সকল মেনু

বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে আসছে গ্রামীণ ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা, ২০ আগস্ট : গ্রামীণ ব্যাংক অর্ডিন্যান্স বাতিল করে গ্রামীণ ব্যাংক আইন-২০১৩ প্রণয়ন করেছে সরকার।Bangladesh-bank-0120130819221402নতুন এই আইনের আওতায় গ্রামীণ ব্যাংককে বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে আনা হচ্ছে। নতুন আইনের আওতায় তফসিলি ব্যাংকের মতো গ্রামীণ ব্যাংকেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা হবে।

আর এতে গ্রামীণ ব্যাংক পরিচালনায় সরকারের অংশগ্রহণ শক্তিশালী হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
সূত্র মতে, দেশে সরকারি-বেসরকারি খাতে পরিচালিত প্রায় ৬০টি ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পাশাপাশি ক্ষুদ্রঋণ বিতরণকারী সংস্থাগুলো মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি নিয়ন্ত্রণ করছে।
এই অথরিটিও বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। সংস্থাটির কার্যালয় বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অবস্থিত। তাই কোন কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অধীনে আনা সম্ভব না হলে সেক্ষেত্রে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির অধীনে গ্রামীণ ব্যাংককে আনা হবে।
নতুন গ্রামীণ ব্যাংক আইনেও এ ধরনের আভাস দেয়া হয়েছে। নতুন এ আইনে গ্রামীণ ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন ও অনুমোদিত মূলধন বৃদ্ধি করার কথা বলা হয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংকে সরকারি শেয়ার আপাতত ২৫ শতাংশ রাখা হচ্ছে।
তবে যদি প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে সরকারি শেয়ারের অংশ আরও বাড়ানো হতে পারে।
অর্থমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৩ সালে দেশে সামরিক শাসনের সময় এক ফরমান বলে গ্রামীণ ব্যাংক অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর ধরে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার দেশ পরিচালনা করছে।
দীর্ঘ এ সময়ে সামরিক শাসনের সময় জারি করা বেশির ভাগ অর্ডিন্যান্সই ইতোমধ্যে বাতিল করা হয়েছে। এর ফলে গ্রামীণ ব্যাংক অর্ডিন্যান্সটিও বাতিল হয়ে গেছে। আর এ কারণে তৈরি করা হয়েছে গ্রামীণ ব্যাংক আইন ২০১৩।
এ আইনে বিভিন্ন ধারা ও উপধারা যোগ করা হচ্ছে। এসব ধারা ও উপধারা যুক্ত করা হলে গ্রামীণ ব্যাংকে সরকারি নিয়ন্ত্রণ বা অংশগ্রহণ আরও শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।
এদিকে, নতুন আইনে গ্রামীণ ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন ও অনুমোদিত মূলধন বৃদ্ধি করার কথা বলা হয়েছে। এ আইনের আওতায় ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন বিদ্যমান ৬০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ কোটি, অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা থেকে ৩৫০ কোটি টাকা করার কথা বলা হয়েছে।
অনুমোদিত মূলধন বিভক্ত থাকবে প্রতিটি ১০০ টাকার মোট ৩ কোটি ৫০ লাখ সাধারণ শেয়ারে। এছাড়া গ্রামীণ ব্যাংকের ২৫ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা সরকারের ও ৭৫ শতাংশ মালিকানা ঋণগ্রহীতাদের হাতে থাকবে।
জানা গেছে, গ্রামীণ ব্যাংক আইন ২০১৩-এর ওপর মতামত দেয়ার জন্য কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরএ)।
আগামী ২৫ আগস্টের মধ্যে এই চার সংস্থাকে লিখিত আকারে মতামত দিতে বলা হয়েছে। এরপর মতামতসহ আইনটি নীতিগত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে।
গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালক নির্বাচন বিধিমালা চূড়ান্ত
গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালক নির্বাচন বিধিমালা তৈরি করতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে আইএফআইসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম সারওয়ারকে আহ্বায়ক এবং অতিরিক্ত এ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজাকে সদস্য করে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছিল।
এ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালক নির্বাচন বিধিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ঋণ গ্রহীতা থেকে নির্বাচিত পরিচালকরা মেয়াদ শেষে পরবর্তী বছরে নির্বাচন করতে পারবে না। আর পরিচালকদের মেয়াদ হবে ৩ বছর।
অন্যদিকে সরকার কর্তৃক মনোনীত চেয়ারম্যান পরিচালকদের মেয়াদকাল নির্ধারণের ক্ষমতা থাকছে সরকারের হাতে। এসব বিধান রেখে গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালক নির্বাচন বিধিমালার খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে।
এ বিধিমালায় নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পাচ্ছেন যেকোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান। তিনিই সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে পরিচালকমণ্ডলীর নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন। আর ৯ জন পরিচালক নির্বাচনের জন্য সারাদেশকে ৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভাগ করা হয়েছে নতুন বিধিমালায়।
খসড়া বিধিমালায় ১৭টি ধারা রয়েছে। বিধিমালার খসড়াটি সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top