সকল মেনু

বাণিজ্য মেলাঃ শেষ সময়ে ওয়ালটন পণ্য বিক্রির ধূম

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২৩ তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শেষ হচ্ছে ৪ ফেব্রুয়ারি। শেষ মুহুর্তে ব্যাপক ক্রেতা সমাগম ও বেচা-কিনিতে জমজমাট হয়ে উঠেছে মেলা প্রাঙ্গণ। বিশেষ করে, ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে চলছে পণ্য বিক্রির ধূম। সাশ্রয়ী দামে উচ্চ গুণগতমানের ফ্রিজ, টিভি, ল্যাপটপ, স্মার্টফোনসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্য কিনতে বেশিরভাগ ক্রেতাই ভিড় করছেন দেশীয় ব্র্যান্ডটির প্যাভিলিয়নে। আর এই উপচে পড়া ক্রেতা ভিড় দক্ষভাবেই সামলে নিচ্ছেন প্যাভিলিয়নের অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা।
আজ বৃহস্পতিবার মেলায় ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে ক্রেতা সমাগম হয়েছে ব্যাপক। প্রদর্শিত সকল পণ্যের সামনেই ক্রেতা ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত। প্রত্যেকেই পছন্দের ফ্রিজ, টিভিসহ বিভিন্ন পণ্য বাছাইয়ে অত্যন্ত ব্যস্ত। আবার ক্রেতাদের হাতে পছন্দের পণ্য বুঝিয়ে দিতেও ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে সেলস এক্সিকিউটরসহ ক্যাশ কাউন্টারের কর্মকর্তারাদের। প্যাভিলিয়নের বাইরেও পিক আপ ও ভ্যান গাড়িতে ফ্রিজ, টিভিসহ বিভিন্ন পণ্য বোঝাইয়ে ব্যস্ত ছিল অনেকে।
ওয়ালটন গ্রুপের সিনিয়র অপারেটিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম জানান, সার্বিক পরিস্থিতি ভালো থাকায় এবারের মেলায় শুরু থেকেই ক্রেতা-দর্শণার্থীর সংখ্যা বেশ ভালো। বিশেষ করে ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে প্রতিদিনই ক্রেতা-সমাগম হয়েছে চোখে পড়ার মত। দেশের শীর্ষস্থানীয় ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড হওয়ায় মেলায় আগত বেশিরভাগ ক্রেতা-দর্শনার্থীই অন্তত একবারের জন্য হলেও ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে এসেছেন।
তিনি আরো বলেন, সাশ্রয়ী দামে সেরা মানের ফ্রিজ, টিভি, ল্যাপটপ, স্মার্টফোনসহ বিভিন্ন পছন্দের পণ্য কিনতে শেষ মুহুতে ক্রেতারা ছুটে আসছেন ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে। উপচে পড়া ক্রেতা ভিড়ও ভালোভাবেই সামলে নিচ্ছেন প্যাভিলিয়নের অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা। সার্বিক বিবেচনায় এবারের মেলায় ওয়ালটন বেশ সফল হয়েছে বলেই মনে করছেন তিনি।


ওয়ালটন প্যাভিলিয়নের ইনচার্জ শফিকুল আলম জানান, এবারের মেলায় সকল শ্রেণী, পেশা ও আয়ের গ্রাহকের কথা বিবেচনা করে সাত শতাধিক মডেলের ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল, হোম ও কিচেন অ্যাপ্লায়েন্সেস পণ্য নিয়ে এসেছে ওয়ালটন। ফলে, এক জায়গাতেই ক্রেতারা বাজেট অনুযায়ী উচ্চ গুণগতমানের দরকারি সব পণ্য পাচ্ছেন। আবার মেলায় ওয়ালটনের প্রতিটি পণ্যেই ক্রেতারা পাচ্ছেন আকর্ষণীয় নগদ ছাড়। তাই, মেলার শেষ মুহুর্তে পছন্দের পণ্য কিনতে ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে ক্রেতারা ছুটে আসছেন বলে জানান তিনি।
শফিকুল আলমের কথার প্রতিধ্বনি শোনা গেলো প্যাভিলিয়নে আসা ক্রেতাদের কথাতেও। ওয়ালটন প্যাভিলিয়ন থেকে মাঝারি সাইজের ফ্রিজ কেনেন ঢাকায় মিরপুর এলাকার বাসিন্দা মোজাম্মেল হক। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, এবছরের গরমের আগে অর্থাৎ মার্চের দিকে ফ্রিজ কেনার টার্গেট আগে থেকেই নিয়ে রেখেছিলাম। এর আগে গত মাসের মাঝামাঝিতেও পরিবার নিয়ে মেলায় ঘুরতে এসেছিলাম। তখন ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে এসে অসংখ্য বৈচিত্র্যময় মডেলের ফ্রিজ দেখতে পেলাম। ফ্রিজের গায়ে লেখা দামও দেখলাম আমার বাজেটের মধ্যে। আবার একজন বিক্রয় প্রতিনিধির কাছ থেকে ৮ শতাংশ ছাড়ের পাশাপাশি ফ্রি হোম ডেলিভারি সুবিধাও কথাও তখন জানতে পারলাম। সাধারাণত মেলার বাইরে এসব সুবিধা মিলবে না বিধায় জানুয়ারি মাসের বেতন পেয়েই ৩২৭৫২ টাকায় ওয়ালটনের ৩৩৩ লিটারের ইনভার্টার প্রযুক্তির টেম্পারড গ্লাস ডোরের একটি ফ্রস্ট ফ্রিজ কিনলাম।
ওয়ালটন প্যাভিলিয়নের সমন্বয়ক শাহ শহীদ চৌধূরী বলেন, এবারের মেলায় ওয়ালটনের সব পণ্যের বিক্রি বেশ ভালো। তবে, শেষ মুহুর্তে বেশি বিক্রি হচ্ছে ফ্রিজ ও টিভি। বিশেষ করে, ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইনভার্টার প্রযুক্তির ফ্রস্ট ও ননফ্রস্ট ফ্রিজের পাশাপাশি টেম্পারড গ্লাস ডোর ও মুঠোফোন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত স্মার্ট ফ্রিজ গ্রাহকের কাছে হটকেকে পরিণত হয়েছে। সেই সঙ্গে ব্যাপক গ্রাহকপ্রিয়তা পাচ্ছে বাণিজ্য মেলায় নতুন আসা ওয়ালটনের স্মার্ট এসিও। এটি গ্রাহক বিশ্বের যেকোন প্রান্তে বসেই স্মার্টফোনে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। আয়নাইজার প্রযুক্তির এসিও মেলায় ভালো বিক্রি হচ্ছে।
এবারের মেলায় ওয়ালটনের টেলিভিশন বিক্রিতে শীর্ষে রয়েছে ৩২, ৩৯, ৪৩ ইঞ্চি এলইডি ও ব্লুটুথ কানেকটেড চারটি শক্তিশালী সাউন্ড বক্সযুক্ত ২০ ইঞ্চি ‘বুম বক্স’ টিভি । আবার প্রযুক্তি প্রেমীদের কাছে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছে ৩২, ৩৯, ৪৩, ৪৯ ও ৫৫ ইঞ্চির স্মার্ট টিভিও। মেলায় নতুন আসা সর্বোচ্চ কালার প্রদর্শন ক্ষমতার ৪৩ ইঞ্চি স্পেকট্রা কিউ টিভিও গ্রাহকদের মন জয় করে নিচ্ছে। এই টিভিতে ব্যবহার করা হয়েছে ওয়ালটনের উদ্ভাবিত আগামি প্রজম্মের কোয়ান্টাম ডট প্লাস প্রযুক্তির প্যানেল। ফলে, গ্রাহকরা ডিসপ্লে’র ছবিতে পাবেন ১০৭ শতাংশ পর্যন্ত কালার।
হোম অ্যাপ্লায়েন্সেসের মধ্যে প্রেসার কুকার, রাইস কুকার, ইন্ডাকশন কুকার, আয়রন বা ইস্ত্রী, ব্লেন্ডার, গ্যাস স্টোভ, ইলেকট্রিক ক্যাটলি, মাইক্রোওয়েব ওভেন, ওয়াটার পিউরিফায়ার ও ইলেকট্রিক লাঞ্চ বক্স ভালো বিক্রি হচ্ছে। ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্সেস বিক্রিতে এগিয়ে রয়েছে সিলিং ফ্যান, টেবিল ও ওয়্যাল ফ্যান, রিচার্জেবল ফ্যান, টর্চ লাইট, ইলেকট্রিক সুইস-সকেট জাতীয় পণ্য।

এদিকে সাশ্রয়ী মূল্যে উচ্চ গুণগতমানের স্মার্টফোন কিনতে টিনেজাররা মেলার শেষ সময়ে ভিড় করছেন ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে। এদিকে প্রযুক্তি প্রেমী শিক্ষার্থীদের বেশি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে ওয়ালটনের সাশ্রয়ী মূল্যের ল্যাপটপের দিকে।
এবারের মেলায় ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে কনজ্যুমার গুডস্ এর ক্রেতাদের পাশাপাশি বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদেরও ভিড় দেখা গেছে। তাদের দৃষ্টি কাড়ছে প্রথমবারের মতো প্যাভিলিয়নে প্রদর্শিত দেশেই তৈরি উচ্চ গুণগতমানের এলডিপি, এলডিডি, মাস্টারব্যাচ, অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল ট্যাপ, নাট, বোল্ট ও স্ক্রুসহ বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিয়াল সলিউসনস।
জানা গেছে, নিজস্ব প্রয়োজন মিটিয়ে এসব ইন্ডাস্ট্রিয়াল সলিউসনস এখন দেশ ও দেশের বাইরে বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু করেছে ওয়ালটন। যার অংশ হিসেবেই এসব পণ্য প্রদর্শন করা হচ্ছে এবারের মেলায়। ইতোমধ্যে কয়েকটি ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিরা এসব পণ্য নেয়ার ব্যাপারে ব্যাপক আগ্রহ দেখিয়েছেন বলে জানান প্যাভিলিয়নের কর্মকর্তারা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top