সকল মেনু

হত্যা করার পর পরিবারের সঙ্গে লাশ খোঁজাখুঁজি করে খুনিরাই

হটনিউজ ডেস্ক:

ঢাকার ধামরাইয়ের বাইশাকান্দা ইউনিয়নের কাছৈর গ্রামের কৃষক শুকুর আলী (৫২) খুন হন গত শনিবার রাতে। আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে কৃষক শুকুর আলীর খুনের ঘটনা উদঘাটিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জাকারিয়া হোসেন হোসেন ওরফে জাকির ও ফিরোজ হোসেন নামের দুইজন আসামী স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই আবুল খায়ের মিয়া আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে জানান, জবানবন্দিতে বলেছে কৃষক শুকুর আলী আসামি জাকারিয়া হোসেন জাকিরদের বাড়ি সংলগ্ন দক্ষিনপাশে ১৬ শতাংশ জমি ক্রয় করা নিয়ে বিরোধ ও জাকিরদের বাড়ি সংলগ্ন পুকুরের পাশ দিয়ে জাল পেতে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। শুধু জাকিরদের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিরোধ নয় শুকুর আলীর স্ত্রী রেবেকার কাছ থেকে একই এলাকার হারুন মিয়ার ছেলে শাহিন (চিটার শাহিন হিসেবে পরিচিত) ৩৫ হাজার টাকা সুদে নিয়েছিল। এ টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে শুকুর আলীর স্ত্রী রেবেকাকে মারধর করেছিল শাহিন। এতে গ্রাম্য সালিশে শাহিনকে ক্ষমা চাওয়া এবং সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করতে হয় শাহিনকে। এসব ঘটনায় তিক্ততা বেড়ে গিয়েছিল পরিবারটির উপর। এ নিয়ে শুকুর আলীকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে জাকির ও চিটার শাহিন।

হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহন করে একই গ্রামের চকপাড়ার মীর হোসেনের ছেলে ফিরোজ, আফজাল হোসেনের ছেলে শাহিনুর ও তমেজ উদ্দিনের ছেলে মনোয়ার হোসেন মনু। এরমধ্যে জাকির ও শাহিন শুকুর আলীর মাথায় ও মুখে কুপিয়ে হত্যা করে। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত হলে শকুর আলীর মৃতদেহ প্রায় তিনশত গজ দূরে পানিতে ভাসিয়ে নিয়ে যায় শাহিনুর ও চিটার শাহিন। রাস্তার দুই পাশে পাহারা দেয় ফিরোজ ও মনোয়ার।

শুকুর আলীকে হত্যার পর মনোয়ার তার মোবাইল ফোনে শুকুর আলীর ছেলে মোকলেছুর রহমানকে জানায়, ‘তোর বাবার গামছা ও জুতা পড়ে আছে’। খবর পেয়ে বাড়ির উত্তর পাশে প্রায় তিনশত গজ দুরে তার বাবার গামছা ও জুতা দেখতে পায় মোকলেছ। এরপর মোকলেছের সঙ্গে জাকির, ফিরোজ,মনোয়ার ও শাহিনুর মিলে খোঁজতে থাকে শুকুর আলীকে। ওই রাতে তাকে আর পাওয়া যায়নি। রবিবার সকালে শুকুর আলীর লাশ বাড়ির উত্তর পাশে বিলের মধ্যে পানিতে ভাসমান অবস্থায় দেখতে পায় স্থানীয়রা।

এ ঘটনায় নিহত শুকুর আলীর ছেলে মোকলেছুর রহমান বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করে গত রবিবার। রবিবার সকালে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ঘটনাস্থল থেকেই জাকিরকে আটক করে ধামরাই থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা।

ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, আসামি জাকারিয়া হোসেন ওরফে জাকির ১৬৪ ধারায় ঢাকার মূখ্য বিচারিক হাকিম রাজিব হাসান আদালতে ও ফিরোজ হোসেন মূখ্য বিচারিক হাকিম আশরাফুল ইসলামের কাছে শুকুর হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। এছাড়া হত্যাকাণ্ডে জড়িত শাহিনুর ও মনোয়ার হোসেন মুনকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top