সকল মেনু

যে কারণে মিন্নির মৃত্যুদণ্ড

হটনিউজ ডেস্ক:

বরগুনার বহুল আলোচিত শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মিন্নিসহ ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ড ও প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে। এছাড়া চারজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

বুধবার দুপুর পৌনে ২টায় এ মামলার রায় ঘোষণা করেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান।

রায়ে বিচারক উল্লেখ করেন, গত বছরের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজ গেটের সড়কে ক্যালিক্স একাডেমির সামনে নয়ন বন্ড রিফাত ফরাজীরা যখন শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফকে ধারালো রামদা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে তখন মিন্নি নয়ন বন্ডের শার্ট ধরে টেনে রাখে।

এছাড়া ঘটনার আগে নিহত রিফাত শরীফ মিন্নিকে আনতে বরগুনা কলেজ গেটে যায়। বারবার মিন্নিকে রিফাত শরীফ তার মোটরসাইকেলে উঠাবার চেষ্টা করে কিন্তু সময়ক্ষেপণ করার জন্য কৌশল করে মিন্নি নিহত রিফাত শরীফের মোটরসাইকেলে ঘটনার আগে উঠেনি।

রায়ে বিচারক উল্লেখ করেন, রিফাত হত্যাকাণ্ডটি জঘন্য ও ন্যক্কারজনক। এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায় আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি যুক্ত ছিলেন। কারণ ঘটনার সময় মিন্নি তার স্বামীকে রক্ষা করতে গেছেন- এটা সিমপ্যাথি আদায়ের কৌশল ছিল বলে প্রতীয়মান। মিন্নি তার স্বামী রিফাতকে কোপানোর সময় রিফাতকে রক্ষার চেয়ে নয়ন বন্ডকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেছিলেন; যা ভিডিওতে স্পষ্ট রয়েছে।

এছাড়া হত্যার আগে মিন্নি মামলার মূল আসামি নয়ন বন্ডের সঙ্গে এক মাসে ৪৪ বার এবং নয়ন বন্ড মিন্নির সঙ্গে ১৬ বার ফোনে কথা বলেছেন। এছাড়া তাদের মধ্যে অসংখ্যবার মেসেজ দেয়া-নেয়া হয়েছে।

বুধবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে এ মামলার রায় ঘোষণার পর মিন্নির জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। এরপর বিকাল ৩টার দিকে তাকে বরগুনা কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

রায় ঘোষণার আগে সকাল ৯টার দিকে মিন্নি তার বাবা মোজাম্মেল হক কিশোরের মোটরসাইকেলে করে আদালতে উপস্থিত হন। মামলার আসামিদের মধ্যে শুধু তিনিই জামিনে ছিলেন।

গত বছর ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনের সড়কে নয়ন বন্ড ও তার বন্ধুরা রিফাত শরীফকে ধারালো চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ২৭ জুন বরগুনা থানায় নয়ন বন্ডকে প্রধান আসামি করে ১২ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন।

২ জুলাই নয়ন বন্ড নিহত হন। পরে ওই বাদী ৬ জুলাই মিন্নিকে আসামি করার জন্য বরগুনা থানায় একটি আবেদন করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো. হুমায়ূন কবির ১৬ জুলাই আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে গ্রেফতার করেন।

১৯ জুলাই মিন্নি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। মিন্নিকে বরগুনা জেলা জজ ৩০ জুলাই জামিন নামঞ্জুর করলে সেই আদেশের বিরুদ্ধে মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হক কিশোর হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন।

আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে হাইকোর্ট ২৯ আগস্ট জামিন দেন। রাষ্ট্রপক্ষ মিন্নির জামিন বাতিল চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ আদালতে আবেদন করেন। চেম্বার জজ ২ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। সেই অবধি মিন্নি জামিনে ছিলেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top