সকল মেনু

চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যু, টাকা দিয়ে রফার চেষ্টা

হটনিউজ ডেস্ক:

মাদারীপুর শহরের ডিজিটাল অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার রাতে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্যে শহরের প্রভাবশালী একটি মহল ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বিষয়টি দফারফার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি নিহত প্রসূতির স্বামীর।

এ ঘটনায় প্রসূতির স্বজনরা হাসপাতালের সামনে দোষীদের বিচারের দাবিতে অবস্থান নিয়েছেন। সেখানে মাদারীপুর সদর থানা পুলিশ মোতায়েন আছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরের ডাসার থানার আটিপাড়া গ্রামের রুনা আক্তারের (২২) প্রসব বেদনা উঠলে শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে ডিজিটাল অ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. ফায়সাল কাবীর ও ডা. ফারজানা আফিয়া মেঘলা সিজার (অপারেশ) করালে ওই প্রসূতি একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন।

এসময় প্রসূতির রক্ত প্রয়োজন বলে তার স্বামী রমজান মালকে অন্যত্র পাঠিয়ে দেয়া হয়। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রসূতির অবস্থা বেগতিক বলে নিজেরাই একটি অ্যাম্বুলেন্সে তুলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।

পরে ফরিদপুর মেডিকেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দেড় থেকে ২ ঘণ্টা আগে প্রসূতি মারা গেছেন বলে জানান। পরে স্বজনরা রুনা আক্তারের মরদেহ নিয়ে পুনরায় ডিজিটাল অ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে আসে।

তখন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান মনির ৫০ হাজার টাকা দিয়ে মৃতদেহটি দাফন করতে বলেন। কিন্তু বিষয়টি স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা পুলিশকে জানালে সন্ধ্যার দিকে সদর থানা পুলিশ এসে বিষয়টি তদন্ত শুরু করে।

নিহতের স্বামী রমজান মাল বলেন, আমাকে রক্ত আনার কথা বলে হাসপাতালের লোকজন নিজেরাই আমার স্ত্রীকে ফরিদপুর পাঠিয়ে দেয়। তারা কোনো কাগজপত্র দেয়নি। ডিজিটাল অ্যাপোলো হাসপাতালে সিজার করার সময়েই আমার স্ত্রীকে ওরা মেরে ফেলেছে। তারা আমাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বিষয়টি কাউকে না জানানো জন্যে অনুরোধ করে। আমি টাকা চাই না, দোষীদের বিচার চাই।

তিনি আরও জানান, সিজার করার সময় অ্যানেস্থেশিয়া ডাক্তার ছিল না। ফলে আমার স্ত্রীকে ভুল চিকিৎসা করে মেরে ফেলেছে।

তবে ডিজিটাল অ্যাপোলো হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান মনির ভুল চিকিৎসার কথা অস্বীকার করে জানান, রোগীর প্রেশার বেশি থাকায় চিকিৎসক তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে। সেখানে গিয়ে রোগী মারা গেছে। আমাদের কোনো অবহেলা ছিল না।

আর টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপার বিষয়ে তিনি বলেন, রোগী দারিদ্র্য হওয়ায় দাফন-কাফনের জন্যে ৫০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছিল।

এ ব্যাপারে মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নান মিয়া জানান, নিহতের পরিবার থেকে লিখিত অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সিভিল সার্জন ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করে, তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top