সকল মেনু

ক্ষতিপূরণ বঞ্চিত শিশু রিহানের ভবিষ্যত অন্ধকারে

Rihan-with-her-gardmother20130812065622সাভার প্রতিনিধি,হটনিউজ২৪বিডি.কম:ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। কিন্তু এক বছরের এতিম শিশু রিহান শেখ সেই খুশি বা আনন্দের যতোটুকুই বুঝুক না কেন, দিনটি ছিল তার পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য অত্যন্ত দুঃখের।

রানা প্লাজা ধসে একসঙ্গে বাবা-মাকে হারানো শিশু রিহান এখন সাভারের ইমান্দিপুর মহল্লার একটি ভাড়া বাড়িতে নানীর কাছে মানুষ হচ্ছে।

ওই ভবন ধসে নিহত দম্পতি মনছুর-রিহানার একমাত্র সন্তান রিহানের জন্য কোনো ক্ষতিপূরণ পাননি তার অভিভাবকরা। রিহানের দাদার বাড়ির লোকজন প্রতারণা করে সব অর্থ নিয়ে গেছেন। ক্ষতিপূরণের কোনো টাকা না পাওয়ায় এতিম শিশু রিহানের ভবিষ্যত এখন কোনদিকে যাবে সে চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন রিহানের বৃদ্ধা নানী নাজমা বেগম।

শিশু রিহান শেখের বাবা মনছুর শেখ ও মা রিহানা আক্তার। বাবা-মায়ের নামের সঙ্গে মিল রেখেই ছেলের নাম রাখা হয়েছে রিহান শেখ। তাই ছেলের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই শিশু রিহানকে নানী নাজমা বেগমের কাছে রেখে বাবা-মা দুজনেই চাকরি করতেন সাভারের রানার প্লাজার ৪র্থ তলার ফ্যান্টম এ্যাপারেলস কারখানায়।

মা রিহানার আশা ছিল, ছেলেকে লেখাপড়া শিখিয়ে আর্মি অফিসার বানাবেন। সুখেই চলছিল তাদের দিন। কিন্তু সেই সুখ বেশিদিন সইলো না রিহানের কপালে। বাবা-মা দু’জনকেই কেড়ে নিয়েছে মৃত্যুকূপ রানা প্লাজা।

ঈদের পরদিন রিহানদের বাসায় গিয়ে দেখা যায় সেই কষ্টের দৃশ্য। ঈদের জামা-কাপড়, টুপি সবই পরিয়ে সাজানো হয়েছে রিহানকে। আর শিশু রিহান বাবা-মায়ের ছবি নিয়ে খাটের ওপর মনের সুখে খেলা করছে। কিন্তু বাড়ির অন্য সদস্যদের মাঝে সেই সুখ বড়ই কষ্টের। কারণ, রিহানের নিয়তি তার সঙ্গে করেছে চরম প্রতারণা।

উল্লেখ্য, গত ২৪ এপ্রিল সকাল ৯টার কিছু আগে বিকট শব্দে ধসে পড়ে বহুতল বাণিজ্যিক ভবন রানা প্লাজা। এ ঘটনায় রিহানের বাবা-মাসহ ১১৩৩ জন শ্রমিক নিহত হন। আহত হয়েছেন অনেকে এবং নিখোঁজ রয়েছেন ৩৭৯ জন শ্রমিক।

ভবন ধসের প্রথম দিনই উদ্ধার হওয়া রিহানের মা রিহানার লাশটি বেসরকারিভাবে প্রথম সনাক্ত করা হয় সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী রিহানের মায়ের লাশটি হস্তান্তরের সময় ২০ হাজার টাকা প্রদান করা হলেও ভুলক্রমে সেখানে উল্লেখ করা হয়নি যে, রিহানার এক বছরের একটি ছেলে রয়েছে।

অন্যদিকে ঘটনার নবম দিনে ধ্বংসস্তুপের ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয় রিহানের বাবা মনসুর শেখের লাশটি। কিন্তু রিহানের দাদার বাড়ির লোকজন ক্ষতিপূরণের সরকারি টাকা হাতিয়ে নিতে ইচ্ছা করেই রিহানের বিষয়টি গোপন রাখেন। তারা ক্ষতিপূরণের টাকাসহ মনসুর শেখের লাশটি নিয়ে যান গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের ঘিওর থানার নারশী গ্রামে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top