সকল মেনু

ভোট ডাকাতি না করতে পেরে কারচুপির অভিযোগ বিএনপির -এল জি আর ডি মন্ত্রী

হটনিউজ ডেস্ক: স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ডাকাতির পরিকল্পনা সফল না হওয়ায় উল্টো ভোট ডাকাতির অভিযোগ করছে বিএনপি। তারা চেয়েছিল ভোট ডাকাতি করে নির্বাচনে জিতবে। কিন্তু সেটি না করতে পারায় এমন অভিযোগ করছে তারা।মঙ্গলবার মন্ত্রীর সরকারি বাসায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেছে গাজীপুর সিটিতে ভোট ডাকাতি হয়েছে। এমন প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘আমার মনে হয় ভোট ডাকাতি করতে পারে নাই বলে এমন অভিযোগ করছে তারা। তারা হয়তো পরিকল্পনা করেছিল ভোট ডাকাতি করবে। তারপর দোষ দেবে আওয়ামী লীগকে। এসব করতে পারেনি বলে এমন অভিযোগ। আওয়ামী লীগ জিতলেই নানা ভেজাল। তানাহলে সমস্যা নাই।’
মন্ত্রী বলেন, ‘গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অনেক ভোট ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে। এখানে আমরা অভূতপূর্ণ সাড়া পেয়েছি। ডবলেরও বেশি ভোটে এগিয়ে আছে আমাদের প্রার্থী। এই রেটে যদি ভোট গণনা হয় তাহলে আমাদের বিজয় তো সুনিশ্চিত। জাতীয় নির্বাচনের আগে এমন জয় উৎসাহব্যঞ্জক। এতে জাতীয় নির্বাচনের ভীত রচনা করবে বলে আমি অত্যন্ত আশাবাদী।’
গাজীপুর নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি ভোট ডাকাতিসহ কারচুপির অভিযোগ করেছে। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই এমন অভিযোগ করছে বিএনপি। যদিও বিএনপি বলছে ১০০টি সেন্টারে গোলমাল হয়েছে। গোলমাল করার পরিকল্পনা ছিল বলেই এমন অভিযোগ করছে বিএনপি। জেনারেললি কেউ বলছে না যে এতোগুলো সেন্টারে গোলমাল হয়েছে। ৯টা সেন্টারে গোলমাল হয়েছে। সেগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে।’
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘গাজীপুর আমাদের ১৩টি সিটি করপোরেশনের অন্যতম একটি সিটি করপোরেশন। গাজীপুর নির্বাচনটা আসলেই একটা টার্নিং পয়েন্ট। কারণ জাতীয় নির্বাচন তো আর দূরে না। ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। জানুয়ারিতে নতুন সরকার গঠন হবে। এরই প্রাক্কলে যে অভূতপূর্ব সাড়া আমরা পেয়েছি সেটা আমাদের জন্য উৎসাহব্যঞ্জক। জনগণ উন্নয়নের রাজনীতির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। এটা এই নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা বুঝতে পেরেছি- জনগণ আসলে কী চায়।’
বিএনপি নেতার ফোনালাপ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এইটা স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। এগুলো তারা দলীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে করছে কিনা সেটা জানিনা। তবে আগে প্রশ্নবিদ্ধ করলে পরাজয় হলেও যাতে বলা যায় যে আমরা আগেই বলেছি যে ভেজাল বাধবে। এটা আমার মনে হয় পলিটিক্যাল স্ট্যান্ড। এটার কোন সারবার্তা আছে বলে আমার মনে হয় না।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আসলেই প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য ইস্যু দাড়া করাচ্ছে বিএনপি। কিন্তু ফলাফলে সেটা বোঝা যাচ্ছে না। তবে নির্বাচনের সময় নানা কথা বার্তা হয় আমরা বিষয়টিকে সেভাবে দেখার চেষ্টা করি।’
বেশ কয়েকটি নির্বাচন সীমানা নির্বাচন জটিলতায় আটকে আছে। আগামীতে তিনটি সিটির নির্বাচন হবে সেগুলোতে কোনো বাধা আসবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘কেউ যদি আদালতে নালিশ নিয়ে যায় তখন আদালত সেটাকে আমলে নিয়ে প্রাথমিকভাবে স্থগিত করে। যাতে তারা নিউট্রল থাকে। আমার মনে হয় বিজ্ঞ জজ সাহেবরা বিতর্কিত হতে চাননা সে কারণেই এমনটা করেন। উত্তর সিটি করপোরেশনে তো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছিল। যেই সীমানায় প্রয়ত মেয়র আনিসুল হক নির্বাচত হয়েছেন সেই সীমানায় কিন্তু নির্বাচনের জন্য শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে। তারপরেও কেউ যদি নালিশ নিয়ে যায় তাহলে আমাদের তো কিছু করার নেই। এ নিয়ে আমার কিছু বলারও নেই।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের সংশ্লিষ্ট ব্রাঞ্চ আছে তারা আপিল করে। বিভিন্ন আইনি পদক্ষেপ নেয়া হয়। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলে। আমরা রাজনীতিবিদরা সেই গতিতে সুবিধা করতে পারি না। তাদের গতিতে তারা চলুক। ওখানে কিছু করতে গেলেই কনটেম্পট অব কোর্টসহ নানা রকম ঝামেলা থাকে। আমরাও একটু সমীহ করে চলার চেষ্টা করছি। বিচারে হস্তক্ষেপ করা সমীচীন না। বেশ কয়েকটিতে তো আমরা নির্বাচন দিতেই পারলাম না। একটার পর একটা মামলা চলতেই আছে। তবে আমার মনে হয় খুব শিগগিরই নির্বাচন হয়ে যাবে।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘সীমানা জটিলতা কিন্তু আগেও ছিল না। যিনি ইন্তেকাল করলেন তিনি তো নির্বাচিত মেয়র ছিলেন। এবং ওই সীমানার মধ্যেই তিনি নির্বাচিত হয়েছেন। তখন তো মামলা হয় নাই। এখন তো হল। কাজেই এটা নিশ্চিত করে তো আমি আমার মন্ত্রণালয় থেকে বলতে পারবো না।’
৩০ জুলাই তিনসিটি নির্বাচনে ভোট। সেটি নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী? কারণ এরআগে এই তিনটিতে বিএনপি আগের নির্বাচনে জয়ী হয়েছিল। এমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার দলের প্রার্থীর বিষয়ে তো আমি শতভাগ আশাবাদী। কারণ ট্রেন্ড দেখলে মনে হয় নৌকাই জিতবে। নির্বাচনের একটা গতি-প্রকৃতি থাকে। গাজীপুরের নির্বাচনটা আমাদেরকে অনেক আশাবাদী করে ফেলছে। আর ফাইট তো নেক টু নেক হচ্ছে না। নেক টু নেক হলে বুঝতাম দোদুল্যমান অবস্থায় আছি। কী হয় বলা যায় না। একেবারে সুনির্দিষ্টভাবে দিগুণ ভোটের ব্যবধানে আমাদের প্রার্থী এগিয়ে আছে। সুতরাং ওই সিটি করপোরেশনগুলো মোটামুটি আমাদের পক্ষে। আমরা আশাবাদী ওখানে আমরা জিতবো।
গত পাঁচ সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগে হেরেছিল, কিন্তু এখন সেগুলোতে জয়ী হচ্ছে। এর কারণ কী? এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে বিএনপির সাংগঠনিক শক্তির দিকে বিবেচনা করেন। তাদের দল কী আসলেই সুসংহত কিনা সেটা বিবেচনা করেন। তাদের মধ্যে লিডারশীপ সংকটও তো আছে।আমরা কিন্তু ওই বিবেচনায় অনেক অনেক সুসংহত। আর মানুষ তো আস্থার জায়গায় যেতে চায়। আস্থাহীনতায় কিন্তু মানুষ যেতে চায় না। পাঁচ সিটি নির্বাচনে তখন যে পরিস্থিতি ছিল এখন তো রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কিন্তু অনেক উন্নীত হয়েছে। মানুষ কিন্তু এখন রেজাল্টটা চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছে। দেশ কোথায় যাচ্ছে। আমরা কিন্তু অলরেডি উন্নয়নশীল দেশে আছি। দুইবছর আগেই আমরা টার্গেট ফুলফিল করেছি। রাজনৈতিক ইতিহাসে যদি আপনি পাকিস্তানে আমল থেকে আরম্ব করেন তাহলে দেখবেন একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার এবং তিনি নিজে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে তিনি দেশটা চালাচ্ছেন। সময় পুরণ হওয়ার আগেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করছেন। এগুলো মানুষ দেখেন। বিচার করেন। সে অনুযায়ী মানুষ ভোট দেয়। আমরা সবকটি ইনডিকেটরে- রাজনৈতিক বলেন, সামাজিক বলেন, অর্থনৈতিক বলেন- সবগুলো ইনডিকেটর আমাদের পক্ষে। কাজেই আমার বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদী হতেই পারি।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top