সকল মেনু

মনোহরগঞ্জে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় মামলা

হটনিউজ ডেস্ক:

কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে গৃহবধূ লিপি আক্তারের (২৫) রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় আদালতে মামলা করা হয়েছে। স্বামীর পরিবার প্রথমে স্ট্রোক ও পরে আত্মহত্যা বললেও ওই গৃহবধূর ভাই যৌতুকের দাবিতে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ এনে এই মামলা করেন।

কুমিল্লার বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সং/০৩) এর ১১ (ক)/৩০তৎসহ ৩২ ধারায় দায়ের মামলায় গৃহবধূর স্বামী দেলোয়ার হোসেন (৩০), শ্বশুর খুরশিদ আলমসহ (৫০) নয়জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি নাঙ্গলকোট উপজেলার হেসাখাল গ্রামের ইদ্রিস মিয়ার মেয়ের সঙ্গে মনোহরগঞ্জ উপজেলার কৈয়ারপাড় গ্রামের খুরশিদ আলমের ছেলে দেলোয়ার হোসেনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর লিপি আক্তার দুই পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। বিবাহের পর স্বামী দেলোয়ার হোসেন ও শ্বশুর খুরশিদ আলমসহ তাদের পরিবারের লোকজন পারস্পরিক যোগসাজশে লিপি আক্তারের পিতা ও ভাইয়ের নিকট তিন লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিলেন। যৌতুকের জন্য বিভিন্ন সময় লিপির ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। কিন্তু লিপির পরিবার যৌতুক দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গত ৩ আগস্ট (সোমবার) রাত ২টার দিকে স্বামী দেলোয়ার হোসেন, শ্বশুর খুরশিদ আলমসহ তাদের পরিবারের লোকজন লিপি আক্তারকে ঘুমন্ত অবস্থায় শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। তারা হত্যার ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে রশি দিয়ে লিপির মরদেহ ঘরের সিলিংয়ের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে।

পরে দেলোয়ার ও তাদের পরিবারের লোকজন লিপির পিতা ও তার ভাইকে মোবাইলে লিপি স্ট্রোক করার কথা জানায়। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক তার পিতা ও ভাইসহ অন্যরা ঘটনাস্থল ছুটে গিয়ে স্বামীর বাড়ির উঠানে তার মরদেহ দেখতে পায়। তখন তারা কাপড় সরিয়ে তার গলায় আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান। লিপির স্বামী ও শ্বশুর লিপি আত্মহত্যা করেছে বলে তাদের জানায়। কিন্তু তারা লিপির গলায় আঘাতের কারণ জানতে চাইলে তার স্বামী ও শ্বশুরসহ অন্য আসামিরা তাদের মারধর করে।
লিপির ভাই আমান উল্লাহ বিষয়টি স্থানীয় উত্তরহাওলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল হান্নান হিরণকে জানালে তিনি পুলিশকে অবহিত করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লিপির মরদেহ উদ্ধার করে।

মামলার বাদী আমান উল্লাহ বলেন, আমার বোন লিপিকে যৌতুকের জন্য তার স্বামী দেলোয়ার হোসেন, শ্বশুর খুরশিদ আলমসহ পরিবারের অন্যরা শ্বাসরোধ করে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমরা বোনকে আর ফিরে পাব না। কিন্তু বোনের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। দ্রুত তাদের গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি জানান তিনি।

এ বিষয়ে চেষ্টা করেও স্বামীর পরিবারের কারও বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top