সকল মেনু

সুদ কারবারিদের প্ররোচনায় শিক্ষিকার আত্মহত্যা

হটনিউজ ডেস্ক:

চিরচেনা হাসিমুখ চিরকালের জন্য নীরব হয়ে গেছে! তিনি ছিলেন জনপ্রিয় সরকারী শিক্ষক। বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার ৯৭ নম্বর দক্ষিণ শিবপুর মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হাসিকনা বিশ্বাসের (৩৩) রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। অবৈধ প্রভাবশালী সুদ কারবারিদের অত্যাচারে তার মৃত্যু হয়েছে বলে নিহতের স্বামী দাবি করেছেন। তবে এটা হত্যা না-কি আত্মহত্যা? তা নিয়ে ফেসবুকসহ এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা চলছে। বিষয়টি নিশ্চিত হতে পুলিশ সোমবার (২০ জুলাই) সন্ধ্যায় তাঁর বাড়ি হতে মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। কিছুদিন ধরে এলাকার অবৈধ সুদ কারবারিদের দেনার চাপে ছিলেন হাসিকনা ও তার পরিবার। অবৈধ সুদ কারবারিদের নিকট প্রায়শ অপমান সহ্য করতে হতো এই পরিবারকে।

হাসিকনার স্বামী যুগল কান্তি ডাকুয়া চিতলমারী আজিজুল হক কিন্ডারগার্টেনের প্রধান শিক্ষক। তিনি অভিযোগ করেন, সুদখোর কারবারিরা তার স্ত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করেছে। কয়েক বছর আগে তারা খড়মখালী গ্রামের গুরুদাস হালদারের জায়গা কিনে বসতবাড়ি গড়ে তোলেন। সেখানেই থাকেন। এই জায়গা কেনার সময় তারা এলাকার ওই কারবারিদের কাছ থেকে সুদে টাকা নেন। এরপর সময়মতো তাদের সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় নানাভাবে প্রায়শ অপদস্থ হতে হয়।

সোমবার দুপুরে যুগল কান্তি ডাকুয়া বাড়িতে ঢোকার মুখে কয়েকজন প্রভাবশালী সুদখোরকে তার বাড়ি হতে বেরিয়ে যেতে দেখেন। তাদের টাকা পরিশোধের বিষয়ে অনুনয়-বিনয়ের সাথে কড়জোড়ে সময় নেন। তারা চলে যায়। ঘরে ঢুকে পেছনের বারান্দায় দেখেন, ঘরের আড়ার সাথে তার স্ত্রী হাসিকনা গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ঝুলছে। এরপর তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন।

যুগল কান্তি দাবি করেন ‘আমার স্ত্রীকে ওরা আত্মহত্যায় বাধ্য করেছে’।

সোমবার রাতে চিতলমারী থানার এসআই বলেন, নিহতের স্বামী কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। হাসিকনা বিশ্বাসের মৃতদেহ সুরতহাল করে বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিভাবে তার মৃত্যু হয়েছে তা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরে বিস্তারিত জানা যাবে।

এলাকাবাসী জানান, হাসিকনা বিশ্বাস চিতলমারী উপজেলার চিলুনী গ্রামের খগেন বিশ্বাসের মেয়ে ছিলেন। প্রায় ১৭ বছর আগে বাগেরহাটের কাঠিগোমতি গ্রামের জিতেন ডাকুয়ার ছেলে যুগল কান্তি ডাকুয়ার সাথে তার বিয়ে হয়। চাকরির কারণে তারা চিতলমারীর খড়মখালী গ্রামে জমি কিনে নতুন বসতি গড়ে তোলেন। তাদের দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক পুত্রসন্তান রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top