সকল মেনু

রাস্তা সিটি করপোরেশনের, ট্যাক্স নেয় বিআরটিএ

হটনিউজ ডেস্ক: রাজধানীর ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা সংস্কার ও নতুন রাস্তা নির্মাণের দায়িত্ব ঢাকা উত্তর (ডিএনসিসি) ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি)। প্রতিবছর রাস্তা সংস্কারের পেছনে মোট বাজেটের প্রায় এক তৃতীয়াংশ অর্থ ব্যয় করতে হয় সংস্থা দুটিকে। তবে এসব রাস্তা ব্যবহার ও যানবাহন চলাচলের রেজিস্ট্রেশন বাবদ ট্যাক্স আদায় করে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)। এ ব্যবস্থাকে অযৌক্তিক ও বৈষম্য হিসেবে দেখছে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন। এমনকি বিআরটিএ’র কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি করছে তারা।

সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন-পুরাতন মিলিয়ে রাজধানীতে প্রায় চার হাজার তিনশ’ কিলোমিটার রাস্তা আছে। বিভিন্ন শিল্প-কারখানা ও গার্মেন্টস পণ্য পরিবহনের জন্য ভারী কার্গোসহ সারা দেশের যানবাহনগুলো সিটি করপোরেশনের রাস্তা ব্যবহার করে। ভারী যানবাহন চলাচলে রাস্তা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যা সংস্কারের দায়িত্ব দুই করপোরেশনের।

এ ব্যাপারে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল  বলেন, ‘এটা একটা অযৌক্তিক প্রক্রিয়া। আগেও এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও অর্থ মন্ত্রণায়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনও অগ্রগতি হয়নি। এমনকি প্রতিটি অর্থবছরেও সংস্থা দুটির বাজেট বক্তৃতায় বিষয়টি তুলে ধরা হয়।’ রাজধানী থেকে বিআরটিএ যে খাজনা আদায় করে, তার ২০ শতাংশ একেকটি সিটি করপোরেশনকে দেওয়া উচিত এবং এ দাবি যৌক্তিক বলে দাবি করেছেন তিনি।

জানা গেছে, বিআরটিএ ছাড়াও সিটি করপোরেশনের রাস্তা ব্যবহার করে নগরবাসীর সেবা দেয় ঢাকা ওয়াসা, ডেসা, ডিপিডিসি, বিটিসিএল, মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানি, তিতাস গ্যাস এবং ক্যাবল লাইন অপারেটরসহ বিভিন্ন সেবা সংস্থা। কিন্তু এ জন্য তারা করপোরেশনকে কোনও ট্যাক্স দেয় না। উল্টো এসব প্রতিষ্ঠান থেকে সেবা নিতে সিটি করপোরেশনকে সার্ভিস চার্জ পরিশোধ করতে হয়।

প্রতিবছরের মতো এ বছরও বাজেট বক্তৃতায় দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র জানান, নগরবাসীর সহজ ও নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিত করতে নিজস্ব অর্থায়নে প্রতি বছরেই নতুন রাস্তা নির্মাণ ও পুরাতন রাস্তা সংস্কার করা হয়। কিন্তু এসব রাস্তায় চলাচলকারী যানবাহন মালিকদের কাছ থেকে সিটি করপোরেশন কোনও ট্যাক্স পায় না। তাই ঢাকা মেট্রো নম্বর-প্লেট সম্বলিত যানবাহন থেকে বিআরটিএ যে রাজস্ব আদায় করে তার ৭৫ ভাগ দুই সিটি করপোরেশনে জমা দেওয়ার যৌক্তিকতা আছে।

এ ছাড়া মেট্রোপলিটন এলাকায় চলাচলকারী অন্য জেলার নম্বর প্লেটধারী যানবাহনে ব্যবহারিক এক হাজার টাকা মূল্যের ট্যাক্স টোকেন ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাবও করেন দুই মেয়র।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেসবাহুল ইসলাম বলেন, ‘বিআরটিএ’র আদায় করা রাজস্বের একটা অংশ সিটি করপোরেশনকে দেওয়ার দাবি দীর্ঘদিনের। তবে দাবিটি সর্বশেষ কী অবস্থায় আছে তা আমার জানা নেই।’

সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানান, ৮০ দশকের দিকে নগরীতে অকট্রয় (নগর শুল্ক) প্রথা চালু ছিল। পরে সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। সে সময় এর পরিবর্তে সরকারের পক্ষ থেকে সিটি করপোরেশনকে কিছু থোক বরাদ্দ দেওয়া হতো। বর্তমানে এটি চালু থাকলে সিটি করপোরেশন শত কোটি টাকা রাজস্ব আয় করতে পারতো। ফলে সংস্থা দুটির আর্থিক দৈন্যদশা কিছুটা লাঘব হতো।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top