সকল মেনু

ওয়ালটন পণ্যের নতুন রপ্তানি বাজার: পাইপলাইনে শ্রীলঙ্কা, ইরাক ও সোমালিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও উচ্চ গুণগতমানের পণ্য দিয়ে বিশ্ব ক্রেতাদের আস্থা অর্জন করে চলেছে ওয়ালটন। তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন রপ্তানি বাজার। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশী ব্র্যান্ড ওয়ালটনের রপ্তানি নেটওয়ার্কে নতুন যুক্ত হয়েছে পূর্ব-তিমুর। এছাড়াও শিগরীরই ওয়ালটন পণ্য যাবে শ্রীলঙ্কা, ইরাক ও সোমালিয়ায়। ওয়ালটন সূত্রমতে, পূর্ব-তিমুরে উল্লেখযোগ্য পরিমান ফ্রিজ, এয়ার কন্ডিশনার, টেলিভিশনসহ বিভিন্ন হোম ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্সেস রপ্তানির বড় আদেশ পেয়েছে ওয়ালটন। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে পণ্য রপ্তানির সমস্ত প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। আগামী সপ্তাহেই পূব-তিমুরের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়ে যাবে ওয়ালটন পণ্য বোঝাই করা কন্টেইনারবাহী জাহাজ।
জানা গেছে, বিশ্ব ক্রেতাদের আস্থা অর্জনের মাধ্যমে স্থানীয় বাজারের মতো আন্তর্জাতিক বাজারেও শক্তিশালী অবস্থান সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়েছে ওয়ালটন। সেই লক্ষ্যে শতভাগ আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করে বিশ্বের লেটেস্ট প্রযুক্তির ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্সেস রপ্তানি করছে ওয়ালটন। ফলে, ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত ওয়ালটন পণ্য দ্রুত ছড়িয়ে যাচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে।
ওয়ালটনের আন্তর্জাতিক বিপণন বিভাগের প্রধান রকিবুল ইসলাম রাকিব জানান, বর্তমানে এশিয়া, আফ্রিকা ও মধ্য প্রাচ্যের ২২টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত ওয়ালটন ব্র্যান্ডের ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্সেস। এই তালিকায় এবার নতুন যুক্ত হয়েছে পূর্ব-তিমুর। পাইপলাইনে রয়েছে শ্রীলঙ্কা, ইরাক ও সোমালিয়া। তিনি জানান, ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে ৯১.৯৫ শতাংশ বেশি পণ্য রপ্তানি হয়েছে ওয়ালটনের।


কর্তৃপক্ষ জানায়, চলতি বছরও পণ্য রপ্তানিতে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। ইউরোপ, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার ক্রেতাদের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। এরইমধ্যে ওইসব দেশের বেশ কয়েকজন ক্রেতা গাজীপুরের চন্দ্রায় স্থাপিত ওয়ালটন কারখানা পরিদর্শন করেছেন। তারা কারখানায় বিশ্বের লেটেস্ট সব প্রযুক্তি, মেশিনারিজ ও অভিজ্ঞ প্রকৌশলীর সমন্বয়ে ওয়ালটন পণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়া দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে, উৎপাদিত পণ্যের আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড বজায় রাখতে কঠোর মান নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া বিশ্ব ক্রেতাদের প্রশংসা কুড়িয়েছে।
সম্প্রতি গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন কারখানা পরিদর্শন করেছেন সোমালিয়ার ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইব্রাহিম। তিনি জানান, চলতি বছরের এপ্রিলে চীনে অনুষ্ঠিত ক্যান্টন ফেয়ারে ওয়ালটন প্যাভিলিয়ন দেখে বাংলাদেশি এই ব্র্যান্ডটির পণ্য সম্পর্কে তার আগ্রহ তৈরি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশে ওয়ালটন কারখানা পরিদর্শন করেন। বিশেষ করে, খুচরা যন্ত্রাংশসহ ফিনিশড প্রোডাক্ট উৎপাদনের প্রতিটি স্তরে কঠোর মান নিয়ন্ত্রণের প্রক্রিয়া দেখে তিনি নিজ দেশে ওয়ালটন পণ্য বিপণনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন।
ওয়ালটনের সিনিয়র অপারেটিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম বলেন, ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ লেখা ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্য রপ্তানি বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল করবে। প্রযুক্তি পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে উদীয়মান অর্থনীতির দেশে পরিণত হতে বাংলাদেশের পথ চলা আরো বেগবান হবে।


জানা গেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে ওয়ালটন। এরই অংশ হিসেবে মেধাবী ও দক্ষ প্রকৌশলীর সমন্বয়ে দেশে বৃহৎ পণ্য গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ গড়ে তোলা হয়েছে। নিজস্ব কারখানায় বিশ্বের লেটেস্ট প্রযুক্তির কম্প্রেসার তৈরির কারখানা চালু হয়েছে। অত্যাধুনিক প্রক্রিয়ায় পণ্যের আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করা হচ্ছে। বিভিন্ন দেশে কোম্পানি ও ব্র্যান্ড নিবন্ধন এবং তাদের স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী সার্টিফিকেশন অর্জনের কাজ চলছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মেলায় অংশ নেয়া হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টদের ধারণা, দেশের রপ্তানি খাতে খুব শিগগিরই ইলেট্রনিক্স পণ্য বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। আর এর নেতৃত্বে আছে ওয়ালটন। এশিয়া, আফ্রিকার পর ইওরোপ ও আমেরিকার বাজারেও যাবে ওয়ালটন পণ্য। সেটা হলে ২০২১ সালের মধ্যে ৬০ বিলিয়ন ডলারের যে রপ্তানি আয়ের রূপকল্প প্রদান করা হয়েছে, তা বাস্তবায়নে ইলেকট্রনিক্স খাত উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top