সকল মেনু

রাজধানীতে পুলিশ হেফাজতে যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ

হটনিউজ ডেস্ক:

রাজধানীর পল্টন থানা পুলিশের হেফাজতে মাসুদ রানা (৩০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ সম্পর্কে পুলিশের ভাষ্য হল- মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর গুলিস্তান এলাকা থেকে ইয়াবাসহ আটকের পর মাসুদ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। প্রথমে তাকে পুলিশ হাসপাতাল এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। আর সেখানে তার মৃত্যু হয়। তবে স্বজনদের অভিযোগ, নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর থেকে ধরে এনে নির্যাতন করে মাসুদকে হত্যা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনারসহ বিভাগের সংশ্লিষ্ট পাঁচ কর্মকর্তাকে ফোন করা হলেও তারা কেউ কল রিসিভ করেননি। পরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপকমিশনার (মিডিয়া) মো. ওয়ালিদ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গুলিস্তান এলাকা থেকে ৩০০ পিস ইয়াবাসহ তাকে আটক করা হয়েছিল। সে মাদক ব্যবসা করত, পাশাপাশি সেবনও করত। থানায় আনলে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। প্রথমে পুলিশ হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে। ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মাসুদের শ্বশুর আবদুল মান্নান বলেন, দুপুরের খাবারের পর পুলিশের এক লোক এসে মোমিন নামের একজনের বাড়ি চিনিয়ে দিতে মাসুদকে নিয়ে যায়। পরে শুনি তাকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। ঘটনা নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানাধীন হলেও পরে জানতে পারি মাসুদকে পল্টন থানায় আটক রাখা হয়েছে।

আবদুল মান্নান আরও জানান, রাত ১১টার দিকে মেয়ে ফোন করে জামাইকে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানায়। রাত ১টা ২৩ মিনিটে পল্টন থানা থেকে জামাইয়ের ছোট ভাই ফোন করে জানায় জামাই মারা গেছেন। খবর শুনে আমরা ঢাকায় যাই। সেখানে পুলিশ আমাদের জানায়, জামাই দেয়ালের সঙ্গে মাথা ঠুকিয়ে মারা গেছে। তাকে গুলিস্তান থেকে আটক করা হয়েছে। অথচ জামাইকে আটক করা হয়েছিল কাঁচপুর থেকে। তিনি বলেন, পুলিশের টর্চারেই মাসুদ মারা গেছে। পুলিশ যা বলছে সেভাবে একটা মানুষ মরতে পারে না। মাসুদ যাত্রাবাড়ী এলাকার রোলিং মিলে লোহার প্লেট কাটার কাজ করত বলে জানান তিনি। মাসুদের বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর থানার চর বাকুটিয়া গ্রামে। দুই কন্যা সন্তানসহ পরিবার নিয়ে কাঁচপুরে থাকতেন তিনি। তার স্ত্রীর নাম রেহানা আকতার। স্বজনদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপি’র উপকমিশনার মো. ওয়ালিদ হোসেন বলেন, এটি ভুল তথ্য।

বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি আসকের : পুলিশ হেফাজতে মাসুদ রানার মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। সংস্থাটি এক বিবৃতিতে বলেছে, যখন কোনো ব্যক্তি আটক বা গ্রেফতার হয়, তখন সেই ব্যক্তি রাষ্ট্রের হেফাজতে চলে যায়। আটক বা গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির সব ধরনের নিরাপত্তার দায় তখন রাষ্ট্রের ওপর বর্তায়। আমরা প্রায়ই লক্ষ করছি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে নির্যাতন হচ্ছে। এমনকি মৃত্যুর মতো ঘটনা ঘটছে, যা অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রত্যাশিত। গতানুগতিক তদন্তের নামে নির্যাতন বা মৃত্যুর কারণগুলো অপ্রকাশিত থেকে যাচ্ছে। আসক মনে করে, এই নির্যাতন ও মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করা আবশ্যক। এ ধরনের মৃত্যুর ঘটনায় অবশ্যই বিচার বিভাগীয় তদন্ত হওয়া দরকার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top