সকল মেনু

‘শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য সবধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন তারেক’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর গ্রেনেড হামলা চালানোর জন্য নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন হরকাত-উল-জিহাদের প্রধান মুফতি আবদুল হান্নানকে সবধরনের সহায়তা করেছিলেন বিএনপি নেতা তারেক রহমান।
নগরীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের জনসভায় চালানো গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার জবানবন্দীতে ২০১১ সালে মুফতি হান্নান একথা বলেন।

অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ এম হাবিবুর রহমান ভুঁইয়ার কাছে দেওয়া জবানবন্দীতে মুফতি হান্নান বলেন, আমি, মাওলানা আবদুস সালাম, আবদুর রউফ, মাওলানা তাজউদ্দিন এবং কাশ্মীরের অধিবাসী আবদুল মাজেদ ভাট ২০০৪ সালে মোহাম্মদপুরের সাতমসজিদ রোড এলাকায় একটি বৈঠক করি। সেখানে আমরা শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের অন্য নেতাদেরকে হত্যার পরিকল্পনা করি। মাওলানা তাজউদ্দিন গ্রেনেড গ্রেনেড সংগ্রহ করার দায়িত্ব নিয়ে বলেন, তার ভাই উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু ও তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর আমাদেরকে সহায়তা করবেন। এছাড়াও আমরা তারেক রহমানের সাথে যোগাযোগের সিদ্ধান্ত নেই।

মুফতি হান্নান বলেন, আমি সঠিক তারিখ বা সময় স্মরণ করতে পারছি না কিন্তু পরের দিন মুরাদনগরের সংসদ সদস্য কায়কোবাদ (কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ) আমাদেরকে হাওয়া ভবনে নিয়ে যান। তিনি সেখানে আমাদেরকে তারেক জিয়া (তারেক রহমান) ও হারিছ চৌধুরীর সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। আমাদের অপারেশনের জন্য আমরা তাদের সহায়তা কামনা করলে তারেক জিয়া এ ব্যাপারে সবধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন।

মুফতি হান্নান জবানবন্দীতে বলেন, ২০০৪ সালের আগস্ট মাসে (তারিখ স্মরণ করতে পারছি না) সিলেটে গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে মুক্তাঙ্গনে আওয়ামী লীগের জনসভা সম্পর্কে আমরা জানতে পারি। আমরা সেখানে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের অন্য নেতাদের উপর গ্রেনেড হামলা চালানো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা আবার তারেক রহমানের সাথে সাক্ষাৎ করি। আমি, মাওলানা আবু তাহের, শেখ ফরিদ, মাওলানা তাজউদ্দিন, মাওলানা রশিদসহ হাওয়া ভবনে যাই।

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আরো বলা হয়, মুফতি সেখানে হারিছ চৌধুরী, লুৎফুজ্জামান বাবর, জামায়াত নেতা মুজাহিদ, ব্রিগেডিয়ার রেজ্জাকুল হায়দার (ডিজিআইএফের তৎকালীন মহাপরিচালক), ব্রিগেডিয়ার আবদুর রহিমকে (এনএসআইয়ের তৎকালীন মহাপরিচালক) দেখতে পান। পরে সেখানে তারেক জিয়া উপস্থিত হন। তারা শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের ওপর হামলার পরিকল্পনার বিষয়টি তারেককে অবহিত করেন এবং তার সাহায্য চান। তখন বিএনপি;র নীতিনির্ধারকরা তাদেরকে প্রশাসন থেকে সর্ব প্রকার সাহায্যের নিশ্চয়তা দেন।
স্বীকারোক্তিতে বলা হয়, বৈঠকে তারেক তাদেরকে কখনো হাওয়া ভবনে না যাওয়ার কথা বলেন। তিনি মুফতি ও তার সহযোগীদেরকে বাবর ও পিন্টুর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা এবং হামলার ব্যাপারে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্যও তাদেরকে বলেন।

হুজি নেতা বলেন, পরে তিনি ১৮ আগস্ট আহসান উল্লাহ কাজল ও মওলানা আবু তাহেরকে সঙ্গে নিয়ে পিন্টুর সরকারি আবাসিক ভবনে যান। সেখানে তারা পিন্টু, বাবর, মাওলানা তাজুদ্দিন, আরিফ কমিশনার ও হানিফ পরিবহনের মালিক মোহাম্মদ হানিফকে দেখতে পান। পিন্টু ও বাবর তাদেরকে বলেন, আরিফ ও হানিফ তাদেরকে (হুজির কর্মী) সার্বিকভাবে সাহায্য করবেন এবং নিরাপত্তার সকল ব্যবস্থা করবেন।

হান্নানকে উদ্ধৃত করে এতে বলা হয়,২০ আগস্ট মুফতি মইন ওরফে আবু জান্দাল এবং আহসান উল্লাহ কাজল পিন্টুর বাসা থেকে ১৫টি গ্রেনেড ও ২০ হাজার টাকা সংগ্রহ করেন এবং আমরা সেগুলো আমাদের ব্ড্ডাার বাসায় নিয়ে যাই। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আমরা ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে (বঙ্গবন্ধু এভিনিউ) গ্রেনেড হামলা চালাই।

২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার কারণে ইতোমধ্যে মুফতি হান্নান ও তার সহযোগী শহীদুল আলম বিপুলের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়েছে।
তাই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা থেকে তাদের নাম ইতোমধ্যে বাদ দেয়া হয়েছে।

সূত্র : বাসস

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top