সকল মেনু

এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া হত দরিদ্র মিনারার উচ্চ শিক্ষা অনিশ্চিত

kalapara-01 (13-08-13) Minaraনিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ১৩ আগস্ট ॥ এইচএসসিতে জিপি-৫ পেলেও মিনারার উচ্চশিক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। চরম আর্থিক সংকটে বাড়িতে চিকিৎসা বিহীন শয্যাশায়ী মায়ের সেবা যত্ন করেই সময় কাটছে মেধাবী এই শিক্ষার্থীর। মিনারার হাসিমুখ এখন বিবর্ণ হয়ে আছে। তার চোখ অসহায়ত্বের পানি ঝরাচ্ছে। পরীক্ষার শুরুর প্রথমদিন মিনারার মা কামেনা পশন (৫০) ষ্ট্রোক করে হাত-পা প্যারালাইশড হয়ে এখন শয্যাশায়ী। মিনারার বাবাও আগে থেকেই অসুস্থ। দুশ্চিন্তা মাথায় নিয়ে অসুস্থ্য মা-বাবার স্বপ্ন পূরন করতে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে সাফল্য ছিনিয়ে আনে সে। এখন চরম অর্থাভাবে যেখানে মা-বাবার চিকিৎসা করাতে পারছে না মিনারা সেখানে উচ্চ শিক্ষার কথা ভাবতেও সময় পায় না। যেন পাহাড় সমান সমস্যা সামনে এসে আটকে আছে মিনারার।কলাপাড়া উপজেলা আলহাজ্ব জালাল উদ্দিন কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ন হয়ে সবাইকে চমকে দেয় মিনারা। এসএসসিতেও সে জিপিএ-৫ পেয়েছিল চরচাপলী ইসলামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে। ধুলাসার ইউনিয়নের চরচাপলী গ্রামের আব্দুল লতিফ হাওলাদারে ছয় সন্তানের মধ্যে ছোট মেয়ে মিনারা। ১০ বছর ধরে তার বৃদ্ধ পিতা অসুস্থ্য। পরিবারে বড় এক ভাই থাকলেও বিয়ে করে ভিন্ন সংসারে তার অবস্থান। ছোট ভাই মনিরুজ্জামানের সীমিত আয় ও মিনারার প্রাইভেট পড়ানোর মাসিক সাত ’শ টাকা দিয়েই সংসারের চাকা কোনমতে চলছিল। বিপদ যেন মিনারার পিছু ছাড়ছে না। ছোট ভাইও হার্টের রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। চোখের সামনে ছেলে ও স্বামীর রোগবালাই সহ্য করতে না পেরে তাদের মা হার্ট এট্যাক করেন বলে মিনারা জানায়।মা, বাবা ও ভাই তিন জনই কঠিন রোগে পড়ে আছে বাড়িতে বিনা চিকিৎসায়। সংসারের এই পরিণতি সামলে কীভাবে উচ্চ শিক্ষার পথে এগুবে তা ভেবে মিনারা এখন দিশাহারা হয়ে পড়েছে। এসব বলতে বলতে মিনারা শুধু দু’চোখ দিয়ে নীরবে অশ্রু ঝরায়। চেয়ে থাকে অজানা ভবিষ্যতের চিন্তায় ফ্যালফ্যাল করে।মিনারার ছোট ভাই মনিরুজ্জামান জানায়, ঘরে ঠিকমতো রান্না হয়না। ছোট্ট বোনকে বইখাতা তো দূরের কথা ঈদে একটা নতুন জামাও দিতে পারে নি। মিনারার ভালো ফলাফলে তাদের এখন কান্না ছাড়া করার কিছুই নাই। কীভাবে লেখাপড়া করাবে তাও জানা নেই মনিরুজ্জামানের। আলহাজ্ব জালাল উদ্দিন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. ইউসুফ আলী জানান, মিনারার ইচ্ছে ছিল ঢাকা ভার্সিটিতে ভর্তি হবে। এখন ওর পরিবারের যে অবস্থা তাতে দু’বেলা ভাত খাওয়াও সম্ভব হচ্ছে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top