রিপন হোসেন, যশোর থেকে : দীর্ঘ ১৫ বছরেও যশোরের দৈনিক রানার সম্পাদক আর এম সাইফুল আলম মুকুল হত্যা মামলার বিচার সম্পন্ন হয়নি। উচ্চ আদালতে এ মামলার আসামি সাংবাদিক ফারাজী আজমল হোসেনের আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর এজেডএম ফিরোজ। এ অবস্থার মধ্যদিয়ে শুক্রবার মুকুলের ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হচ্ছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালের ৩০আগস্ট রাতে দৈনিক রানার সম্পাদক সাইফুল আলম মুকুল শহর থেকে বেজপাড়ার নিজ বাসভবনে যাওয়ার পথে চারখাম্বার মোড়ে দুর্বৃত্তদের বোমা হামলায় নিহত হন। পরদিন নিহতের স্ত্রী হাফিজা আক্তার শিরিন কারো নাম উল্লেখ না করে কোতয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি যশোর জোনের তৎকালীন এএসপি দুলাল উদ্দিন আকন্দ ১৯৯৯ সালের ২৩ এপ্রিল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামসহ ২২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এক পর্যায়ে আইনি জটিলতার কারণে মামলার কার্যক্রম থমকে পড়ে। আর এ কারণে চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি হাইকোর্ট থেকে বাতিল করে দেয়া হয়। দীর্ঘদিন পর ২০০৫ সালে হাইকোর্টের একটি বিশেষ বেঞ্চ থেকে মুকুল হত্যা মামলা পুনরুজ্জীবিত করে বর্ধিত তদন্তের নির্দেশ দেয়। ওই বছরের ২১ ডিসেম্বর সিআইডি কর্মকর্তা মওলা বক্স নতুন দু’জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করে আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দেন। ২০০৬ সালের ১৫ জুন যশোরের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল (৩) এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে (২) ২২ জনকে অভিযুক্ত করে মুকুল হত্যা মামলার চার্জগঠন করা হয়। এ সময় মামলা থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও তৎকালীন মন্ত্রী তরিকুল ইসলাম ও রূপম নামে আরেক আসামিকে অব্যাহতি দেয়া হয়। ২০১০ সালে মামলার ২৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয় যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতে।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর এজেডএম ফিরোজ জানান, এ মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে আসামি ইত্তেফাকের বিশেষ প্রতিনিধি ফারাজী আজমল হোসেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে আবেদন করেন। ফারাজী আজমল হোসেনের ওই আবেদনের নিস্পত্তি না হওয়ায় নি¤œ আদালতে এ মামলার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে আছে।

এ অবস্থায় আজ শুক্রবার ৩০ আগস্ট পালিত হচ্ছে শহীদ সাংবাদিক সাইফুল আলমের ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষে প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরসহ বিভিন্ন সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে শোকর‌্যালি, শহীদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল ইত্যাদি।