সকল মেনু

বাড়ছে বৈদেশিক ঋণ, সঙ্কটে দেশীয় ব্যাংকিং খাত

dollar20130822030424হটনিউজ২৪বিডি.কম,ঢাকা, ২২ আগস্ট: বেসরকারি খাতে ক্রমেই বাড়ছে বৈদেশিক ঋণ। আর দেশিয় বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে এ ধরনের ঋণ নেয়ার আগ্রহও বাড়ছে। এর ফলে দেশীয় ব্যাংকিংখাত চরম অস্থিরতায় ভুগছে।
ব্যাংকগুলোতে মোটা অঙ্কের অলস টাকা পড়ে আছে। অর্থাৎ বিনিয়োগের জায়গা খুঁজে পাচ্ছে না দেশীয় ব্যাংকগুলো।
বিনিয়োগ বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, দেশের বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বৈদেশিক ঋণের আবেদন বাড়ছে। ২০১২ সালে ১ হাজার ৪৯০ মিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণের অনুমোদন পেয়েছে বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
২০১১ সালে এর পরিমাণ ছিল ৮১৯ মিলিয়ন ডলার। এ হিসেবে ২০১২ সালে আগের বছরের তুলনায় দেশি করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর বিদেশি ঋণের হার ৮১ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে।
অথচ দেশে মোট বিনিয়োগের সিংহভাগ আসে ব্যাংকিং খাত থেকে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে গ্রাহকের ঋণের চাহিদা না থাকায় ব্যাংকগুলো বিতরণ করতে পারছে না। ফলে ব্যাংকগুলোতে বর্তমানে অলস টাকা পড়ে আছে।
এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের চলতি হিসেবে ২৫২ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার বা ২০ হাজার ২০০ কোটি টাকা পড়ে আছে।
এদিকে চলতি বছরের জানুয়ারিতে বেসরকারি খাতের ১৫ প্রতিষ্ঠানের ১৫ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলারের বৈদেশিক ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করেছে এ-সংক্রান্ত সরকারি বাছাই কমিটি। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ এক হাজার ১৭০ কোটি টাকা।
সবশেষ জুলাইয়ে বেসরকারি খাতের ৭টি প্রকল্পে ৬ কোটি মার্কিন ডলারের বৈদেশিক ঋণ নেয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে ঋণ-সংক্রান্ত সরকারি বাছাই কমিটি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, অনুমোদিত প্রস্তাবগুলো হচ্ছে- একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের তিন কোটি ২০ লাখ ডলার, রিনেটা লিমিটেডের এক কোটি ডলার, আসাদ কম্পোজিট লিমিটেডের ৮০ লাখ ডলার, কাটিং ইডজ ইন্ড্রাস্ট্রিজের ৪১ লাখ ডলার, এমবিএম গার্মেন্টস লিমিটেডের ১২ লাখ ডলার, কসমোপলিটন ইন্ড্রাস্ট্রি লিমিটেডের ৩০ লাখ ডলার ও ড্যান ফুড লিমিটেডের ১৪ লাখ ডলার।
ছয় মাস মেয়াদি লন্ডন আন্তঃব্যাংক অফার রেটের সঙ্গে ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ যোগ করে যে হার দাঁড়ায়, তা হবে এসব ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার। বেসরকারি খাতের বেশ কিছু বৈদেশিক ঋণপ্রস্তাব অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানা যায়।
বৈদেশিক ঋণ-সংক্রান্ত সরকারি বাছাই কমিটি মনে করে, এ ধরনের বৈদেশিক অর্থায়ন মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করবে। একই সঙ্গে দেশের বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এদিকে গত অর্থবছরের মে পর্যন্ত (২০১২-১৩) বেসরকরি খাতে ঋণ বেড়েছে মাত্র ১১ শতাংশ। বর্তমান সরকারের আমলে গত চার অর্থবছরের মধ্যে এই প্রবৃদ্ধি সর্বনিম্ন।
আওয়ামী লীগ সরকার যখন ক্ষমতায় আসে তখন বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা চলছিল। সেই সময়ও ( ২০০৯-১০ অর্থবছর) বেসরকারি খাতের ঋণে ২৪ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি ছিল।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর হটনিউজকে বলেন,‘ব্যাংকগুলো যদি তাদের মূলধন সঠিকভাবে বিনিয়োগ করতে না পারে তাহলে তো মুনাফা কমবেই।’
সুদের হার, অবকাঠামোগত সমস্যা বিভিন্ন কারণে তাদের বিনিয়োগ কম হচ্ছে। বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ যদি বেশি হয় তাহলে দেশিয় ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার প্রবণতা কমে যেতে পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top