সকল মেনু

বাবা রাম রহিমের ১০ বছর কারাদণ্ড

ভারতের কথিত ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিম সিংয়ের ১০ বছরের সাজা ঘোষণা করেছে আদালত। দুই নারী ভক্ত(সাধ্বী)-কে ধর্ষণ করার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় আজ সোমবার স্থানীয় সময় সাড়ে তিনটার দিকে বিচারক এই রায় ঘোষণা করেন।

বিচারকের রায় ঘোষণার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন বাবা রাম রহিম। তিনি আদালতের কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চান। রায় ঘোষণার পর পরই হরিয়ানার সিরসায় দুটো গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় ডেরা সমর্থকরা।

১৫ বছর আগে অর্থাৎ ২০০২ সালে দুই নারী সাধ্বীকে ধর্ষণ ও নির্যাতন করার মামলায় বাবা রাম রহিমের বিরুদ্ধে আদালত এই রায় দেয়।

রায় ঘোষণার পর রাম রহিমকে মেডিকেল চেকআপের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এরপর তাকে জেলের পোশাক দেয়া হবে এবং জেলে আলাদা ঘরে রাখা হবে।

এর আগে সোমবার স্থানীয় সময় বেলা ২টা ২৫ মিনিটে হেলিকপ্টারে করে সানোরিয়া কারাগারে উড়ে যান সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক জগদীপ সিংহ ও দুই পক্ষের আইনজীবীরা। নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই কারাগারে অস্থায়ী আদালত পরিচালনা করা হয়। কারাগারটি ঘিরে রেখেছেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। রায় ঘোষণার আগে দুপক্ষের আইনজীবীদের ১০ মিনিট করে বক্তব্য রাখার সময় দেন বিচারক।

এই সময় রাম রহিমের আইনজীবী বলেন, ‘বাবা রাম রহিম সমাজ সেবার কাজ করেন। তাই মহামান্য বিচারক যেন তার শাস্তি কমিয়ে দেন।’

কারাগারের বাইরে নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে প্রায় তিন হাজার আধা সামরিক বাহিনী ও দাঙ্গা পুলিশ। নিরাপত্তার স্বার্থে রোহতক শহরের প্রান্তে সুনারিয়া জেলের দিকে যে সমস্ত রাস্তা গিয়েছে, তার সবগুলোই আটকে দেয়া হয়েছে। কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছে। রোহতক এলাকার বাসিন্দাদের ঘরের অভ্যন্তরে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

ভারতীয় সেনাবাহিনী পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা যেকোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। প্রয়োজন হলে তার এক ঘন্টার মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছাবে।

রোহতকের ডেপুটি কমিশনার জানিয়েছেন, কেউ সহিংসতা করার চেষ্টা করলে একবার সতর্ক করা হবে, না শুনলেই চলবে গুলি।

হরিয়ানার পুলিশ জানিয়েছে, আমরা পাঁচকুলার ঘটনার পুনরাবৃত্তি চাই না। হরিয়ানা ঘেঁষা পাঞ্জাব, গাজিয়াবাদ ও নয়ডাতেও স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে।

ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে শুক্রবার থেকে রোহতকের সুনারিয়ার জেলে বন্দি ডেরা সাচা সওদার প্রধান গুরমিত রাম রহিম সিং। শুক্রবার সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের রায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন তিনি। রায় বের হতেই ডেরা সমর্থকদের লাগামছাড়া তাণ্ডবে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩৮ জনের। ডেরা সমর্থকদের না ঠেকাতে পারায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে হরিয়ানা প্রশাসন। সেই দিনের কথা মাথায় রেখে আজ আর কোনও ঝুঁকি নিতে চাইনি প্রশাসন। নিরাপত্তার স্বার্থে জেলের মধ্যে হেলিকপ্টারে করে নিয়ে আসা হয়েছে বিচারকসহ গোটা আদালত। ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা রোহতক।

সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের সেই বিচারক জগদীপ সিংকে ইতিমধ্যেই বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। ডেরার সদর দপ্তর থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৩০ হাজার ভক্তকে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top