সকল মেনু

কমলাপুরে চলছে দ্বিতীয় দিনের টিকিটযুদ্ধ

হটনিউজ ডেস্ক:

ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রির দ্বিতীয় দিনে ভিড় বেড়েছে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে। টিকিট প্রত্যাশীদের দীর্ঘ লাইন শুরু হয় গতকাল রাত থেকেই। আজ তা সকাল ৭টার আগেই ছাড়িয়ে যায় স্টেশন চত্বর।

আজ দেওয়া হচ্ছে ৮ আগস্টের টিকিট। দেখা যায়, অগ্রিম টিকিট বিক্রির ১৩টি কাউন্টারে টিকিট সংগ্রহ করতে লোকজনের দীর্ঘ সারি। সবচেয়ে দীর্ঘ ও ভিড় বেশি দেখা গেছে উত্তরাঞ্চলের রাজশাহী এবং দিনাজপুরের ট্রেনগুলোর লাইনে।

টিকিট প্রত্যাশীরা জানান, গতকাল রাত থেকেই অনেকে অপেক্ষা করছেন টিকিটের জন্য। অনেকে ভোরে এসেও দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কাউন্টারের কাছে ঘেঁষতে পারেননি। তবে টিকিট হাতে পেয়ে অনেকের মুখেই দেখা গেছে বিজয়ের হাসি।

কমলাপুর রেলস্টেশনসহ রাজধানীর পাঁচটি স্থানে ঈদ ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে গতকাল সোমবার সকাল ৯টায়। বিক্রি চলছে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এদিন বিক্রি হয়েছে ৭ আগস্টের টিকিট। আজ মঙ্গলবার বিক্রি করা হবে ৮ আগস্ট যাত্রার টিকিট। ৫০ শতাংশ টিকিট মোবাইল অ্যাপ ও অনলাইনে এবং বাকি ৫০ শতাংশ টিকিট কাউন্টার থেকে বিক্রি করা হবে।

গত ঈদুল ফিতরে রেলসেবা অ্যাপসে টিকিট কিনতে ভোগান্তি হয়েছিল বেশি। রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এই ভোগান্তি কমানোর চেষ্টা করছে। তবে তাতে পুরোপুরি সাফল্য আসেনি। এ ক্ষেত্রে চাহিদার তুলনায় টিকিট খুব কম থাকাকেই বড় কারণ বলে উল্লেখ করেছেন রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। গতকাল সকালে কমলাপুর রেলস্টেশনে ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রির পরিস্থিতি দেখে তিনি বলেন, পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দিনে অ্যাপসে টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে ১০ হাজার। তবে একই সময়ে পাঁচ লাখ লোক ঢুকতে চাইলে তার মধ্যে তো চার লাখ ৯০ হাজার লোক ঢুকতে পারবে না।

রেলমন্ত্রী জানান, ডাবল লাইন হওয়ার আগে ট্রেন চলাচলে সময়সূচি বিপর্যয় রোধ করা যাবে না। সিন্ডিকেট করে টিকিট বাণিজ্য বন্ধে অপরাধী শনাক্ত করা কঠিন বলেও স্বীকার করেন তিনি।

প্রতিদিন আন্ত নগর ট্রেনসহ বিভিন্ন ধরনের ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে ৫৯ হাজার ৬৭৭টি। গতকাল ১০ হাজার ৭৭৪টি টিকিট অনলাইনে ও অ্যাপসে বিক্রির জন্য বরাদ্দ ছিল। সকাল ৬টা থেকে অ্যাপসে ও অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। দিনে কত টিকিট বিক্রি হচ্ছে তা আগেই অ্যাপসে জানা যাচ্ছে। অ্যাপসে ও অনলাইনে বিক্রি শুরুর সাড়ে চার ঘণ্টায় সাত হাজার ৪৬৩টি টিকিট বিক্রি হয় বলে বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্র জানায়। একই সময় পর্যন্ত কাউন্টারে বিক্রি হয় তিন হাজার ৩৭টি টিকিট।

আগাম টিকিট কিনতে গত রবিবার রাত ১২টা থেকেই কমলাপুর রেলস্টেশনে টিকিট প্রার্থীরা ভিড় করে। গতকাল সকালে টিকিট বিক্রি শুরুর পর আশা নিয়ে দাঁড়িয়েও তাদের অনেকে টিকিট পায়নি। তাদের একজন নাজমুল আলম বলেন, ‘রাতভর কষ্ট করেও যশোর যাওয়ার টিকিট পেলাম না।’

বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্র জানায়, নগরের পাঁচটি পয়েন্ট থেকে ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি চলবে আগামী ২ আগস্ট পর্যন্ত। যমুনা সেতু হয়ে পশ্চিমাঞ্চলগামী সব আন্ত নগর ট্রেনের টিকিট কমলাপুর রেলস্টেশন, চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী সব আন্ত নগর ট্রেনের টিকিট বিমানবন্দর রেলস্টেশন, ময়মনসিংহ ও জামালপুরগামী আন্ত নগর ট্রেনের টিকিট তেজগাঁও রেলস্টেশন, নেত্রকোনার মোহনগঞ্জগামী ট্রেনের টিকিট বনানী রেলস্টেশন এবং সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী সব আন্ত নগর ট্রেনের টিকিট ফুলবাড়িয়ার পুরনো রেল ভবন থেকে বিক্রি করা হচ্ছে।

রেলমন্ত্রীর সঙ্গে গতকাল কমলাপুর রেলস্টেশনে টিকিট বিক্রির অবস্থা সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোফাজ্জেল হোসেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. শামছুজ্জামান, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অপারেশন মো. মিয়াজাহানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top