সকল মেনু

দরজা ভেঙে স্বামীর গলায় অস্ত্র ঠেকিয়ে গৃহবধুকে পালাক্রমে ধর্ষণ!

হটনিউজ ডেস্ক:

চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীবেষ্টিত দুর্গম একটি চরে এক গৃহবধু সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এই ঘটনার পর দুইদিন ধরে অবরুদ্ধ ছিলেন ধর্ষিতার পরিবার। পরে তারা চর থেকে কৌশলে পালিয়ে আসেন জেলা শহরে। ধর্ষিতা গৃহবধুকে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে চলছে তার চিকিৎসা। ঘটনায় জড়িত ৬ ধর্ষকদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

চাঁদপুর সদরের পদ্মা ও মেঘনা নদীবেষ্টিত রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের দুর্গম লক্ষ্মীরচর। গত রবিবার ভোররাতে একদল দুর্বৃত্ত, জেলে পরিবারের এই গৃহবধুর ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। পরে গৃহবধুর স্বামীর গলায় ধারালো অস্ত্র ঠেকিয়ে একেক করে ৬ জনে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষকরা যাওয়ার সময় স্বামীসহ গৃহবধুকে হুমকি দিয়ে যায়। এই ঘটনা কাউকে জানালে গোটা পরিবারকে গুম করা হবে। শুধু তাই নয়, কোথাও গিয়ে যেনো চিকিৎসা না নিতে পারে। তার জন্য অবরুদ্ধ করে রাখা হয় নির্যাতিতা গৃহবধুর পরিবারটিকে।

শেষপর্যন্ত সোমবার রাতে কৌশলে চর থেকে পালিয়ে চাঁদপুর শহরে পৌঁছে পরিবারটি। এ সময় সদর মডেল থানায় গিয়ে পুরো ঘটনা খুলে বলেন তারা। পরে পুলিশের সহযোগিতায় চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে নির্যাতিতাকে ভর্তি করা হয়।

ওই গৃহবধু জানান, একই এলাকার ফিরোজ (২২), সবুজ (২৫), বাবু (২৩), মোস্তফা (২১) এবং মুখোশপড়া আরো ২ জন। এই চারযুবক তাদের ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় কিছু বুঝে উঠার আগেই যুবকদের একজন গৃহবধূর স্বামীর গলায় ধারালো অস্ত্র ঠেকিয়ে দেয়। পরে পালাক্রমে তাকে ধর্ষণ করে। যাওয়ার সময় যুবকরা হুমকি দিয়ে যায়। এমন ঘটনা কাউকে জানালে গোটা পরিবার গুম করে ফেলে দেওয়া হবে। এরপর বিনা চিকিৎসায় দুইদিন অবরুদ্ধ ছিলেন ধর্ষিতার পরিবার। পরে গ্রাম পুলিশের সহায়তায় কৌশলে পালিয়ে আসেন শহরে। এখানে সদর মডেল থানা পুলিশের সহযোগিতায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় গৃহবধুকে।

ঘটনার শিকার গৃহবধূর স্বামীও সেই বর্বরতার কথা জানান। তিনি বলেন, চরের সাতপাঁচে নেই তিনি। নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। বিনা কারণে তার স্ত্রীর ওপর এমন বর্বরতা হয়েছে। হুমকির কারণে ফের চরে যেতে ভয় পাচ্ছেন তিনি। ঘটনার বিচার দাবি করে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি জানান তিনি।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, লক্ষ্মীরচরে গতকিছু দিন ধরে গাজী ও বকাউল গোষ্ঠীর মধ্যে আধিপাত্য নিয়ে দ্বন্দ্ব এবং লুটপাট চলছে। এরমধ্যে এই দুই পক্ষের মারামারিতে গাজী বংশের লোকমান হোসেন মারা যান। আর সেই দ্বন্দ্বের প্রতিশোধ নিতে গাজী গোষ্ঠীর বখে যাওয়া যুবকরা নিরীহ এই পরিবারের গৃহবধুর ওপর এমন নির্যাতন করেছে।

তবে এই নিয়ে রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারী নিজের অসুস্থতার কথা জানিয়ে এই নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

থানায় মামলার প্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশের তৎপরতার কথা জানান চাঁদপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহেদ পারভেজ চৌধুরী। তিনি জানান, মামলাটি তদন্ত এবং আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) হারুনুর রশিদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

ধর্ষিতার চিকিৎসা ও পরীক্ষা নিরীক্ষা সম্পর্কে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. সুজাউদৌলা রুবেল জানান, নির্যাতিতার শারীরিক অবস্থা এখন বেশ স্থিতিশীল। র্ধষণের আলামত নিশ্চিত হবে তার ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top