সকল মেনু

প্রেমের বিয়ে ২ দিনের সংসার, অতঃপর শিকলবন্দি স্কুলছাত্রী

হটনিউজ ডেস্ক:

ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালক এক প্রতিবেশীর সঙ্গে ১৩ বছর বয়সী এক স্কুলছাত্রীর প্রথমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে তারা। ছেলের পরিবার পুত্রবধূকে মেনে নিতে চাইলেও মেয়ের পরিবার এতে নারাজ। তাই মেয়ের বাবা তাকে ঘরের একটি কক্ষে খাটের সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখেন। শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার চরকুমারিয়া ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শিকলবন্দি ওই কিশোরীর একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ওই ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের লক্ষ্মী নারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা ওই কিশোরী লক্ষ্মী নারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। ২০১৯ সালে তার সঙ্গে প্রতিবেশী হাসান মালতের ছেলে আহাম্মদ আলী মালতের (২১) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ২৯ অক্টোবর তারা পালিয়ে বিয়ে করে। বিয়ের পর তারা আহাম্মদ আলীর খালার বাড়ি পূর্বডামুড্যা এলাকায় লুকিয়ে থাকে। দুইদিন পর পরিবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে তাদের উদ্ধার করা হয়।

আহাম্মদ আলী মালতের পরিবার পুত্রবধূকেমেনে নিতে চাইলেও ওই কিশোরীর পরিবার এতে রাজি হয়নি। এ ঘটনায় স্কুলছাত্রীর বাবা ৩ নভেম্বর সখিপুর থানায় আহাম্মদ আলী মালতের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরদিন পুলিশ আহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করে শরীয়তপুর আদালতে পাঠায়।

আদালতে আহাম্মদ আলী ও স্কুলছাত্রীকে হাজির করলে বিচারক আহাম্মদ আলীকে শরীয়তপুর কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। স্বামীকে কারাগারে পাঠানোর কথা শুনে স্কুলছাত্রী পাগলামি শুরু করে। মানুষ জড়ো করে ফেলে। পরে বিচারক শোভাকে সেফ কাস্টডিতে (নিরাপত্তা হেফাজত) পাঠানোর নির্দেশ দেন।

গত ২৪ নভেম্বর স্কুলছাত্রীকে আদালতের মাধ্যমে সেফ কাস্টডি থেকে বাবা-মার কাছে জামিনে আসে। পরে সে অনেকটা মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। তাই তার বাবা মাঝে মধ্যে ঘরের একটি কক্ষে খাটের সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখেন।

এ বিষয়ে স্কুলছাত্রীর বাবা বলেন, আমি আমার মেয়েকে সবসময় শিকল দিয়ে বাঁধি না। মেয়েকে দিনরাত দেখে রাখি। তা নাহলে আহাম্মদ আলী মালতের বাড়িতে চলে যায়। শুধু পাগলামি করে। তাই একদিন দুষ্টুমি করে হাতে শিকল দিয়ে বাঁধি। কারা যেন সেই শিকল দিয়ে বাঁধা ভিডিও করে ফেসবুকে ছেড়ে দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আহাম্মদ আলী মাদক বিক্রি করে, মাদক খায়। তাই ওর কাছে মেয়ে দিতে চাচ্ছি না।

আহাম্মদ আলী মালতের মা সুরত নেছা বলেন, দুজনে সম্পর্ক করে পালিয়ে বিয়ে করেছে। এ ব্যাপারে আমরা জানতাম না। উদ্ধার হওয়ার পরে জেনেছি। ছেলে যেহেতু ভুল করে ফেলেছে। আমার এই বিয়ে মেনে নিতে চাই। কিন্তু মেয়ের পরিবার রাজি না। তাদের কারণে আমার ছেলে জেল খাটছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আকতার সরদার বলেন, আহাম্মদ আলী এবং ওই স্কুলছাত্রী বিয়ে করে পালিয়ে গেলে আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তাদের উদ্ধার করি। মেয়ে ছেলে একসঙ্গে সংসার করতে চাইলেও মেয়ের পরিবার রাজি নয়। আর মেয়ের বয়স অল্প হওয়ায় আমরাও কিছু করতে পারছি না।

সখিপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হালিম জানান, স্কুলছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে আহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top