সকল মেনু

তুলা উৎপাদনে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার : কৃষিমন্ত্রী

হটনিউজ ডেস্ক:

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, দেশে প্রতিবছর ৮৮ লাখ বেল তুলার প্রয়োজন। এর বিপরীতে উৎপাদন হয় মাত্র দুই লাখ বেল। অবশিষ্ট ৮৬ লাখ বেল তুলাই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এই বিপুল তুলা আমদানিতে বছরে ২৪ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়।

রাজধানীর খামারবাড়ি সড়কে তুলা উন্নয়ন বোর্ড ভবন ‘তুলা ভবন’-এর ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে গতকাল শনিবার এ কথা জানান কৃষিমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান বিশেষ অতিথি ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক মো. ফরিদ উদ্দিন।

এ সময় কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘সারা বিশ্বে তুলা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল। আমাদেরও প্রতিবছর প্রায় ৮০ থেকে ৮৬ লাখ বেল তুলা আমদানি করতে হয়। সেখানে দেশে তুলার উৎপাদন মাত্র দুই লাখ বেলের মতো। আগে এক লাখ বেলের নিচে উৎপাদন হতো। সম্প্রতি তুলা উন্নয়ন বোর্ডের হাইব্রিড উন্নত জাতের তুলা উদ্ভাবন ও চাষের ফলে তুলা উৎপাদন দিন দিন বাড়ছে।’

কৃষিমন্ত্রী আরো বলেন, ‘এই বিপুল তুলা আমদানিতে বছরে ২৪ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়। যদিও আমদানি করা তুলা ভ্যালু অ্যাডের মাধ্যমে সুতা ও কাপড়ের আকারে বিদেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। এসব তুলা এ দেশে উৎপাদন করতে পারলে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা সম্ভব। এ কারণেই সরকার তুলা উৎপাদনে বেশ গুরুত্ব দিচ্ছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘অন্যান্য ফসলের মতো তুলা উৎপাদনের ওপর সরকার অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে। তুলা উন্নয়ন বোর্ড হওয়া মানে তুলা উৎপাদনে গুরুত্বারোপ করা। সরকার সব দিক দিয়ে তুলা উন্নয়ন বোর্ডকে শক্তিশালী করছে। এ ছাড়া ভৌত অবকাঠামো, যন্ত্রপাতি, ল্যাবরেটির স্থাপন এবং দক্ষ ও মেধাবী জনবল নিয়োগ করছে, যাতে করে বাংলাদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপযোগী নতুন জাত উদ্ভাবন করে তুলা উৎপাদন ত্বরান্বিত ও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা যায়।’

দেশে প্রায় ৭৪ ভাগ জমিতে ধানের আবাদ হয় উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘দেশের কৃষি উৎপাদন ও ফসল ব্যবস্থা মূলত ধানকেন্দ্রিক। ইদানীং চালের কনজাম্পশন কমে যাচ্ছে। এটি অব্যাহত থাকলে অনেক জমি খালি হবে। সেখানে শাকসবজি, ফলমূল ও তুলার মতো অর্থকরী ফসলের উৎপাদন করা যাবে। সে লক্ষ্যেই তুলা উন্নয়ন বোর্ডকে শক্তিশালী করা হচ্ছে।’

কৃষিমন্ত্রী আরো বলেন, ‘শুধু গার্মেন্টস নির্ভরতা নয়, বরং রপ্তানিকে বহুমুখীকরণ করতে হবে। কৃষি মানুষের আহার ও পুষ্টি জাতীয় খাবারের জোগানের পাশাপাশি শিল্পের কাঁচামালেরও জোগান দেয়। এই কাঁচামালের জোগানকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে বর্তমান সরকার কাজ করছে। আশা করি, আগামী দিনে কৃষি বহুমুখীকরণ হবে, রপ্তানি বহুমুখীকরণ হবে এবং এর মাধ্যমে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।’

দেশে তুলা চাষ সম্প্রসারণ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৭২ সালের ১৪ ডিসেম্বর তুলা উন্নয়ন বোর্ড গঠিত হয়। এটি দেশে তুলা গবেষণা, তুলা চাষ সম্প্রসারণ, বীজ উৎপাদন ও বিতরণ প্রভৃতি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে। চলতি ২০১৯-২০ মৌসুমে ৪৪ হাজার হেক্টর জমিতে তুলা চাষ হয়েছে। খাদ্য উৎপাদনে কোনো বিঘ্ন না ঘটিয়ে তুলা চাষ সম্প্রসারণের জন্য তুলা উন্নয়ন বোর্ড অপ্রচলিত অঞ্চল যেমন তামাক ও কৃষি বনায়ন জমিতে, লবণাক্ত, চর ও পাহাড়ি এলাকায় তুলা চাষ সম্প্রসারণ করছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top