুটমেন্টকরণ, অস্ত্র সংগ্রহ, বোমা তৈরির সরঞ্জাম সংগ্রহ, কারাগারে আটক সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের জামিনের ব্যবস্থাকরণ, বান্দরবান-নাইক্ষ্যংছড়ি পাহাড়ি দুর্গম এলাকায় জমি লিজ নিয়ে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। দেশের ৬৪ জেলায় তাদের সংগঠনের বিস্তার ও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাংবাদিকতাসহ বিভিন্ন পরিচয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন তারা। তারা কারাগারে আটক ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডাক্তার জাফর ও ২০০০ সালের কোটালিপাড়ায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হত্যাচেষ্টা মামলার যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মেহেদী হাসান ওরফে আব্দুল ওয়াদুদ ওরফে গাজী খানের নির্দেশে সাংগঠনিক কাজ করছিলেন।

এডিসি ইফতেখায়রুল ইসলাম আরও জানান, গ্রেপ্তার মাইনুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে নিষিদ্ধ সংগঠন হুজির প্রধান অপারেশন সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছিলেন। সাংবাদিকতার বেশ ধারণ করে সংগঠনের দাওয়াতি কাজ, অর্থ সংগ্রহ, বোমা তৈরির সরঞ্জাম সংগ্রহ করে আসছিলেন তিনি। তার পরিকল্পনা ছিল, ঢাকা শহরে বড় ধরনের নাশকতা করে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করা। ২০১৫ সালে হুজি’র শীর্ষ নেতা কারাবন্দি মুফতি মঈনউদ্দিন ওরফে আবু জান্দালকে ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি।

অপর গ্রেপ্তার সোহান সা’আদ সুনামগঞ্জের বিবিয়ানা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ঢাকায় মিরপুর বাংলা কলেজে পড়ার পাশাপাশি একটি মাদরাসায় শিক্ষকতা করতেন তিনি। ২০১৬ সালে একুশে বইমেলায় নাশকতার ঘটনায় গ্রেপ্তার হন সা’আদ। এছাড়া তিনি ২০১৭ সালে বিস্ফোরক মামলায় এবং ২০১৯ সালে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় গ্রেফতার হন। জামিনে বের হয়ে মাইনুলের নেতৃত্বে হুজির সক্রিয় সদস্য হিসেবে কাজ করতেন তিনি।

গ্রেপ্তার মুরাদ হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামীর সক্রিয় সদস্য। ব্যবসার আড়ালে হুজি সংগঠনের দাওয়াতি ও বায়তুল মালের দেখভালের দায়িত্ব পালন করতেন তিনি। তাদের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে। তাদের অন্যান্য সহযোগীদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালাচ্ছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top