সকল মেনু

কারাফটকে আটকে ইয়াবার মামলায় ফাঁসাচ্ছে পুলিশ!

হটনিউজ ডেস্ক:

লক্ষ্মীপুরে আলমগীর হোসেন (৪৩) নামে এক আসামিকে কারা ফটক থেকে আটক করে ইয়াবার মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। তিন মাসের মধ্যে দুবার একই ঘটনা ঘটার পর এ নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে ভুক্তভোগী আসামির পরিবারের সদস্যরা।

আসামির স্বজন ও আইনজীবী বলছেন, জামিন পেয়ে কারাগার থেকে বের হওয়ার সময়ই তাকে আটক করা হয়। পরে তার কাছ থেকে ইয়াবা পাওয়ার দাবি করে পুলিশ। সেক্ষেত্রে প্রতিবারই কি তিনি কারাগার থেকে ইয়াবার চালান নিয়ে বের হচ্ছেন? বিষয়টি নিশ্চিত হতে আদালত কারা ফটকের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে।

এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর সদর থানার ওসি এ কে এম আজিজুর রহমান গতকাল বলেন, আলমগীর হোসেন চিহ্নিত ডাকাত ও মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে ডাকাতি করতে গিয়ে মানুষ হত্যাসহ একাধিক মামলা আছে। তার স্ত্রীও একজন মাদক ব্যবসায়ী। এর আগে আলমগীরের বেশ কয়েকজন সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আলমগীর লক্ষ্মীপুরে ইয়াবার ব্যবসা করেন। সম্প্রতি আলমগীরকে ইয়াবাসহ গ্রেফতারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে কারা ফটক থেকে তাকে আটকের তথ্য সঠিক নয়। বর্তমানে আলমগীর ইয়াবা মামলায় লক্ষ্মীপুর কারাগারে বন্দি রয়েছেন।

আলমগীর হোসেনের স্ত্রী সাজু বেগম বলেন, গত বছরের ১৪ জুলাই লক্ষ্মীপুর থানার এসআই মোর্শেদ তার স্বামীকে থানায় ডেকে নেন। সেখান থেকে রায়পুর থানার এসআই আরেফিন তাকে নিয়ে যান। এরপর ১৬ জুলাই ডাকাতি মামলার আসামি হিসেবে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। ঐ মামলায় জামিন পেয়ে ১২ সেপ্টেম্বর লক্ষ্মীপুর জেলা কারাগার থেকে বের হন আলমগীর। এ সময় কারা ফটক থেকেই তাকে আটক করে সাদা পোশাকের পুলিশ। পরে ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার কেজিএন অটোমেটিক রাইস মিলের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতারের কথা জানানো হয়। তখন তার কাছে ১০০ পিস ইয়াবা পাওয়া গেছে বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়। এ মামলায় ২৪ নভেম্বর তার জামিন মঞ্জুর করে আদালত। ২ ডিসেম্বর তিনি কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় আবারও তাকে আটক করে পুলিশ। তবে কাগজপত্রে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয় ৫ ডিসেম্বর গভীর রাতে। লক্ষ্মীপুর সদর থানার এসআই আবদুল আলীম এজাহারে উল্লেখ করেন, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চৌধুরী বাজারসংলগ্ন এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা থামিয়ে আলমগীরকে ১৫৫ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হয়।

সাজু বেগম আরো জানান, লক্ষ্মীপুর সদরের মুসলিমপাড়ার শাকচর এলাকায় দোচালা ঘরে তারা থাকেন। তারা অত্যন্ত দরিদ্র। আলমগীর অটোরিকশা চালিয়ে এবং ইটভাটায় কাজ করে সংসার চালান। ইয়াবার ব্যবসা তো দূরের কথা, কোনো দিন চোখেও দেখেননি তারা। তার স্বামী যদি ইয়াবার ব্যবসাই করতেন, তাহলে তাদের আর্থিক অবস্থা এত খারাপ হতো না। তবে ডাকাতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা রয়েছে। সেই মামলায় তিনি নিয়মিত আদালতে হাজিরাও দিচ্ছিলেন।

এ ব্যাপারে জানতে আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুল আহাদ শাকিল পাটোয়ারী বলেন, আদালতের নির্দেশে জামিনে মুক্ত হওয়ার পরপরই কারা ফটক থেকে আলমগীরকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনা তার স্ত্রীসহ উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি দেখেছেন। অপরাধসংশ্লিষ্টতার প্রমাণ থাকলে কাউকে গ্রেপ্তার করা যেতেই পারে। কিন্তু কারাগার থেকে বের হওয়ার পরপরই ধরে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ঘটনা দুঃখজনক। এ কারণে কারা ফটকের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহের জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানানো হয়। আদালত শুনানি শেষে পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তাকে ফুটেজ সংগ্রহ করার আদেশ দিয়েছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top