হটনিউজ২৪ঢাকা, ২৮ আগস্ট: কাঙ্খিত বিনিয়োগ না হওয়ায় ব্যাংকে পাহাড় জমছে অলস টাকার। দিন দিন ব্যাংক বিমুখ হচ্ছেন নতুন-পুরানো উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা।
মাত্র এক বছর আগেও ব্যাংক ঋণ পাওয়ার জন্য ব্যবসায়ীরা এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে ছুটতেন। এমকি ঋণের জন্যে যথারীতি লবিংও করতেন। আর এখন ঋণ দেয়ার জন্য ব্যাবসায়ীদের পেছনে ঘুরছে ব্যাংকগুলো।
রাজনৈতিক অস্থিরতা, অবকাঠামোগত সমস্যা, আস্থাহীনতা ও উচ্চ সুদের কারণে কেউ ঋণ নিতে আগ্রহী হচ্ছেন না। আর এ কারনে ব্যাংকিং খাতে প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা অলস পড়ে আছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ব্যাংকিং খাতে অলস টাকা ছিল ৬০ হাজার কোটি টাকা। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে ছিল ৫৮ হাজার কোটি টাকা। ডিসেম্বরের পর থেকে প্রতি মাসে ব্যাংকগুলোতে অলস টাকার পরিমাণ বাড়ছেই।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, চলমান ও আগামী নির্বাচনের রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন ব্যবসায়ীরা। বারবার সমাধানের তাগিদ দেয়া সত্ত্বেও রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে সাড়া না পাওয়ায় আগামীতে ব্যবসায়িক অচলাবস্থার আশঙ্কা করছেন তারা। ফলে বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছে ব্যবসায়ীরা।
এছাড়াও নিরাপত্তা ঝুঁকি, অবকাঠামোগত কাজের নিম্নমান, সড়ক যোগাযোগ, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের অভাব এবং শিল্প-কারখানা গড়ে তুলতে সুবিধামতো জায়গার অভাবেও বিনিয়োগে বিমুখ হচ্ছেন উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা। ফলে দিন দিন ব্যাংক ঋণ থেকেও সড়ে আসছেন তারা।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপরোক্ত কারন ছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংকিংখাতে একাধিক কেলেঙ্কারির কারনে ব্যাবসায়ীরা ব্যাংক বিমুখ হচ্ছেন। একই সঙ্গে অতিরিক্ত ব্যাংক ঋণের সুদের যাঁতাকলে পৃষ্ট হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীদের দাবি দেশে বিনিয়োগের পরিবেশ নেই। তাই তারা হাত গুটিয়ে বসে আছেন। নগদ টাকা যাদের আছে, তারা তা ব্যাংকে রেখে দিয়েছেন।
তাই ব্যাংকগুলোয় তারল্য বাড়ছে। যা এখন অলস টাকা হিসেবে ধরা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে কথা হয় ব্যাংক নির্বাহীদের শীর্ষ সংগঠন এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও এনসিসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নূরুল আমিনের সঙ্গে।
তারল্যের সঙ্কট নেই দাবি করে তিনি হটনিউজকে বলেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আমরা শঙ্কিত। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বড় ধরনের বিনিয়োগে উদ্যোক্তারা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। এমতাবস্থায় আগামীতে ব্যবসায়িক মন্দার শঙ্কা থাকছে।
ব্যবসায়ীদের অন্যতম শীর্ষ সংগঠন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই) সভাপতি মো. সবুর খান বলেন, বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও সুযোগ বেশি থাকলেও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে অধিকাংশ বিনিয়োগকারী ফিরে যাচ্ছে।
আগামী নির্বাচন নিয়ে সংশয় থাকায় দেশীয় উদ্যোক্তারা নতুন করে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। দেশের ব্যাবসা-বাণিজ্যেরে উন্নয়নে রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছার বিকল্প নেই।
একই সঙ্গে অবকাঠামোগত ও ব্যাংকের ঋণের উচ্চ সুদের হারও কমানো জরুরি বলে মনে করেন এ ব্যবসায়ী নেতা।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।