সকল মেনু

এবার ৩৮২৯ কোটি টাকার ইভিএম কেনা নিয়ে নানা প্রশ্ন পিইসির

হটনিউজ ডেস্ক: এবার বিএনপিসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল আপত্তি করলেও ৩ হাজার ৮২৯ কোটি টাকার ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার পরিকল্পনা করেছে নির্বাচন কমিশন। এ টাকায় দেড় লাখ ইউনিট ইভিএম কেনার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। তবে সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা না দেখাতে পারায় প্রকল্প নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প মূল্যায়ণ কমিটি (পিইসি)।

সূত্র জানায়, ইভিএম কেনার প্রকল্পটি গ্রহণের প্রস্তাবটি সম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়াই পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটির বেশ কিছু বিষয় স্পষ্ট করতে পিইসি মতামত দিয়েছে। গত ১৯ আগস্ট পিইসির সভায় এ মতামত দেয়া হয়।নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপে প্রায় সব দলই ইভিএমের বিপক্ষে মত দেয়। তবে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট শুরু থেকেই ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে মত দিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো না চাইলে নির্বাচনে এই পদ্ধতির প্রয়োগ হবে না বলে আশ্বস্ত করেছিল প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। তিনি বলেছিলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সুযোগ নেই। কিন্তু কতিপয় উৎসাহী কর্মকর্তার কারণে ইসি আবার ইভিএমের দিকে ঝুঁকছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। এখন এই ইভিএম ব্যবহার করতে গণপ্রতিধিত্ব অধ্যাদেশে সংশোধনী আনারও উদ্যোগ নিয়েছে ইসি।

জানা গেছে, ইভিএম সংগ্রহের লক্ষে দরপত্র/প্রস্তাব মূল্যায়নের জন্য নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে ৭ সদস্যর একটি কমিটি করা হয়েছে। এই কমিটি একটি প্রকল্প পাঠায় পরিকল্পনা কমিশনের। পিইসির সভায় প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়াই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে মর্মে মতামত এসেছে। প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে আলোচনার তাগিদ দিয়েছে পিইসি।

প্রকল্পে ২০৪ জন পরামর্শকের প্রয়োজনীয়তা জানতে চেয়েছে পিইসি। এক্ষেত্রে পরামর্শকের যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও কর্মপরিধি ডিপিপিতে উল্লেখের জন্য বলা হয়েছে। দেড় লাখ ইভিএমের যন্ত্রপাতি ও সিস্টেম কেনার কথা প্রকল্পে বলা হয়েছে। তবে কোথায় থেকে কীভাবে এসব যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা হবে তা প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়নি। প্রকল্পে ৩১১০ জনের প্রশিক্ষণের কথা উল্লেখ থাকলেও তারা কারা সে বিষয়ে উল্লেখ করা হয়নি। এছাড়া ৩০ জনকে বিদেশে প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা বলা হলেও তাদের পরিচয় জানানো হয়নি।

প্রকল্পে বিজ্ঞাপন প্রচার, পরিবহন, মোটরযানবাহন কেনা, কম্পিউটার সফটওয়্যার, আসবাবপত্র কেনা বাবদ বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যায়ের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচনের কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ বলেন, সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য পরিকল্পনা কমিশন থেকে কিছু জানানো হয়নি। মাননীয় মন্ত্রী মোস্তফা কামাল এর আগে একটা সভা ডেকেছিলেন। ওই সভা মূলতবি হয়েছে। সভার পরবর্তী তারিখ এখনও জানানো হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপে প্রায় সব দলই ইভিএমের বিপক্ষে মত দেয়। রাজনৈতিক দলগুলো না চাইলে নির্বাচনে এই পদ্ধতির প্রয়োগ হবে না বলে আশ্বস্ত করে ইসি। এখন তারা চক্রান্ত করছে।ইসির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ইভিএম কিনতে প্রায় ৪’শ কোটি টাকা ব্যয় হবে। আর এই কাটায় উৎসাহ থেকেই শেষ সময়ে এসব কেনার তোড়জোড় চলছে।

প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের পর বিভিন্ন সময় কেনা ১ হাজার ৮০টি ইভিএম কিনেছিল ইসি। প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তৈরি এসব ইভিএম তৈরি পর রক্ষণাবেক্ষণ ও কারিগরি ক্রুটি সারানো জন্য প্রায় সাত কোটি টাকা খরচ হয়। পরে অকোজো হয়ে গেলে সম্প্রতি এগুলো ধ্বংস বা পরিত্যক্ষ ঘোষণা করেছে ইসি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top