সকল মেনু

খুলনার ঈদ বাজার শেষ মুহূর্তে জনসমুদ্র

মেহেদী হাসান, খুলনা থেকেঃ পবিত্র রমজান মাসের শেষ দিকে খুলনায় ঈদের বাজার ব্যপক জমে উঠেছে। দর্শক ও ক্রেতাদের চাপে ঈদ মার্কেটে পা ফেলার জায়গা থাকছে না। সকাল থেকেই গোমরা মুখে ছিল আকাশ। মধ্য জৈষ্ঠ্যে হালকা বৃষ্টি হওয়াটা স্বাভাবিক। বৃষ্টিতে ভ্যাপসা গরম কাটলেও বিপত্তি বাধে কেবল নগরজীবনে। ঈদের বাজারে হঠাৎ বৃষ্টিতে কাদাপানিতে মাখামাখি, সেই সঙ্গে যানজটের ভোগান্তি। এসব বিপত্তি ও ভোগান্তি আমলে নিলে তো ঈদ উৎসবই মাটি হয়ে যাবে। তাই সব কিছু উপেক্ষা করেই খুলনায় শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করেন ক্রেতারা। অভিজাত বিপণিবিতান থেকে ফুটপাতের দোকান সবখানেই ঈদের কেনাকাটার ধুম। মহানগরীর বাইরে থেকেও প্রতিদিন অসংখ্য ক্রেতা আসছেন। পুরো খুলনা নগরীই যেন পরিণত হয়েছে বড় ঈদবাজারে। কিন‌ছেন নিজেদের পছন্দের কাপড়-চোপড় ও অন্যান্য সামগ্রী। মার্কেটমুখী মানুষের ভিড়ের কারণে ডাকবাংলো মোড়, পাওয়ার হাউজ মোড়, নিউ মার্কেট চত্বর এবং শান্তিধাম মোড়ে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। দুপুর থেকে সৃষ্টি হওয়া এ যানজট রাত অবদি থাকছে। যানজটের কারণে নাগরিকরা নাকাল হচ্ছে।

সরজমিনে সাতক্ষীরা জেলা সদরে গিয়ে জানা যায়, এবার আগে ভাগেই জমে উঠেছে ঈদ বাজার। সাতক্ষীরায় ভীড় ও বেচা কেনা বেশি। নারীরা এখানেও বেশি কিনছে। মার্কেটগুলোতে নারীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মত। এসব বিপনী বিতানগুলোতে নারীরা শাড়ী কিনছে বেশি। তবে এই শাড়িগুলো হচ্ছে ভারতীয় সিরিয়ালে নায়িকাদের পরিহিত শাড়ি। ক্রেতারা দোকানীদের সিরিয়াল এবং নায়িকাদের নাম বলে উল্লেখিত শাড়িগুলো চাইছেন। বিক্রেতারাও মজা করে ইনিয়ে বিনিয়ে তা বিক্রি করছেন। বলা যায় পাশ্ববর্তী দেশের কালচার এখন বৃহত্তর খুলনাঞ্চলে। আর উজ্জ্বল রং ও জমকালো ডিজাইন, ক্যানভাসজুড়ে কারচুপি, এমর্বয়ডারি কিংবা পাথরের কারুকাজ সম্পন্ন শাড়ির ও ভারতীয় থ্রিপিচের দিকে নারীদের নজর বেশি। আর শিশুদের কাপড় ও জুতা স্যান্ডেল সর্বত্র বিক্রি হচ্ছে সমানতালে। ক্রেতারা বলছেন শিশুদের পোষাক পরিচ্ছদের দাম তুলনামুলকভাবে বেশি। অধিকাংশ জায়গায় শিশুদের ড্রেস ভীড়ের কারণে একদামে বিক্রি হচ্ছে।

মহানগরীর অভিজাত নিউ মার্কেট, খুলনা শপিং কমপ্লেক্স, সেইভ এন্ড সেইফসহ রেলওয়ে মার্কেট, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মার্কেট, হ্যানিম্যান মার্কেট, খুলনা বিপনী বিতান, আলো সুপার মার্কেট, জলিল টাওয়ার, এশা চেম্বার, মালেক চেম্বার, আখতার চেম্বার, মিনা বাজার, আড়ংসহ বিভিন্ন বিপনী কেন্দ্রে ক্রেতাদের ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে। এ সব মার্কেটের প্রতিটি দোকানেই ভিড় থাকছে দর্শক ও ক্রেতাদের। দর্শনার্থীদের চাপ সামলাতে দোকান মালিক-কর্মীদের বেগ পেতে হচ্ছে। নিক্সন মার্কেট ও শপিং কমপ্লেক্সের প্রধান ফটকসহ ডাকবাংলা, পিকচার প্যালেস মোড়, হেলাতলা মোড়ের ফুটপাতের দোকানের রীতিমত চাপ থাকছে দর্শক-ক্রেতাদের।আএব

বিক্রেতারা জানান, ঈদের সরকারি ছুটি শুরু হয়ে গেছে। আর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে আগামী সোমবার থেকে ঈদের ছুটি শুরু হবে। যারা খুলনায় ঈদ করবেন বা ঈদের পর খুলনা থেকে বাড়ি যাবেন তারা আগামী কয়েকদিনকেই বেছে নিচ্ছেন শেষ মুহূর্তের কেনাকাটার জন্য।
নগরীর নিউ মার্কেট, শপিং কমপ্লেক্স, সেফ এন সেভসহ বিভিন্ন বিপণী বিতান ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। পুরো পরিবার নিয়েই অনেকে হাজির হয়েছেন শপিং মলে।
শপিং কমপ্লেক্সের ব্যবসায়ী ইব্রাহিম বলেন, বিক্রি বেড়েছে। বেশি বিক্রি হচ্ছে পাঞ্জাবি। সন্ধ্যার পর বিক্রি আরও বাড়বে বলে আশা করছেন তিনি। ফ্যাশন হাউস রিচম্যান-লুবনান-শাখা ব্যবস্থাপক জানান, গত এক সপ্তাহে বিক্রি বেশ বেড়েছে। শুক্রবার হিসেবে ইফতারের পর ভিড় আরও বাড়বে। খুলনায় ক্রেতাদের সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে ডাকবাংলো মোড়ের বিপণী বিতানগুলোতে। বিশেষ করে রেলওয়ে রোড, নিক্সন মার্কেট এলাকায় পা ফেলার জায়গা ছিল না। মানুষের উপচেপড়া ভিড়ের কারণে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

পাঞ্জাবি কিনতে আসা খুলনা পলিটেকনিক কলেজের পাওয়ার টেকনোলজির ছাত্র রানা জানান, সবাই চায় একটু ভিন্ন ভিন্ন রং আর ঢঙয়ের বৈচিত্রের পাঞ্জাবি। খুলনা বি এল কলেজের শিক্ষার্থী ফারুক হোসেন বলেন, ঈদ উৎসবকে যেন আরও আনন্দময় করে তোলে নতুন পাঞ্জাবি। তাই পাঞ্জাবি ছাড়া ছেলেদের ঈদ ভাবাই যায় না। তিনি জানান, ঈদের নামাজ ছাড়াও আজকাল ঈদ পুনর্মিলনী, ঈদের সন্ধ্যায় ও রাতের পার্টিতে শর্ট পাঞ্জাবি পরছে ছেলেরা। তরুণের পাশাপাশি, শিশু-কিশোর বৃদ্ধরাসহ সব বয়সের ছেলেরাই ঈদে পাঞ্জাবি পরেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top