এস, এন,ইউসুফ,হটনিউজ২৪.কম,ঢাকা: ঈদের ছুটি শেষে গ্রাম ছেড়ে ব্যস্ততম নগরী ঢাকার দিকে ছুটে আসা যাত্রীদের সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়েকে। অতিরিক্ত যাত্রী আর পুরোনো ইঞ্জিনের বেহালদশায় কোনো সিডিউল রক্ষা করতে পারছে না রেলওয়ে। ফলে দুর্ভোগে পড়ছেন যাত্রীরা।
ঈদের ছুটির পর মঙ্গল-বুধবার জামায়াতের টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ও বৃহস্পতিবার জাতীয় শোক দিবসের ছুটি শেষে শুক্রবার একসঙ্গে ঢাকা ফেরায় যাত্রীদের এ দীর্ঘ চাপ। শনিবার ও রোববার বেশিরভাগ মানুষের অফিস ও সন্তানদের স্কুল-কলেজ খুলছে। তাই দুর্ভোগ নিয়েই কর্মব্যস্ত নগরীতে ফিরছেন মানুষ।
যাত্রীরা জানান, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ছেড়ে আসা প্রতিটি ট্রেন রাজধানীর কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছাতে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা বেশি লাগছে। চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। একই সঙ্গে ঢাকা থেকে প্রতিটি ট্রেন ছেড়ে যেতেও ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা বেশি লাগছে। তাই ঢাকা থেকে গ্রামমুখী যাত্রীদেরও একই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সহসাই পরিত্রাণ মিলছে না এ দুর্ভোগ থেকে। আরও দুই এক দিন এ অবস্থা থাকবে বলে জানান কর্তৃপক্ষ।
ট্রেনের দীর্ঘ সিডিউল বিপর্যায়ের কারণে গভীর রাতেও উপচেপড়া ভিড় রাজধানীর কমলাপুর স্টেশনে।
শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে কমলাপুর রেলস্টেশন ঘুরে সরেজমিনে দেখা যায় ভ্রমণক্লান্ত যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন।
কমলাপুর স্টেশনে অপেক্ষারত ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী যাত্রী মো. মিন্টু হটনিউজকে জানান, রাত ১১টায় পদ্মা এক্সেপ্রেস রাজশাহীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও রাত দুইটা পর্যন্ত ওই ট্রেন স্টেশনে পৌঁছাতেই পারেনি। জানি না, কখন আসবে আর কখনই বা ছাড়বে। দীর্ঘ অপেক্ষা করতে করতে এখন অনেক ক্লান্ত লাগছে।
অন্য দিকে খুলনা থেকে ঈদের বিশেষ ট্রেন রাত ১০টায় কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছার কথা থাকলেও আসে রাত ২টা ১৫ মিনিটে। একই অবস্থা রাজশাহী এক্সেপ্রেসেরও। তাই যাত্রীদের চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ দেখা দিয়েছে। এ ক্লান্তি যেন গভীর রাতকেও হার মানিয়েছে।
খুলনা থেকে আসা যাত্রী তানিয়া সুলতানা হটনিউজকে জানান, শুক্রবার দুপুর ১২টায় গাড়িতে উঠেছি এখন রাত আড়াইটায় এসে পৌঁছালাম। ছোট্ট বাচ্চাদের নিয়ে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। মানুষের ভিড়ে গাড়িতে তীব্র গরমে বাচ্চারা ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।
সিডিউল বিপর্যয়ের কথা স্বিকার করে কমলাপুর প্ল্যাটফর্মের স্টেশনমাস্টার মো. কামরুজ্জামন হটনিজকে বলেন, শুক্রবারও এতো যাত্রী আসবেন, কল্পনাও করিনি। এ সিডিউলজট আরও দুই একদিন থাকবে।
তিনি বলেন, উত্তরবঙ্গ থেকে ছেড়ে আসা প্রতিটি ট্রেন ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা পরে আসছে। এর কারণ জানতে চাইলে বলেন, যাত্রীদের চাপ মাত্রাতিরিক্ত। প্রতিটি ট্রেন ধারণ ক্ষমতার চাইতে দুই গুণ তিন গুণ বেশি যাত্রী নিয়ে আসছে। অনেকে ট্রেনে উঠতে না পেরে আমাদের ট্রেনের জানালার গ্লাস ভেঙে ফেলেছেন। খুলনা থেকে ছেড়ে আসা দীপালী এক্সেপ্রেস সব যাত্রীদের আনতে না পারায় যাত্রীরা ক্ষোভে ওই ট্রেনের ৫৬টি গ্লাস ভেঙে ফেলেছেন।
কামরুজ্জামান বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী হওয়ায় প্রতিটি ট্রেন খুব ধীরে ধীরে চলছে। ফলে কোনো ট্রেনই সময়মতো্ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।