সকল মেনু

পৌর মেয়র এর বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

crime0012শরীয়তপুর সংবাদদাতা ॥শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র তিনজন সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর ও একজন পুরুষ কাউন্সিলরের নামে মোট ৯টি চেকের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা জালিয়াতি ও প্রতারনার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। টাকা আত্মসাতের কথা ফাঁস হয়ে গেলে পৌরসভার বিভিন্ন কাউন্সিলর, সাধারণ পৌরবাসী ও রাজনৈতিক মহলে নিন্দা ও তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তবে মেয়র চেক জালিয়াতি ও টাকা আত্মসাতের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।ভেদরগঞ্জ পৌরসভার প্রতারিত কাউন্সিলর আনোয়ারা বেগম, তানিয়া জাহিদ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার ভেদরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও ভেদরগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান হাওলাদার গোপনে ৬টি গভীর নলকুপ ও তিনটি সড়ক উন্নয়নের নামে প্রকল্প প্রনয়ন করেন। কিন্তু তা বাস্তবায়ন না করেই পৌরসভার সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড ১, ২, ৩ নং এর কাউন্সিলর আনোয়ারা বেগম ও ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তানিয়া জাহিদ এর নামে তিনটি করে চেক, ৪ ,৫, ৬ নং ওয়ার্ডের রাশিদা গনির নামে ২ টি চেক এবং ৫ নং ওয়ার্ডের পুরুষ কাউন্সিলর আব্দুল মতিনের নামে একটি, চেক এর প্রতিটির বিপরীতে ৪৭ হাজার ২৫০ টাকা করে জনতা ব্যাংকের ভেদরগঞ্জ শাখা থেকে উত্তোলন করে নেন। গত ৫ আগষ্ট স্বাক্ষরিত এই চেকগুলোর টাকা উত্তোলন করে পুরো টাকা আত্মসাতে করেন। এ বিষয়ে মেয়রকে পৌরসভার প্রকৌশলী কামরুজ্জামান ও হিসাব রক্ষক মেয়রের অনুগত ইদ্রিস আলী সহায়তা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে ।
১১ আগষ্ট দুপুরে কাউন্সিলর আনোয়ারা বেগম এর স্বামী সামসুল হক হাওলাদার জনতা ব্যাংকে একটি চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে দেখেন তার স্ত্রীর নামে পৌরসভা থেকে একই অংকের এ নাম্বারের ৫০৫১৬৪০, ৫০৫১৬৪২ ও ৫০৫১৬৪৪ তিনটি চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলনের ভাউচার জমা রয়েছে। এ ছাড়াও কাউন্সিলর তানিয়া জাহিদ, রাশিদা গনি এবং আব্দুল মতিনের নামের আরো ৬ টি চেকের ভাউচার রয়েছে। চেক নাম্বারগুলো হলো ৫০৫১৬৩৮, ৫০৫১৬৪৩, ৫০৫১৬৪৫, ৫০৫১৬৪৬, ৫০৫১৬৪৭ ও ৫০৫১৬৪৮। প্রত্যেকের নামে প্রতিটি চেকের বিপরীতে একই পরিমানের টাকা এবং প্রতিটি চেক ৫ আগষ্ট তারিখের স্বাক্ষর রয়েছে।এ বিষয়ে কাউন্সিলর আনোয়ারা বেগম ও তানিয়া জাহিদ বলেন, আমরা প্রায় ১৫ বছর যাবৎ এই পৌরসভার সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে আসছি। আমাদের কোন প্রকল্প না দিয়ে, প্রকল্পের কাজ না করিয়ে, আমাদের স্বাক্ষর জাল করে মেয়র মহোদয় চেকের মাধ্যমে টাকা উঠিয়ে নিয়েছেন। এটা জালিয়াতি ও প্রতারনা। আমরা এ বিষয়ে কিছুই জানিনা। এমন নজির বিহীন কাজ করতে আমরা কখনো দেখিনি।পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল বাশার চোকদার বলেন, আমার জানামতে পৌরসভায় ৪ জন কাউন্সিলরের মাধ্যমে ৯টি প্রকল্প বাস্তবায়ন বিষয়ে কোন রকম সভা বা রেজুলেশন করা হয়নি। পৌরসভার মেয়র, সচিব ও প্রকৌশলী এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যাখ্যা দিবেন বলে আমরা আশা করি।৪ কাউন্সিলরের নামে টাকা জালিয়াতির বিষয়টি ফাঁস হবার পর থেকেই পৌর প্রকৌশলী কামরুজ্জামানের মুঠো ফোন বন্ধ রয়েছে।পৌরসভার সচিব রাশেদ ইকবাল বলেন, আমি এই পৌরসভায় নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছি। আমি কোন প্রজেক্ট সম্পর্কে ভালো কিছু বুঝিনা এবং জানিও না। এগুলো মেয়র এবং ইঞ্জিয়ার মহোদয় ভাল জানেন। আপনারা তাদের সাথে কথা বলে দেখতে পারেন।ভেদরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর মান্নান রাড়ি বলেন, বিষয়টি জেনে আমি হতচকিত হয়েছি। এই পর্যায়ের কোন জনপ্রতিনিধিকেই এত বড় ভুল করা উচিৎ না।ভেদরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আব্দুল মান্নান হাওলাদার বলেন, কাউন্সিলরদের উপস্থিতিতে রেজুলেশন করে উন্নয়নমূলক কাজের প্রকল্প পাস করা হয়েছে। আমি পৌরসভার কোন টাকা আত্মসাত করিনি। আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের এটা একটা ষড়যন্ত্র।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top