সকল মেনু

যে কারণে ‘বাঘা’ যতীন বলা হয় তাকে

হটনিউজ ডেস্ক:

ভারতবর্ষের ইংরেজ ঔপনিবেশিক শাসকদের বিরুদ্ধে যারা সশস্ত্র সংগ্রাম করেছেন, তাদের অন্যতম ছিলেন যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। তিনি বাঘা যতীন নামেই পরিচিত।

বাঘ মেরেই ‘বাঘা’ যতীন উপাধিটা পেয়েছিলেন তিনি। ১৯০০ সালের দিকের ঘটনা। নদীয়া জেলার কুষ্টিয়ার এক গ্রামে হঠাৎ কোত্থেকে এক বাঘের আবির্ভাব ঘটল। বাঘের যন্ত্রণায় যখন মানুষজন অস্থির তখন যতীনের মামাতো ভাই ফণিবাবু বাঘটিকে মারার সিদ্ধান্ত নেন।

ঘটনাক্রমে যতীন তখন তার মামার বাড়িতেই। সকলের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সামান্য এক ভোজালি (ছোট চাকুর মতো একধরনের অস্ত্র) নিয়ে ফণিবাবুর সাথে বাঘ মারা দেখতে গেলেন। সমগ্র গ্রাম তন্ন তন্ন করে খোঁজার পরও বাঘটিকে পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক খোঁজাখুঁজির পর সবাই জঙ্গলের পাশের মাঠে বাঘ শিকারের প্রস্তুতি নিয়ে অপেক্ষা করতে লাগল।

ফণিবাবুর বন্দুক তাক করা ছিল জঙ্গলের দিকে। বাঘ বোধহয় বন্দুকটি দেখতে পেয়েছিল, তাই বন্দুকের দিক দিয়ে বের না হয়ে যতীনের পেছন দিয়ে বের হল। বাঘ দেখামাত্রই গ্রামবাসী স্বভাবসুলভ ছোটাছুটি শুরু করে দেয়।

ফণিবাবু সতর্কভাবেই বাঘের দিকে গুলি ছোঁড়েন। দুর্ভাগ্যবশত গুলিটি বাঘের মাথা ঘেঁষে চলে যায় এবং প্রতিক্রিয়ায় বাঘটি আরো উত্তেজিত হয়ে ওঠে এবং সর্বনিকটে অবস্থানরত যতীনকেই আক্রমণ করে বসে। যতীনও দমবার পাত্র নয়। সামান্য ভোজালি দিয়ে সেও বাঘটিকে আঘাত করতে থাকে।

উভয়ের মধ্যে মিনিট দশেক ধরে ধ্বস্তাধস্তি চলতে থাকে। উভয়ের ক্ষেত্রেই একটি শর্ত, জানে বাঁচতে হলে অপরকে হত্যা করতে হবে। তাই চলে মরণপণ যুদ্ধ। বাঘের আঁচড়ে যতীনের সমগ্র শরীর ক্ষত-বিক্ষত হয়। মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় যতীনের পা। যতীনও ভোজালি দিয়ে ক্রমাগত বাঘের মাথায় আঘাত করতে থাকে সে এবং শেষ পর্যন্ত বাঘটিই পরাজিত হয়।

প্রায় ৩০০ স্থানে জখম হয় যতীনের। মামারা তাকে সুস্থ করে তুলতে আপ্রাণ চেষ্টা চালান। তৎকালীন কলকাতার সেরা ডাক্তার সুরেশপ্রসাদ তার চিকিৎসার ভার গ্রহণ করলেও অবস্থার তেমন উন্নতি হয় না।

ধীরে ধীরে একটু উন্নতি হলেও দুটি পা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তা কেটে ফেলার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। তবে মামাদের অসামান্য সেবা-যত্নের বদৌলতে এক সময় সম্পূর্ণ সুস্থ হন যতীন। আর তার বীরত্বের স্বীকৃতি হিসেবে সুরেশপ্রসাদ তার নাম দেন ‘বাঘা’ যতীন। সূত্র: রোর মিডিয়া

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top