সকল মেনু

নোট গাইড কোচিং সেন্টারের জন্য শিক্ষকেরা দায়ী

রাইসুল ইসলাম, পার্বতীপুর (দিনাজপুর) : নোট গাইড ও কোচিং বন্ধের ব্যপারে ‘অবহিতকরণ সভা’ হয়েছে সম্প্রতি পার্বতীপুরে। উপজেলা পরিষদ হলরুমে অনুষ্ঠিত এ সভায় রাজনীতিক, উপজেলার সকল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক, দাখিল মাদরাসার সুপার, কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, দু’টি গার্লস হাই স্কুলের দু’জন শিক্ষার্থীনি, পুস্তক বিক্রেতা ও সংবাদকর্মী উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তরফদার মাহমুদুর রহমান। সভা সঞ্চালনা করেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুস সাত্তার সরকার।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টায় অনুষ্ঠিত এ ‘অবাহিতকরণ সভায়’ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইচ চেয়ারম্যান মোঃ রেজাউল করিম বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, নিষিদ্ধ নোট গাইড বই চালানোর জন্য শিক্ষকরা দায়ী। তারা মোটা অংকের টাকা নিয়ে বিভিন্ন প্রকাশনীর বই চালান। রেজাউল করিম কোচিং সেন্টার ও টিউশনি চালানোর জন্যও শিক্ষকদের দায়ী করেন। এক পর্যায়ে তিনি উপস্থিত শিক্ষকদের বলেন, আপনারা হাত উঠায়ে বলেনযে, নোট গাইড চালাতে টাকা পয়সা নেননা। কোচিংয়ে পড়তে ছাত্র-ছাত্রীদের বাধ্য করা হয় বলেও তিনি জানান। এর আগে বঙ্গবন্ধু হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ মোক্তারুল আলম বলেন, নোট গাইড ও কোচিং বানিজ্যের সাথে শিক্ষকেরা সরাসরি দায়ী। তারা বিভিন্ন প্রকাশনীর কাছে মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে থাকেন। আর কোচিংয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি বিদ্যালয়ের চাইতে বেশি বলে উল্লেখ করেন তিনি। আমানতুল্যা হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদ ও অধ্যাপক আফজাল সোবহান উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, নোট গাইড চালানোর জন্য সব মাষ্টাররা দায়ী নন।
পার্বতীপুর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণি বিজ্ঞান শাখার ছাত্রী সানজিদা আক্তার খুশি তার বক্তব্যে বলেন, নোট গাইড বই ছাত্র-ছাত্রীদের কোনই কাজে আসেনা। আর কোচিং সেন্টারগুলোতে বিদ্যালয়ের চাইতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বেশি থাকে বলে উল্লেখ করেন। সংবাদ কর্মী মাহমুদুর রহমান জানান, নোট গাইড চালানোর জন্য মাষ্টাররা দায়ী। পুস্তক বিক্রেতা আবদুল কাদির বলেন, পাঠ্যপুস্তক নিয়ে ইতিপূর্বে বহু ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। ২৪ টাকার বই ৮০/৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পুস্তক প্রকাশক ও মূদ্রণকারীদের লোভের কারনে সাধারন পুস্তক বিক্রেতাদের পথে বসিয়ে সরকার ৯ম-১০ শ্রেনি পর্যন্ত সমস্ত বই বিনা মূল্যে বিতরন করার সিদ্ধান্ত নেয়। বৃহত্তর স্বার্থে পুস্তক ব্যবসায়ীরা সরকারের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছে। তিনি নোট গাইড বই এবং কোচিং বানিজ্য বন্ধ করার জন্য প্রশাসন যথেষ্ট বলে জানান। এছাড়াও দেশে কিন্ডার গার্টেন স্কুল ও তাদের বই নিয়ে লুটপাটের রাজত্ব চলছে বলে মন্তব্য করেন। বলেন, কিন্ডার গার্টেনে শিক্ষকদের সরবরাহকৃত বইতে যে দাম লেখা থাকে এক কথায় তা আকাশচুম্বী। এই মূল্যের উপর প্রকাশকেরা শতকরা ৮০ভাগ কমিশন দেন। পুস্তক বিক্রেতারা ওই বইয়ের উপর মাত্র ১০ভাগ কমিশন দেন অবিভাবকদের। কিন্ডার গার্টেনের বই চালানোর জন্য প্রতিটি স্কুলে ৫০,৬০,৭০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয় স্কুল মালিকদের। বড় স্কুলগুলোর জন্য এ অংক লাখ ছাড়িয়ে যায়। কিন্ডার গার্টেনের বইয়ের মূল্য যৌত্তিক পর্যায়ে রাখার দাবি জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top