সকল মেনু

টাঙ্গাইলে একই পরিবারের চারজন খুনের ঘটনায় মামলা

হটনিউজ ডেস্ক:

টাঙ্গাইলের মধুপুরে একই পরিবারের চারজনেক হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার (১৭ জুলাই) রাত ১০টার দিকে নিহত গণি মিয়ার বড় মেয়ে সোনিয়া বেগম বাদী হয়ে এ মামলা করেন।

মধুপুর থানার ওসি তারিক কামাল বলেন, মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্বর দিয়ে দেখা হচ্ছে। বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত নিয়ে আমরা কাজ করছি। আশা করছি দ্রুতই রহস্য উন্মোচন হবে।

তিনি আরও জানান, শনিবার মরদেহগুলো টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন জনকে থানায় আনা হয়েছে। তারা নিহতের আত্মীয়।

এদিকে একই পরিবারের চার সদস্যের হত্যাকাণ্ডটি হত্যার উদ্দেশ্যেই পরিকল্পিতভাবে সংঘটিত হয়েছে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশের একাধিক সংস্থা।

স্থানীয়রা জানান, হত্যাকাণ্ডের শিকার পুরাতন ভ্যান-রিকশার কেনাবেচা ও সুদের কারবারি গনি মিয়া গত এক বছর আগে দশ লাখ টাকায় জমি কিনে তাতে পাকা দালান তৈরি কর বসবাস শুরু করেন। বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) থেকে গনি মিয়ার বড় মেয়ে পরিবারের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। পরে বিষয়টি তাদের স্বজনদের জানালে শুক্রবার সকালে (১৭ জুলাই) বাড়ির মূল ফটক তালাবন্ধ অবস্থা ও বাড়ির ভেতর থেকে দুর্গন্ধ বের হলে, তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করলে চারজনের গলাকাটা ও ক্ষতবিক্ষত মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর একাধিক সংস্থা।

স্থানীয়রা আরও জানায়, বছর তিনেক আগেও গনি মিয়াকে তারা ভ্যানগাড়ি চালাতে দেখেছেন। হঠাৎ অঢেল টাকার মালিক বনে যাওয়া গনি মিয়ার সঙ্গে স্থানীয়দের ছিল না তেমন সখ্যতা। তাই তারা ধারণা করছেন এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

এদিকে, ঘরে থেকে খোয়া যায়নি কোন মালামাল। তছনছ করা হয়নি কোনও আসবাবপত্র। হত্যার নৃশংসতা থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর একাধিক সংস্থার ধারণা পূর্ব কোন আক্রোশ থেকেই এই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন সিআইডির পরিদর্শক ইউসুফ আলী।

মধুপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. কামরান হোসেন জানান, কয়েকটি সন্দেহকে সামনে রেখে কাজ করে যাচ্ছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সংস্থা। চার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন স্বজনকে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়েছে। মামলা রুজু হলে যদি তারা জড়িত হোন তবে আটক বা গ্রেপ্তার দেখানো হবে। আর জড়িত না হলে তারা তাদের নিজ নিজ বাসায় চলে যাবেন।

এদিকে দ্রুতই রহস্য উৎঘাটন ও জড়িতদের আইনের আওতায় আনার আশাবাদ ব্যক্ত করে টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, তিনটি রুমে আমরা চারটা মরদেহ পেয়েছি। আরেকটা রুমে একটা কুড়াল পেয়েছি। মৃতদেহে কুড়ালের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। কেউ জানতো না এখানে এরকম ঘটনা ঘটেছে।

অন্যদিকে ঘটনাস্থলের আলামত সংগ্রহকারী একাধিক আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যের ধারণা, হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা পূর্ব পরিচিত। তারা মূল গেট বা দরজা ভেঙে প্রবেশ করেনি। তারা সেখানে হত্যার আগে থেকে ছিল, ধস্তাধস্তিও হয়েছে। বুধবার রাতের কোনও এক সময় আলাদা আলাদা তিনটি কক্ষে হাত-পা বেঁধে গণি মিয়া (৪৫), তার স্ত্রী তাজিরন বেগম বুচি (৩৫), ছেলে তাইজুল (১৬) ও আট বছরের সাদিয়াকে হত্যা করে মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়া হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top